দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ৫ জানুয়ারি: “রাজ্য বিজেপির আমাকে দরকার নেই। দলের বৈঠক থাকলে আমাকে জানানো হয় না। আমি যখন খড়্গপুরে থাকি তখন দিলীপ ঘোষ কোনো বৈঠক করেন না। আমি না থাকলেই ওনাকে বৈঠক করতে হয়। তাই কাল (মঙ্গলবার) রাতে, রাজ্য বিজেপির সমস্ত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছি”! বুধবার সকালে খড়্গপুরের এক সাংবাদিককে ফোনে একথাই জানালেন খড়্গপুর সদরের ‘সেলিব্রেটি’ বিধায়ক হিরণ তথা হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায়। উল্লেখ্য যে, মঙ্গলবার তিনি অনুপস্থিত ছিলেন খড়্গপুরে অনুষ্ঠিত দিলীপ ঘোষের ডাকা পৌর নির্বাচন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে। তাঁর ক্ষোভ কি তবে দিলীপ ঘোষের উপরই? নাকি এসব শুধুমাত্র ‘বাহানা’! তিনি তাঁর পুরানো দল তৃণমূলেই ফিরতে চলেছেন? সেই ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছেন হিরণ। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে ফোনে জানিয়েছেন, “যেখানে উন্নয়ন সেখানে থাকব”। প্রসঙ্গত, রাজ্য বিজেপি-র অন্দরে ‘মতুয়া-বিদ্রোহ’ চলতে চলতেই দলের হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়লেন হিরণ। উল্লেখ্য যে, হিরণ হলেন বিজেপি-র দশম বিধায়ক, যিনি দলের হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়লেন। এর আগে বাঁকুড়ার চার বিধায়ক এবং পাঁচ মতুয়া বিধায়ক গ্রুপ ছেড়েছিলেন। বুধবার সকালে হিরণের গ্রুপ ছাড়ার খবর জানা যায়।

thebengalpost.net
দিলীপ – হিরণ (প্রতীকী ছবি) :

প্রসঙ্গত এও উল্লেখ্য যে, বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই খড়্গপুরের বর্তমান বিধায়ক হিরণ এবং খড়্গপুরের একসময়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপ বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক দিলীপ ঘোষের গোষ্ঠীর মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্য শুরু হয়। রেল, আইআইটি প্রভৃতি নিয়েও দু’জনে ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে প্রকাশ্যে বিবাদ ও হাতাহাতিও দেখেছেন শহরবাসী। দিলীপ গোষ্ঠী’র উত্তর মন্ডল সভাপতি দীপসোনা ঘোষকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে জেলে যেতে হয়েছে! অভিযোগকারিণী সেখানে হিরণ গোষ্ঠীর তৃষা চাকলাদার। অন্যদিকে, দিলীপ অনুগামীদের পোস্টারে দেখা যায়নি বিধায়ক হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায়ের ছবি! এর আগেও দিলীপ ঘোষ তথা বিজেপি’র একাধিক কর্মসূচিতে অনুপস্থিত থেকে, হিরন্ময় নিজের মতো কর্মসূচি পালন করেছেন। মঙ্গলবারও (৪ জানুয়ারি) তিনি অনুপস্থিত ছিলেন দিলীপ ঘোষের বৈঠকে। প্রত্যুত্তরে দিলীপ ঘোষ জানিয়েছিলেন, “ওনাকেই জিজ্ঞেস করুন কেন নেই”! এদিকে, হিরণের বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়া নিয়ে মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি সুজয় হাজরা সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া দিয়ে জানিয়েছেন, “আগেই তো বলেছিলাম হিরণের মতো কাজের ছেলে ওই দলে থাকতে পারবেনা!”