thebengalpost.in
মঞ্চ বাঁধা চলছে মেদিনীপুরে :

নবীন কুমার ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২০ জুলাই: রাত পোহালেই তৃণমূলের ২১ শে জুলাই। গত বছরের মতো এবারও ভার্চুয়ালি পালিত হবে “শহীদ দিবস”। বুথে বুথে বসানো হচ্ছে জায়ান্ট স্ক্রিন। টিভির সামনে বসেই নেত্রীর ভাষণ শুনবেন বিধায়ক-মন্ত্রী-নেতা-নেত্রী থেকে কর্মী সমর্থকরা। তবে, কোভিড বিধি মেনে এক সঙ্গে ৫০ জনের বেশি নয়। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর শহরে ফেডারেশন হলের সামনে মেগা জায়ান্ট স্ক্রিন বসছে। সেখানে উপস্থিত থাকবেন দলের বিধায়ক ও মন্ত্রীরা। থাকবেন জেলার শীর্ষ নেতৃত্ব। এখানেও সর্বোচ্চ ৫০ জন একসাথে বসে নেত্রীর ভাষণ শুনবেন বলে জানিয়েছেন জেলা সভাপতি অজিত মাইতি। নজর থাকবে নেত্রীর বার্তার দিকে। কারণ, ২-৩ দিনের মধ্যেই (২৩ বা ২৪ শে জুলাই) চূড়ান্ত হয়ে যাওয়া তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা স্তরের সংগঠনের বিষয়ে ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে। এমনিতেই, দলত্যাগীদের ভিড় বাড়ছে তৃণমূলে। ২১ শে জুলাইয়ের পর আরও ভিড় বাড়বে। অন্যদিকে, সামনের লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে, রেজিমেন্টেড পার্টি বিজেপি’র সংগঠনকেও ছাপিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে তৃণমূল। সেই লক্ষ্যেই, দলীয় সংগঠন খোলনলচে বদলে ফেলার বিষয়টি একপ্রকার চূড়ান্ত হয়ে গেছে। শুধু ঘোষণা টুকুই বাকি!

thebengalpost.in
রাত পোহালেই ২১ শে জুলাই :

বর্তমানে, শাসকদল তথা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান নীতি- “এক ব্যক্তি এক পদ”। সাংগঠনিক রদবদলেও যে প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শ নিচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো তা পরিষ্কার। একুশের নির্বাচনে প্রধান বিরোধী বিজেপিকে ধরাশায়ী করার পর, ২৪ এর লক্ষ্যে বিজেপির স্ট্যাটিসটিক্সকেও ছাপিয়ে যেতে চাইছে তৃণমূল। এই লক্ষ্যেই দলে “এক পদ” নীতি ছাড়াও বড় জেলাগুলিকে লোকসভা কেন্দ্রিক ভাগ করে সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির পথে হাঁটছে শাসকদল। শুধু তাই নয়, ব্লক স্তরেও সাংগঠনিক ভাগ হওয়ার সম্ভাবনা। বড়ো ব্লক ডিভিশন গুলিতে বিজেপির মন্ডল সভাপতিত্বের কাঠামো অনুযায়ী দু’জন করে ব্লক সভাপতি নিযুক্ত হতে পারে, এমনই আলোচনা শাসকদলের টেবিলে। এক্ষেত্রে, সমালোচকরা যদিও বলছেন, বিজেপির বঙ্গ রাজনীতির রণনীতি কেই শিখন্ডী করে তাদের টেক্কা দিতে চাইছে তৃণমূল।

thebengalpost.in
মঞ্চ বাঁধা চলছে মেদিনীপুরে :

অন্যদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও একটা বড় ইস্যু হল- দলত্যাগীদের ফের দল-বদল! শুভেন্দুর আশীর্বাদ নিয়ে তৃণমূল ছেড়ে যারা বিজেপিতে গিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে একটা বড় অংশ ফের শাসক দলে ফিরতে চলেছেন। এক্ষেত্রে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার উল্লেখযোগ্য নাম শিবু পানিগ্রাহী। জেলার অন্যতম শীর্ষস্থানীয় মুকুল অনুগামী তিনি। তার সাথে মিলিত হয়েছে একাধিক দলত্যাগীদের নামও। জেলা পরিষদের সদস্যা কাবেরী চ্যাটার্জি থেকে শুরু করে শাসকদলের প্রাক্তন যুব সভাপতি স্নেহাশীষ ভৌমিক, দুলাল মন্ডল, আকাশদীপ সিংহ, কবিরুল ইসলাম, দেবায়ন ঘোষ প্রমুখ। আরও অনেক হেভিওয়েট নামও ভেসে আসছে। জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ গিরি, তপন দত্ত, অমূল্য মাইতি প্রমুখ। তবে, এঁরা সম্ভবত “ওয়েট অ্যান্ড সি” ফর্মুলা নিয়ে চলেছেন। রাজনৈতিক পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে অর্থাৎ ৭ টি উপনির্বাচনের ফলাফল দেখে নিতে চাইছেন সম্ভবত। এদের মধ্যে, বেশির ভাগ নেতা’ই একসময় মুকুল অনুগামী ছিলেন। মুকুল রায় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদানের পরেই, শুভেন্দু’র ‘সংস্পর্শ’ ত্যাগ করে তাঁরা ফের মুকুল অনুগামী হওয়ার প্রচেষ্টায়! তবে, মুকুল রায়ের স্ত্রী মারা যাওয়ার পর অনেকেরই ‘দলবদল’ পিছিয়ে গেছে!

thebengalpost.in
পশ্চিমের রাশ থাকছে অজিতের হাতেই :

এদিকে, জুলাইয়ের প্রথম থেকেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ‘রদবদল’ নিয়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। দু’ভাগে বিভক্ত সাংগঠনিক জেলার জেলা সভাপতির তালিকাতে কারা আছেন? সে নিয়ে তর্জমা রাজনৈতিক মহলে। মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি হিসেবে দৌড়ে নির্মল ঘোষ এগিয়ে ছিলেন। তা নিয়ে, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেও খবর প্রকাশিত হয়েছে। এখন অবশ্য সেই সমীকরণ কিছুটা বদলে গেছে। বাকিদের থেকে দৌড়ে কিছুটা এগিয়ে গেছেন, নারায়ণগড়ের বিধায়ক সূর্য অট্ট। তালিকায় থাকছে আরকেটি নাম, জেলার জনপ্রিয় নেতা তথা জেলা সম্পাদক সুজয় হাজরা। অন্যদিকে, ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার তালিকায় এই মুহূর্তে দু’টি নাম ভাসছে। প্রথমজন, বর্তমান পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি ঘনিষ্ঠ নেতা তথা দাসপুর ২ এর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আশিস হুদাইত। দ্বিতীয়জন, ঘাটাল বিধানসভার পরাজিত প্রার্থী শঙ্কর দলুই। তবে, অজিত মাইতি নিজে ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার দায়িত্ব না নিয়ে, আশিস কেই জেলা সভাপতি করতে চেয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই, আশিস হুদাইত দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলাতেও সূর্য’কেই চাইছেন অজিত। তাই, এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, মেদিনীপুরের জন্য সূর্য অট্ট এবং ঘাটালের জন্য আশিস হুদাইত নাম দুটিই চূড়ান্ত হয়ে আছে বলে জানা গেছে।

thebengalpost.in
শেষ কথা বলবেন দলনেত্রীই :