দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২০ সেপ্টেম্বর: পূর্ব ঘোষণা মতোই আজ, বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের ৯-টি স্থায়ী সমিতি গঠিত হতে চলেছে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, বেলা ১-টা নাগাদ এই স্থায়ী সমিতি গঠনের কাজ সম্পন্ন হবে। উল্লেখ্য যে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের ৬০টি আসনের মধ্যে ৬০-টিই এবার তৃণমূল দখল করেছে। এর মধ্যে ৪৭ জনই নতুন সদস্য। অন্যদিকে, ৯-টি স্থায়ী সমিতির প্রতিটিতে ৫ জন সহ মোট ৪৫ জন সদস্য জায়গা পাবেন। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমোদনক্রমে বুধবার তাঁরা মনোনীত হবেন বলে খবর। এছাড়াও, দলনেতা (বা, দলনেত্রী), অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ প্রভৃতিও বেছে নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে সভাধিপতি ও সহ-সভাধিপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন যথাক্রমে প্রতিভা মাইতি ও অজিত মাইতি। তবে, স্থায়ী সমিতি গঠন ঘিরে দলের বিভিন্ন মহলেই আছে চাপা উত্তেজনা! উৎসাহ ও উদ্দীপনা আছে কর্মীদের মধ্যে।
বুধবার স্থায়ী সমিতি গঠনের পর, ৯টি স্থায়ী সমিতির জন্য ৯ জন কর্মাধ্যক্ষ বেছে নেওয়া হবে কয়েকদিনের মধ্যেই। তবে, বুধবারই এই সম্পর্কে একটা চূড়ান্ত আভাস মিলতে পারে বলে সূত্রের খবর। ইতিমধ্যে, বেশ কয়েকটি নাম নিয়ে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিভিন্ন মহলেই আলোচনা চলছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রের। এঁরা হলেন- বিদায়ী বোর্ডের পূর্ত কর্মাধক্ষ্য নির্মল ঘোষ, আশিস হুদাইত (ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি), কল্পনা শিট (কেশিয়াড়ি), জ্যোতিপ প্রসাদ মাহাত (শালবনী), তপন প্রধান (মোহনপুর), সেখ আবু কালাম বক্স (সবংয়ের ব্লক সভাপতি), শান্তি টুডু (ডেবরা), সেলিমা খাতুন (ডেবরা), মামণি মাণ্ডি (কেশিয়াড়ি), শঙ্কর দোলই (ঘাটাল), প্রতুল দাস (দাঁতন ১ নং ব্লক তৃণমূলের সভাপতি), শ্রাবন্তী মণ্ডল (মেদিনীপুর সদর)।
৯ জন কর্মাধ্যক্ষ ছাড়াও এঁদের মধ্য থেকেই অধ্যক্ষ এবং উপাধ্যক্ষ মনোনীত হতে পারেন বলেই সূত্রের খবর। অন্যদিকে, পরিষদীয় দলনেতা হিসেবে, প্রাক্তন জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহ হাজরা-র পাল্লা ভারি বলে জানা গেছে। এছাড়াও, বর্ষীয়ান সদস্য তথা বিদায়ী বোর্ডের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্রের নামও এক্ষেত্রে শোনা যাচ্ছে। কর্মাধ্যক্ষ না হলে ডেবরা-র প্রাক্তন বিধায়ক সেলিমা খাতুন অধ্যক্ষ হতে পারেন বলে জানা গেছে। তবে, ডেবরা থেকেই নির্বাচিত জেলা পরিষদের অপর এক সদস্য শান্তি টুডু’র সঙ্গে শিক্ষা কর্মাধক্ষ্য হওয়ার লড়াইতে সেলিমা আছেন বলে একটি সূত্রে জানা যায়। প্রাক্তন শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ মামণি মাণ্ডি দলের মহিলা শাখার জেলা সভানেত্রী পদেও আছেন। তিনি ফের কর্মাধ্যক্ষ হতে পারেন। অথবা, উপাধ্যক্ষ হতে পারেন বলেও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়। ব্লক সভাপতিদের মধ্যে মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভুঁইয়া ঘনিষ্ঠ আবু কালাম বক্সের এবার কর্মাধ্যক্ষ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। দাঁতন ১ নং ব্লকের সভাপতি প্রতুল দাসও এবার দৌড়ে আছেন। ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি আশিস হুদাইত এবার কৃষি ও সেচ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ হতে পারেন। সেক্ষেত্রে পরবর্তী সময়ে তাঁর জায়গায় দল অন্য কাউকে সাংগঠনিক জেলার সভাপতি হিসেবে বেছে নিতে পারে বলে বিশ্বস্ত একটি সূত্রে জানা গেছে। ঘাটালের প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দোলই-কে দল এবার কর্মাধ্যক্ষ করতে চলেছে বলে জানা গেছে। কুড়মি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসেবে শালবনীর অভিজ্ঞ নেতা জ্যোতিপ প্রসাদ মাহাত এবার কর্মাধ্যক্ষ হতে পারেন। অপরদিকে, পূর্ত কর্মাধক্ষ্য হিসেবে (গড়বেতা-৩ নং ব্লক থেকে জয়ী) এবারও নির্মল ঘোষ-ই দলের প্রথম পছন্দ বলেও বেশ কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে। এই বিষয়ে দলের জেলা নেতৃত্বের তরফে অবশ্য মুখ খোলা হয়নি। তবে, রাজ্য নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত-ই যে চূড়ান্ত; তা মেনে নিয়েছেন মেদনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজয় হাজরা এবং ঘাটালের সভাপতি আশিস হুদাইত।