দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৬ জানুয়ারি: এ যেন রক্ষকই ভক্ষক! খোদ থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে নাবালককে যৌন নিগ্রহ করার অভিযোগ। অভিযোগ দায়ের হল জেলা আদালতে। যৌন নিগ্রহ বা হেনস্থার পাশাপাশি নাবালককে মাদক মামলায় ফাঁসানোর হুমকির অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ নাবালক। ঘটনাটি খোদ জেলা শহর মেদিনীপুরের। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শহর বা জেলা সদর মেদিনীপুরেরই এক নাবালককে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠল মেদিনীপুর কোতোয়ালী থানার আইসি (Inspector in Charge)’র বিরুদ্ধে।
জানা গিয়েছে, মাসখানেক আগে মেদিনীপুর শহরের মুসলিম কুঠির চকে গাড়ির পার্কিং নিয়ে কোতোয়ালী থানার এক পুলিশ কর্মীর সাথে বচসায় জড়ান বাবলু সিং নামে এক ব্যক্তি। অভিযোগ, বচসা চলাকালীন ওই ব্যক্তিকে হঠাৎ চড় মারেন পুলিশ কর্মী। পুলিশের এমন আচরণ দেখে প্রতিবাদ করে তাঁর (বাবলু সিং) বছর ১৭’র নাবালক ছেলে। আর, এতেই পুলিশের সমস্ত রাগ গিয়ে পড়ে তাঁর ছেলের ওপর। শুরু হয় হেনস্থা। আদালতে দায়ের হওয়া অভিযোগ পত্র অনুযায়ী, ঘটনার পরের দিনই কোতোয়ালী থানার আইসি পার্থসারথি পাল সহ পুলিশকর্মীরা পৌঁছন অভিযোগকারীর বাড়িতে। সকলের সামনে যৌন হেনস্থা বা নিগ্রহ করা হয় ওই নাবালককে। এরপর, রীতিমতো গাঁজা কেস (NDPS) দিয়ে ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বারবার থানায় ডেকে হেনস্থা করার অভিযোগ এনেছেন ওই নাবালকের পরিবার। অবশেষে চলতি মাসের ১৭ তারিখ (১৭ জানুয়ারি) মেদিনীপুর আদালতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নাবালকের পরিবার।
অভিযোগকারীর আইনজীবী অপূর্ব চক্রবর্তী জানিয়েছেন, “অভিযোগের গুরুত্ব বুঝে মামলা গ্রহণ করেছেন মেদিনীপুর আদালত।” ঘটনার কড়া নিন্দাও করেছেন অভিযোগকারীর আইনজীবী। যদিও, আদালতের তরফ থেকে কোন নির্দেশ এসে পৌঁছয়নি বলেই জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার। অন্যদিকে এই ঘটনা নিয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি অভিযুক্ত পুলিশকর্তা পার্থসারথি পাল। এমন অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর রীতিমত শোরগোল পড়ে গিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। এনিয়ে মুখ খুলেছেন শাসকদল তৃণমূল থেকে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। বিজেপি’র জেলা সহ সভাপতি অরূপ দাস বলেন, “গত চার বছর ধরে কোতোয়ালী থানার এই বিকৃত মানসিকতার আইসি’র বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করে এসেছি। আদালতের কাছে আবেদন করবো এই ধরনের কুরুচি মানসিকতা সম্পন্ন আইসি’কে চরম শাস্তি দিক আদালত। পুলিশের নামে কলঙ্ক, মানুষকে হেনস্থা করা এই আইসি’র স্বভাবে পরিণত হয়েছে।” অন্যদিকে, এনিয়ে তৃণমূল জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, “যেহেতু বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন, তাই এনিয়ে মন্তব্য করাটা ঠিক নয়। তাছাড়া বিষয়টি আমি ঠিক জানিও না।”