দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৯ ফেব্রুয়ারি: টোটো দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত শিশুর পাশে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা অনলাইন মাধ্যমে চাঁদা তুলে সেই জমানো টাকা তুলে দিলেন আহত শিশুর পরিবারের হাতে। ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী ব্লকের বাঁকিবাধ অঞ্চলের। উল্লেখ্য যে, গত ২৮ জানুয়ারি, শনিবার ৪ নং বাঁকিবাঁধ অঞ্চলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতার শেষে বাড়ি ফেরার পথে টোটো দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছিল শালবনি ব্লকের সদর উত্তর চক্রের জোয়ালভাঙা মুগবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক প্রাথমিক শ্রেনীর ছাত্র চিন্ময় মাহাত। স্থানীয় এলাকাবাসী এবং শালবনী থানার পুলিশ আধিকারিকদের তৎপরতায় বছর পাঁচেকের চিন্ময়কে দ্রুত উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য প্রথমে মেদিনীপুর মেডিক্যাল এবং পরে কলকাতার পি.জি. হাসপাতলে রেফার করা হয়।

thebengalpost.net
আর্থিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিলেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা:

কিন্তু, সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরবর্তীতে চিন্ময়কে কটকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই করা হয় তার বাম হাতের অস্ত্রোপচার।‌ অস্ত্রোপচারের পরে আপাতত তার অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল ও বিপদমুক্ত। তবে, শিশুটির পরিবারের আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত দুর্বল হওয়ায়, জটিল অস্ত্রোপচার পরবর্তী চিকিৎসার ব্যয় ভার বহন করা পরিবারের পক্ষে একান্তই অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। এই অবস্থায়, সদর উত্তর চক্রের তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে কনভেনার দেবশ্রী মুখার্জী চক্রের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে মানবিক আবেদন রাখেন, শিশুটিকে সন্তান সম দৃষ্টিতে বিবেচনা করে পরিবারের প্রতি আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য। এরপরই, গত কয়েকদিনে চিন্ময়ের স্কুল জোয়ালভাঙা মুগবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক অমিত নন্দী’র নেট ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে এই আবেদনে সাড়া দিয়ে চক্রের অসংখ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা তাঁদের সাধ্যমতো সাহায্য করেছেন। সংগৃহীত সেই ২০,০০০ টাকা তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কনভেনার দেবশ্রী মুখার্জীর উপস্থিতিতে চিন্ময় মাহাতর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হল‌ বৃহস্পতিবার। এছাড়াও, জোয়ালভাঙা মুগবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অজিত দুলে স্বয়ং বিদ্যালয়ের আহত ছাত্র চিন্ময় মাহাতোর বাড়িতে গিয়ে পরিবারটির হাতে ব্যক্তিগতভাবে ১০,০০০ টাকা (দশ হাজার) টাকা ও ফলমূল তুলে দিয়েছেন। শিক্ষক অজিত দুলে এও জানিয়েছেন, ছাত্রটি যতদিন পড়াশোনা করবে, ততদিন তার পঠন-পাঠনের জন্য তিনি বইপত্র কিনে দিবেন।

অপরদিকে, ওই শিক্ষক সংগঠনের তরফে অভিজিৎ ঘোষ, তন্ময় সিংহ, অমর চৌধুরী, পুজা চ্যাটার্জি, সঞ্জয় নামহাতা প্রমুখ সমাজমাধ্যম থেকে শুরু করে প্রশাসনের আধিকারিকদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন এবং শিশুটির পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। সংগঠনের তরফে দেবশ্রী মুখার্জি জানান, “এই সাহায্যটা করতে পেরে আমরা গর্বিত বোধ করছি। আমি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই সেই সকল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের, যাঁরা ছোট্ট ছোট্ট অনুদান দিয়ে এই কাজটি করে দেওয়ার সুযোগ আমায় দিয়েছেন এবং সাহায্য করেছেন। আগামী দিনেও আমরা চিন্ময় ও তার পরিবারের পাশে আছি।”

thebengalpost.net
সরকারি দপ্তরে শিক্ষক শিক্ষিকারা :