দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৮ জুন: রবিবার সকালেই ভুয়ো (Fake) বা স্বাস্থ্য দপ্তরের অনুমতি-বিহীন ভ্যাকসিন শিবির আয়োজন সম্পর্কিত খবর প্রকাশিত হয়েছিল, বেঙ্গল পোস্ট (thebengalpost.net) সহ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে। রাজ্যের সহকারী স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী এবং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ নিমাই চন্দ্র মন্ডল জানিয়েছিলেন, “উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে“। মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে, রবিবার বিকেল নাগাদ খড়্গপুর শহরের নামকরা ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের (Diagnostic Centre) মালিক ও দুই কর্মচারীকে গ্রেফতার করলো খড়্গপুর টাউন থানার পুলিশ। মহকুমাশাসক আজমল হোসেন এবং মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দীপক সরকারের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে মালঞ্চা রোডের ধারে অবস্থিত ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হানা দিয়ে মালিক ও দুই কর্মচারীকে গ্রেফতার করে। অনুমতি-বিহীন ভ্যাকসিন শিবির আয়োজন করা এবং ভুয়ো রসিদের বিনিময়ে টাকা তোলার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় তাদের। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে প্রায় ৭৭ হাজার টাকা ও অসংখ্য ভুয়ো রসিদ। অপরদিকে, মেদিনীপুর শহরের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে, তারা কোনো শিবির আয়োজন করছেনা। তবে, তাদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞাপন দেওয়ার অভিযোগ থাকলেও, টাকা তোলার অভিযোগ নেই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খড়গপুর শহরের বেসরকারি ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি করোনা ভ্যাকসিন দেওয়ার নাম করে ব্যক্তি পিছু ১১৫০ টাকা করে তুলছিল। প্রায় ৭৭ হাজার তোলা হয়েছিল বলে অভিযোগ! সোমবার ভ্যাকসিন দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছিল। এদিক, খবর পৌঁছে যায় স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার ডাঃ কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় মামলা রুজু করেন ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নামে। তারপরই, মহকুমাশাসক আজমল হোসেনের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে সেন্টারের মালিক সহ ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। বাজেয়াপ্ত করা হয় টাকা ও রসিদ। আজমল হোসেন বলেন, “সরকারের অনুমোদন ছাড়াই এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি করোনা ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য ১১৫০ টাকা করে নিচ্ছিল, যা বেআইনি। সেজন্যই আইনত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।” জানা গেছে, ওই সেন্টারের কর্ণধারের নাম আবির বন্দ্যোপাধ্যায়, তিনি খড়্গপুর শহরের সুভাষপল্লীর বাসিন্দা। তাঁর বিরুদ্ধে বেআইনি কর্মকাণ্ড এবং বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রসঙ্গত, রবিবার সকালেই স্বাস্থ দপ্তরের আধিকারিকরা জানিয়েছিলেন, স্বাস্থ্য দপ্তরের অনুমতি পাওয়ার পর ভ্যাকসিন শিবির আয়োজন করতে পারে কোনও সংস্থা, তবে সরকার নির্ধারিত ৭৮০ টাকার বেশি নেওয়া যাবেনা! সেক্ষেত্রে, বিনা অনুমতিতেই বে-আইনিভাবে ১১৫০ টাকা করে তোলা যে মারাত্মক অপরাধ তা বলাই বাহুল্য!