দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৬ এপ্রিল: “মনে রাখবেন, ১০ লক্ষ চাকরি আমি রেডি করে রেখেছি। শুধু বিজেপি-র জন্য করতে পারছিনা! কিছু হলেই বিজেপি, সিপিএম আর কংগ্রেস চলে যাচ্ছে আদালতে। আর একেকজন আছে সব, পেন দিয়ে যা লিখে দিচ্ছে, সেটাই অর্ডার করে দিচ্ছে!” শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) ভরদুপুরে পশ্চিম মেদিনীপুরের (ঘাটাল লোকসভার অধীন) পিংলা-তে দেবের (দীপক অধিকারীর) সমর্থনে আয়োজিত জনসভা থেকে ঠিক এভাবেই একযোগে বিজেপি সহ রাজ্যের সমস্ত বিরোধী দল এবং কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিদের আক্রমণ করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার আরও দাবি, “বিজেপি খুন করলেও বেল (জামিন), আর আমরা করলে জেল! বিজেপি করলে পিল (PIL বা জনস্বার্থ মামলা) আর আমরা করলে খিল (বাতিল)!” বিজেপি-র সাথে এক আসনে বসিয়ে ‘পরোক্ষে’ বিচারপতিদের ‘চাকরিখেকো‘ উপাধিও দিয়েছেন মমতা!

thebengalpost.net
পিংলার সভায় দেবের সঙ্গে:

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্টের ‘বিশেষ’ ডিভিশন বেঞ্চের তরফে SSC দুর্নীতি মামলার রায়দান করার পর থেকেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সহ তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে দাবি করা হচ্ছে, কলকাতা হাইকোর্টকে চালানো হচ্ছে বিজেপি পার্টি অফিস থেকে! এক ধাপ এগিয়ে গতকাল (বৃহস্পতিবার) অভিষেক ব্যানার্জি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আরও বিস্ফোরক মন্তব্য করে বলেছেন, “একজন দুর্নীতি করলে যদি সব শিক্ষকদেরই দুর্নীতিগ্রস্ত বলে বাদ দেওয়া হয়, তবে কলকাতা হাইকোর্টের একজন বিচারপতি বিজেপি-তে গেলে আমরাও কি ধরে নেব সমস্ত বিচারপতিরাই বিজেপি হয়ে গেছেন? তেমন হলে তো কলকাতা হাইকোর্ট-টাই তুলে দেওয়া দরকার!” অন্যদিকে, এদিন ফের চাকরি হারানো ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের পাশে থাকার ‘বার্তা’ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তীব্র দাবদাহের মধ্যেই আয়োজিত এদিনের পিংলার সভা থেকে ঘাটাল লোকসভা আসনের তৃণমূল প্রার্থী দেব ওরফে দীপক অধিকারীকে পাশে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী এও বলেন, “দেব (ঘাটাল), জুন (মেদিনীপুর) আর কালীপদ সোরেন (ঝাড়গ্রাম)-কে জেতালেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান উপহার দেব মেদিনীপুরবাসীকে।”

এ প্রসঙ্গে এও উল্লেখ্য যে, যোগ্য-অযোগ্য নির্বিশেষে সকলের পাশে থাকার বার্তা দেওয়ার সাথে সাথেই, এপ্রিল মাসে তাঁদের সকলকেই যে বেতন দেওয়া হবে ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের তরফে এমনটাও জানানো হয়েছে।অপরদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-কে শুক্রবার পাল্টা আক্রমণ করে বিজেপি-র রাজ্য সাধারণ সম্পাদিকা তথা মেদিনীপুর লোকসভা আসনের প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল কটাক্ষ করেছেন, “আদালত বারবার বলার পরও, কেন এসএসসি যোগ্য আর অযোগ্যদের আলাদা করতে পারেনি? মুখ্যমন্ত্রী তো বারবার অযোগ্যদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। এখনও তাই করছেন। এর ফলেই যোগ্য ১৮-১৯ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী বিপদে পড়ছেন! আজকে যা কিছু হয়েছে, এই সব কিছুর দায় মুখ্যমন্ত্রীর। ওনার নির্দেশেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুজয় ভদ্ররা দুর্নীতি করেছে। উনি সবকিছু জানেন। পুলিশের গাড়িতে করে টাকার ভাগ যেত শান্তিনিকেতনে (অভিষেক ব্যানার্জির বাড়ি) আর কালীঘাটে। ওনাকে সিবিআই তদন্তের আওতায় আনলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। আসলে, উনি আর ওনার তোলাবাজ ভাইপো বুঝে গেছেন, যেভাবে বিচারপতিদের একের পর এক নির্দেশে রাজ্যের সমস্ত দুর্নীতির চিচিংফাঁক হচ্ছে, ঠিক তেমনই একদিন এই সমস্ত দুর্নীতির মাথাকে গ্রেফতার করারও নির্দেশ দেবে আদালত! তাই, আগেভাগেই বিচারপতিদের নোংরা ভাষায় আক্রমণ করে চলেছেন।”

thebengalpost.net
খড়গপুরে অগ্নিমিত্রা পাল :