দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ১৬ মার্চ: “মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো আড়াই কোটি টাকা ফেরত দিয়েছিলেন! তাতেই হয়তো খুশি হয়ে ওনাকেই ফের চেয়ারম্যান করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর উন্নয়নের জন্য ৫ কোটি, ১০ কোটি যা আসবে, সবটাই উনি ফেরত পাঠাবেন। তাতেই হয়তো খুশি হবেন মুখ্যমন্ত্রী! তবে, ক্ষতি হবে আপামর খড়্গপুর বাসীর। শ্মশানে পরিণত হবে। একটু বৃষ্টি হলে ফের এক হাঁটু জল জমে যাবে। তবুও, উনি চেয়ারম্যান হয়েছেন! ওদের দলেরই ১৩ জন কাউন্সিলর ওঁর বিরুদ্ধে ছিলেন। যাই হোক, ওনাদের দলনেত্রী যা ভালো বুঝেছেন, তাই করেছেন। ওদের দলীয় বিষয় নিয়ে বলার কিছু নেই। তবে, আমরা দায়িত্বশীল বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করব। সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ, আওয়াজ পৌঁছে দেব!” বুধবার কাউন্সিলর হিসেবে শপথ গ্রহণ করার পর, সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এভাবেই খড়্গপুর পৌরসভার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকার-কে তুলোধোনা করলেন বিজেপি বিধায়ক তথা ৩৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায় ওরফে হিরণ। যদিও, ভেতরে শপথ গ্রহণের পর ‘সৌজন্য’ তুলে ধরতে প্রদীপ-কে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন তিনি!

thebengalpost.net
শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের পর হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায় :

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রদীপ সরকার চেয়ারম্যান হওয়াতে তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর কিছু কাউন্সিলর যে ‘অখুশি’ তা বলাই বাহুল্য! তবে, তাঁরা ক্যামেরার সামনে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারছেন না দলীয় অনুশাসনের কারণেই। আর, তৃণমূলের এই ১৩-৭ ‘ফাটল’কে স্মরণে রেখেই, প্রদীপের সবথেকে বড় রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দী হিরণ তাঁকে তুলোধোনা করতে ছাড়লেন না! তবে, প্রদীপ-কে তুলোধোনা করলেও, তাঁর বক্তব্যের পরতে পরতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি ‘অভিমান’ যেন ঠিকরে বেরিয়েছে! আসলে, হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায় ওরফে হিরণ-এর চেয়ারম্যান হওয়া নিয়ে একদিকে যেমন জল্পনা ছড়িয়েছিল, ঠিক তেমনই প্রদীপ সরকার-ই যে তৃণমূল কংগ্রেসে তাঁর সবথেকে বড় প্রতিপক্ষ সেটাও হিরণ ভালো করে জানেন। তাই, প্রদীপ-কে যেন কোনোমতেই মেনে নিতে পারছেন না হিরণ! একটা সময় জল্পনা ছড়িয়েছিল, প্রদীপ বিরোধী ১৩ জন কাউন্সিলর নাকি প্রয়োজনে হিরণ-কেও চেয়ারম্যান মেনে নিতে রাজি (যদি, হিরণ তৃণমূলে যোগদান করেন)! আর, তা বেশ ভালোভাবেই উপভোগ করছিলেন হিরণ। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সব ভেস্তে যায়। কিন্তু, প্রদীপ-কে যেন কোনোমতেই চেয়ারম্যান মেনে নিতে পারছেন না হিরণ! আর, সেক্ষেত্রে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী’র প্রতিও হিরণের ‘অভিমান’ স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কারণ, বিজেপি-তে থাকলেও ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা’র প্রতি হিরণ সর্বদাই নিজের শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন। সেই মুখ্যমন্ত্রী’র কাছে তিনি যেন এটা ‘আশা’ করেননি! অন্যদিকে, হিরণকে তীব্র কটাক্ষ করে প্রদীপ প্রত্যুত্তরে জানিয়েছেন, “উনি কোন দলে আছেন সেটাই কেউ জানেনা! বিজেপির ১০ টা লোকও ওর সঙ্গে নেই, ওকে বিশ্বাস-ই করেনা। নিজের দলেই যার গ্রহণযোগ্যতা নেই, সে কোন মুখে অন্যের সমালোচনা করে!”

thebengalpost.net
চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে প্রদীপ সরকার :