দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৮ সেপ্টেম্বর: কলকাতায় নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশেষ অধিবেশনের দিন-ই খড়্গপুরে বাম শ্রমিক সংগঠন AITUC’র জেলা নেতা তথা হকার ইউনিয়নের সহ সম্পাদক দেবাশীষ ব্যানার্জিকে ‘অপহরণ’ করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠলো তৃণমূল প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন INTTUC’র কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে! সিপিআই- এর শ্রমিক সংগঠন AITUC’র নেতাদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে খড়্গপুর টাউন থানার পুলিশ তাঁকে খড়্গপুরের ২৬ নং ওয়ার্ডের বাবুলাইন রেল কোয়ার্টার থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। ঘটনা ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রেলশহর খড়্গপুরে! যদিও, সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে তৃণমূলের তরফে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে দেবাশীষ ব্যানার্জি-কে তাঁর দোকানে গিয়ে তৃণমূলে যোগদান করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। মারধর করা হয় এবং দোকানের দরজায় লাথি মারা হয় বলেও অভিযোগ। ২৬ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল নেত্রী প্রিয়াঙ্কা সিং সহ তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু, দেবাশীষ রাজি না হওয়ায়, তাঁকে জোর করে দোকান থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। বাবুলাইন রেল কোয়ার্টারে তাঁকে বন্দী করে রাখা হয় বলে অভিযোগ। এরপরই, আজ, বৃহস্পতিবার এআইটিউসি নেতারা খড়্গপুর টাউন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তারপরই, পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। মুক্তি পেয়েই তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন দেবাশীষ! তিনি জানিয়েছেন, “আমাকে নানাভাবে চাপ দেওয়া হয় INTTUC-তে যোগদানের জন্য। মারধর করা হয়। দোকান জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। বলা হয়, জয়েন করবি কিনা বল? আমি বলি, কিছুতেই না। তারপরই আমাকে তুলে নিয়ে যায় প্রিয়াঙ্কা, মান্টা, রৌনক সহ INTTUC নেতাকর্মীরা। আমার সংগঠনের লোকেরা থানায় অভিযোগ করলে, আমাকে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে বাবুলাইন রেল কোয়ার্টার থেকে। এই ধরনের ঘটনায় যথেষ্ট আতঙ্কে আছি!” বৃহস্পতিবার খড়্গপুর টাউন থানায় একটি ডায়েরি-ও করেছেন দেবাশীষ। এদিকে, এআইটইউসি’র জেলা সম্পাদক মিহির পাহাড়ি বলেন, “আগেও তৃণমূলের তরফে এমনই চাপ দেওয়া হয়েছে। হকারদের জোর করে INTTUC-তে যোগদান করানো হয়েছে। তবে, এই প্রথম এরকমভাবে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হল! এই ঘটনা নজিরবিহীন। খড়্গপুরে ফের আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। পুলিশের উচিত অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। নাহলে তো বিরোধী সংগঠন বা রাজনীতি করা যাবেনা।” এদিকে, তৃণমূল নেত্রী প্রিয়াঙ্কা সিং বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের এতো খারাপ দিন আসেনি যে এআইটিউসি নেতাকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে আইএনটিটিইউসি-তে যোগদান করাতে হবে! ওদের সংগঠনের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করছি বলেই এই মিথ্যে অভিযোগ আনা হচ্ছে। প্রচারের আলোয় আসতে চাইছেন দেবাশীষ ব্যানার্জিরা। খড়্গপুর শহর তো সিসিটিভি ক্যামেরায় মোড়া হয়েছে। পুলিশ সঠিক তদন্ত করলেই তো সত্যি বেরিয়ে আসবে।”