দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৪ ডিসেম্বর: একসময়ের মাও আঁতুড়ঘর শালবনীর পিড়াকাটায় দীর্ঘ কয়েক বছর পর সুশান্ত ঘোষের নেতৃত্বে ‘লাল সুনামি’ দেখলেন জঙ্গলমহল বাসী। সারা ভারত কৃষক সভা (AIKS)’র ডাকে মিছিল ও সমাবেশ হলেও, শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে রাজ্য সরকারের বেলাগাম দুর্নীতির‌ বিরুদ্ধে তীব্র গর্জনই শোনা গেল সুশান্ত কন্ঠে। পঞ্চায়েত সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি, সারের কালোবাজারিকে ছাপিয়ে গিয়ে শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারি আর প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রীর জেল-ই যে বামেদেরও প্রধান নির্বাচনী অস্ত্র হয়ে উঠতে চলেছে তা বলাই বাহুল্য! সুশান্ত-রা বেশ ভালোই জানেন, টিভি-মোবাইল-সোশ্যাল মিডিয়া-ডিজিটাল মিডিয়ার দৌলতে পার্থ-অর্পিতা’র কেলেঙ্কারি আর কোটি কোটি টাকার বান্ডিল উদ্ধারের ঘটনা প্রত্যন্ত জঙ্গলমহলের আনাচে-কানাচেও পৌঁছে গেছে। আর, সেই বে-লাগাম আর নজিরবিহীন দুর্নীতিকেই অস্ত্র করে সুশান্ত তাই এদিন মজার ছলে বললেন, “আমার আপনার বাপ ঠাকুর্দাও কখনও এতবড়ো টাকার পাহাড় দেখেনি!” হাততালিতে ফেটে পড়লেন কয়েকশো সিপিআইএম কর্মী সমর্থক। এরপরই, সুশান্ত যোগ করেন, “গতকালই কলকাতা হাইকোর্টের এক আইনজীবীর সঙ্গে আমার কথা হলো। জিজ্ঞেস করলাম, আজকে নতুন কি বেরোলো? উনি বললেন, দাদা আজ পর্যন্ত তদন্তে যা উঠে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিকে প্রায় ৯ হাজার চাকরি বিক্রি করা হয়েছে টাকার বিনিময়ে!” সুশান্ত’র সংযোজন, “আমরা হলফ করে বলতে পারি, ২০১১ সাল থেকে এই সরকারের আমলে যা কিছু নিয়োগ হয়েছে, সবেতেই বেলাগাম দুর্নীতি হয়েছে। যোগ্যরা বাদ পড়েছেন।”

thebengalpost.net
মিছিল পিড়াকাটায় :

রবিবার সকাল ১১ টা নাগাদ পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গল অধ্যুষিত পিড়াকাটার বুকে প্রথমে এক মহা মিছিল অনুষ্ঠিত হয় জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষের নেতৃত্বে। তারপর পিড়াকাটা বাজার সংলগ্ন মাঠে অনুষ্ঠিত হয় সমাবেশ‌। সেই সমাবেশ থেকেই সুশান্ত এক যুগে আক্রমণ করেন রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারকে। শুধু তাই নয়, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে দিল্লির ইডি-সিবিআই’ এর থেকে তাঁরা যে শ্রদ্ধেয় বিচারপতির উপরি বেশি ভরসা করতে চাইছেন, তাও এদিন তুলে ধরেন সুশান্ত। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সেই বহুল চর্চিত মোদি-মমতা ‘সেটিং’- এর বিষয়টিকেও কটাক্ষ করেন তিনি। সুশান্ত বলেন, “রাজ্যের যোগ্য চাকরির প্রার্থীরা ভালো পরীক্ষা দিয়েও বঞ্চিত, রাজপথে বসে বসে কাঁদছেন। আর, লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে চাকরি হয়েছে অযোগ্যদের। টাকা নিয়েছেন মন্ত্রীরা। আর, সেইসব মন্ত্রীদের বাড়ি থেকে, শোয়ার ঘর থেকে, খাটের তলা থেকে, শৌচাগার থেকে কোটি কোটি টাকা বেরোচ্ছে। এমন টাকার পাহাড় যে আমার আপনার বাপ ঠাকুর্দাও কখনও দেখিনি, তা আমি প্রায়ই মজা করে বলি। আসলে এ হলো শাসক দলের দুর্নীতির পাহাড়!” তিনি যোগ করেন, “শাসক দল দুর্নীতি করে, আর পুলিশ পাহারা দেয়। তাই, দিল্লির ইডি-সিবিআই এর উপর ভরসা করেছিল আদালত। তারাও কোন এক অজানা কারণে তদন্তে গড়িমসি করছিল। তাই, বিচারপতিকে বলতে শোনা গেছে, ‘অনেক ভরসা করে আপনাদের দায়িত্ব দিয়েছিলাম, কিন্তু এত দীর্ঘসূত্রিতা কেন!’ এরপরই তিনি সিবিআই অফিসারদের নিয়ে সিট (SIT) গড়ে দেন। মহামান্য বিচারপতিও এই দুর্নীতির যথাযথ তদন্ত চাইছেন।”

thebengalpost.net
সিপিআইএম এর সভা: