দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ৭ জানুয়ারি: হাইকোর্টের অর্ডারেও কাজ হলোনা! নেতাই গ্রামে পৌঁছতেই পারলেন না বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। লালগড়ে ঢোকার আগেই ঝিটকা’র কাছে পুলিশ ব্যারিকেড করে আটকে দেন তাঁকে! এরপরই, তিনি পুলিশের উপর ক্ষোভ উগরে দেন। ‘বেনজির’ আক্রমণ করে বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাসত্ব করার জন্যই আপনারা পড়াশোনা করেছিলেন? ছিঃ! বাবা-মা আপনাদের কষ্ট করে পড়িয়েছিলেন এইজন্যই? ছিঃ। নিজেদের মেধায় চাকরি পেয়ে, এখন মুখ্যমন্ত্রীর দাসত্ব করছেন? লজ্জা পাওয়া উচিত আপনাদের, ছিঃ”! উল্লেখ্য যে, ৭ জানুয়ারি পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী নেতাই গ্রামে শহীদ দিবস পালন করতে যাওয়ার কথা ছিল শুভেন্দু অধিকারী’র। এজন্য তিনি কলকাতা হাইকোর্ট থেকে অর্ডারও নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু, কড়া নিরাপত্তা আর পুলিশি প্রহরায় ঝিটকার জঙ্গল পর্যন্ত পৌঁছলেও, নেতাই যাওয়ার আগেই তাকে আটকে দেয় সেই পুলিশই। এজন্য শুভেন্দু ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের উপর যারপরনাই ক্ষুব্ধ হন!
এরপর, রীতিমতো আঙ্গুল তুলে ভর্ৎসনা করেন ঝাড়্গ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে। এরপরই, তিনি তাঁর অনুগামী এবং দলীয় কর্মী সমর্থকদের নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে চার কিলোমিটার দূরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী ব্লকের ভীমপুরে ফিরে আসেন। সেখানে শুভেন্দু’র সঙ্গে ছিলেন দুই জেলার সভাপতি সহ জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের অনেকেই। সেখানেই তিনি শহীদ দিবস পালন করেন। বলেন, “নেতাইয়ে সেদিন লাশ কুড়োতে আমি গিয়েছিলাম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নয়। শহীদ পরিবারগুলোর পাশে এই শুভেন্দু-ই ছিল, আছে আর থাকবে।” শহীদ বেদীতে মাল্যদান করে শুভেন্দু নিহত সরস্বতী, শ্যামানন্দ, ফুলকুমারী-দের নামে জয়ধ্বনি দিয়ে ফিরে আসেন! যদিও, পুলিশকে বোকা বানিয়ে নেতাই গ্রামে যে শুভেন্দু যে কোন দিন যাবেনই, তা মনে করছেন তাঁর অনেক অনুগামী থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মহলের একটি অংশ!
অন্যদিকে, শুভেন্দু অধিকারী পৌঁছানোর আগেই লালগড়ের নেতাই গ্রামে শহীদ দিবস পালন করলো তৃণমূল নেতৃত্ব। শুক্রবার নেতাই স্মৃতি রক্ষা কমিটির উদ্যোগে শহীদ দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে শহীদ বেদীতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাজ্যের সেচ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র; ক্ষুদ্র, কুটির শিল্প ও বস্ত্র দফতরের প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো, বিধায়ক ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি বিধায়ক অজিত মাইতি, ঝাড়গ্রামের প্রাক্তন সাংসদ উমা সরেন, বিধায়ক খগেন্দ্র নাথ মাহাতো, বিধায়ক দুলাল মুর্মু, বিধায়ক দীনেন রায়, তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি দেবনাথ হাঁসদা এবং মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজয় হাজরা সহ অন্যান্যরা। শহীদ মঞ্চ থেকে তৃণমূল নেতৃত্ব নেতাইয়ের শহীদ এবং আহতদের পরিবারগুলির সদস্যদের হাতে কিছু আর্থিক সাহায্য ও শীতবস্ত্র তুলে দেন।
উল্লেখ্য যে, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি নেতাই গ্রামে সিপিএম নেতা রথীন দন্ডপাটের বাড়িতে ক্যাম্প করে থাকা সশস্ত্র বাহিনীর ছোঁড়া গুলিতে গ্রামের চারজন মহিলা সহ ৯ জন নিহত হয় এবং ২৮ জন গ্রামবাসী আহত হয়। এরপর থেকে প্রতি বছর নেতাই গ্রামে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ৭ জানুয়ারি শহীদ দিবস পালন করা হয়। শহীদ তর্পণ অনুষ্ঠানে রাজ্যের সেচ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, “২০১১ সালের ৭ জানুয়ারির ঘটনা আজও আমরা ভুলে যাইনি। নেতাই-সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামকে আমরা কোনদিনও ভুলবোনা। নেতাইয়ের মানুষের পাশে আমরা সদাসর্বদা থাকবো।” শুভেন্দু অধিকারী তথা বিজেপির শহীদ তর্পণ প্রসঙ্গে সৌমেন মহাপাত্র বলেন, “বিজেপি নেতাইয়ের মাটিকে কলুষিত করার চক্রান্ত করছে। যেকোনো ব্যক্তি শহীদ তর্পণ করতে পারে, তাতে কোনো বাধা নেই। কিন্তু, সাম্প্রদায়িক শক্তি বিজেপি’র এক নেতা নেতাই গ্রামে এসে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানালে, শহীদ বেদী কলুষিত হবে। তার প্রতিবাদ করবে নেতাইয়ের মানুষ এবং নিহত ও আহতদের পরিবারগুলি। স্মৃতি তর্পণ করার অধিকার সবার আছে, কিন্তু নেতাই নিয়ে রাজনীতি করার অধিকার কারুর নেই”! তৃণমূলের শহীদ দিবস পালনের পর, বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ কড়া নিরাপত্তায় ভাদুতলা, পিড়াকাটা, ভীমপুর পেরিয়ে শুভেন্দু পৌঁছন লালগড়ের কাছে ঝিটকা অবধি। সেখানেই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা করে পুলিশ শুভেন্দু অধিকারীকে ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়!
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৭ এপ্রিল: "আমরা এখনও ধোঁয়াশার মধ্যে আছি। ওঁরা তো…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৭ এপ্রিল: গত ৫ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৫ এপ্রিল: বছরভর নানা রূপে দেখা যায় পুলিশকে। কখনও…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৫ এপ্রিল: "তাকিয়ে আছি সুপ্রিম কোর্টের ১৭ এপ্রিলের শুনানির…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৩ এপ্রিল: একসঙ্গে দু-দুটি বিরল রোগ! দু-তিন বছর আগে…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১২ এপ্রিল: দীর্ঘ প্রায় দুই দশক পর প্রাথমিকে প্রধান…