দ্য বেঙ্গল পোস্ট বিশেষ প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২২ জুন: এই মুহূর্তে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার রাজনীতি উত্তাল জেলা তৃণমূলের সম্পাদক আশিস সেনগুপ্ত ওরফে বাবলা’র মার খাওয়াকে কেন্দ্র করে! খড়্গপুর সদর বিধানসভা আসনের পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী তথা পৌর প্রশাসক প্রদীপ সরকারের ঘনিষ্ঠ অনুগামী হায়দার আলী খান ওরফে মানটা’র বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে বাবলা’র উপর হামলা করার। খোদ প্রদীপের অঙ্গুলি হেলনেই নাকি গতকাল (সোমবার) রাতে বাবলা’র নিজের পার্টি অফিসেই তার উপর বেনজির হামলা হয়েছে! হয়েছে FIR ও। আবার, পাল্টা অভিযোগ করে হায়দার আলী খান ওরফে মানটাও FIR করেছে বাবলা’র বিরুদ্ধে। এই বিষয়ে “মুখে কুলুপ” এঁটেছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব! অপরদিকে, এই চাপানউতোরের মধ্যেই আগুনে ঘৃতাহুতি পড়েছে এই ভাইরাল হওয়া অডিও (সত্যতা যাচাই করেনি দ্য বেঙ্গল পোস্ট ডট নেট) কেন্দ্র করে। প্রদীপ অনুগামীদের বক্তব্য অনুযায়ী, ওই অডিওটি বিধানসভা নির্বাচনের আগের, যেখানে বাবলা এক তৃণমূল কর্মী’কে জোর দিয়ে বলছেন, বিধানসভা নির্বাচনে প্রদীপ হারছেন এবং তার (বাবলার) নিজের ওয়ার্ডেও তৃণমূল হারবে! তবে কি এই অডিও’কে কেন্দ্র করেই রচিত হয়েছিল বাবলা’র বিরুদ্ধে হামলার ছক? উত্তর দেওয়ার মতো কেউ নেই। তবে, রাজনৈতিক সমালোচকদের মতে, ৩৬ টি’র মধ্যে ২৪ টি ওয়ার্ডে হিরনের থেকে পিছিয়ে ছিলেন প্রদীপ সরকার (এমনকি প্রদীপের নিজের ওয়ার্ডেও)। মার খেলো শুধু বাবলা। এর পেছনে প্রকাশ্যে প্রদীপের বিরোধিতা ছাড়া, আর কি ই বা কারণ থাকতে পারে!
এদিকে, বাবলার মার খাওয়াকে কেন্দ্র করে, খড়্গপুর শহরের পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদেরা বলছেন, “এই বাবলা একসময় খড়্গপুর শহরের ত্রাস ছিলেন। তার নামে রাজনৈতিক বিরোধীরা ছিলো থরহরি কম্প! প্রবাদ অনুযায়ী, বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খেয়েছে। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার প্রাক্তন নেতা তথা বিধানসভার আগে তৃণমূলে যোগ দেওয়া শম্ভু পালের বক্তব্য অনুযায়ী, “বাবলার রাজনৈতিক জন্ম সিপিএমের ঘরে, বেড়ে ওঠা তৃণমূলের বাড়িতে। তবে, যখনই সে রাজনীতি করেছে তার বিরোধীদের নাকানিচুবানি খাইয়েছে!” এদিকে, যে বাবলা বা তার অনুগামীদের খড়্গপুর কলেজ থেকে শুরু করে সর্বত্র তার বিরোধীদের উপর লাগামছাড়া তাণ্ডব করতে দেখা গেছে, সেই বাবলাকেই জাতীয় সড়কের পাশে নিজের পার্টি অফিসে (ব্যস্ততম কমলা কেবিন এলাকায়) বেনজির ভাবে মার খেয়ে হাসপাতালে যেতে দেখে রীতিমতো স্তম্ভিত সিপিআইএম-তৃণমূল-কংগ্রেস-বিজেপির সাধারণ কর্মী সমর্থকেরা! বাবলার নিজের কথায়, “মারাই যেতাম, অনিতা (স্ত্রী) না থাকলে!” আপাততো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাবলা। বিরোধীরা মুচকি হেসে বলছেন, “ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করেনা!”