দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৩ মার্চ: “নীল দিগন্তে ওই ফুলের আগুন লাগল, বসন্তে সৌরভের শিখা জাগল!” বাঙালির প্রিয় দোল উৎসবকে সামনে রেখে পশ্চিম মেদিনীপুরের পলাশী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কচিকাঁচারা বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি দিয়ে ভেষজ আবির তৈরী করল। তারপর, বিদ্যালয়ে আয়োজিত বসন্ত উৎসবেও মেতে ওঠে মেদিনীপুর সদর ব্লকের প্রত্যন্ত পলাশী গ্রামের এই শিশু শিক্ষার্থীরা! বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের শেখানো পদ্ধতিতে গত বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) পলাশীর ক্ষুদে পড়ুয়ারা তাদের ছোট্ট ছোট্ট হাতে ধনেপাতা, পালং শাক, বিট, গাজর, কাঁচা হলুদ, পুঁইয়ের পাকা বীজ ও পলাশ ফুল থেকে রস বের করে অ্যারারুটে মিশিয়ে বিভিন্ন রঙের আবির তৈরী করে।

thebengalpost.net
কচিকাঁচারা:

কচিকাঁচারা বলে, “স্যাররাই আমাদের শিখিয়ে দিয়েছেন। তাছাড়া প্রতিবছরই আমাদের বিদ্যালয়ে এই হাতে-কলমে ভেষজ আবির তৈরী করা হয়। আমরা তা মনে রেখে দিই। খুব মজা হয় এই দিনটিতে।” বিদ্যালয়ের দুই সহ শিক্ষক কৌশিক কুমার লোধ ও অসীম কুমার মন্ডলের কথায়, “এই কর্মশালার মাধ্যমে সহজেই কচিকাঁচাদের হাতে-কলমে পরিবেশ ও প্রকৃতি পাঠ দেওয়া সম্ভব হয়। তাই এই আয়োজন।” দুই পার্শ্ব শিক্ষক-শিক্ষিকা গোপীনাথ বাস্কে ও মামনি বেসরা বলেন, “এই কর্মসূচির মাধ্যমে কচিকাঁচারা জানল গাছ আমাদের বন্ধু। তাকে রক্ষা করার দায়িত্বও আমাদের।”

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা ১২৯ জন। বিদ্যালয়ের এই কর্মসূচি চতুর্থ বছরে পদার্পণ করল। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সৌম্য সুন্দর মহাপাত্র বলেন, “হাতে-কলমে শিক্ষা দীর্ঘস্থায়ী হয়। তাই, এই ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে কচিকাঁচাদের শেখার ভিত যেমন মজবুত হয়; ঠিক তেমনই তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে সৃজনশীল মানসিকতা।” বিদ্যালয়ের এদিনের এই কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক (SI/S) ওঙ্কার পন্ডা। এ প্রসঙ্গে এও উল্লেখ্য যে, মেদিনীপুর সদর ব্লকের এই প্রাথমিক বিদ্যালয় বছরভর তাদের নানা কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে ইতিমধ্যেই জেলায় অনন্য নজির তৈরী করেছে। বিদ্যালয়ের কচিকাঁচাদের জন্মদিন পালন থেকে শুরু করে প্রতিটি স্মরণীয় বা উল্লেখযোগ্য দিনগুলি ঘটা করে উদযাপন সহ বছরভর নানা সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রত্যন্ত এলাকার পড়ুয়াদের সক্রিয়তা ও সংস্কৃতি-সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বিদ্যালয়ের পরিবেশও রীতিমত শিশু-বান্ধব! এই প্রাথমিক বিদ্যালয় একাধিকবার নির্মল বিদ্যালয় পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে বলেও জানান শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

thebengalpost.net
বিদ্যালয়েই আবির তৈরী: