দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১ নভেম্বর: কালীপুজোর রাতেই পশ্চিম মেদিনীপুরে জাতীয় সড়কের উপর পর পর দুর্ঘটনা! মৃত্যু হল দুই বাইক আরোহী সহ মোট ৩ জনের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় একজন চিকিৎসাধীন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। অপর একজনকে গভীর সঙ্কটজনক অবস্থায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে কলকাতায়। দু’টি দুর্ঘটনাই ঘটেছে খড়্গপুর গ্রামীণ থানা এলাকায়, ১৬নং (বা, ৬নং) জাতীয় সড়কের উপর। দ্রুত গতিতে বাইক চালিয়ে, ঠাকুর দেখে ফেরার পথে এই দুর্ঘটনা বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। জানা গেছে, শুক্রবার ভোররাতে খড়্গপুর গ্রামীণ থানার অধীন লছমাপুর এলাকায় ভয়াবহ পথ-দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় এক বাইক আরোহী এবং এক পথচারীর। মৃত বাইক আরোহীর নাম রনিকেত চক্রবর্তী। বয়স মাত্র ২১ বছর। বাড়ি মেদিনীপুর শহরের বরিশাল কলোনি এলাকায়। অপরদিকে, মৃত পথচারীর নাম রামপদ দোলই। বয়স আনুমানিক ৭০ বছর। বাড়ি খড়্গপুর গ্রামীণের বুড়ামালা এলাকায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার ভোর রাতে ঠাকুর দেখে নিজেদের বাইকে করে ডেবরার দিক থেকে মেদিনীপুরে ফিরছিলেন মেদিনীপুর শহরের দুই যুবক যথাক্রমে রনিকেত চক্রবর্তী ও ঋষভ কানুনগো। বসন্তপুর সংলগ্ন লছমাপুর এলাকায় ১৬নং জাতীয় সড়কের উপর বাইকের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক বৃদ্ধ পথচারীকে ধাক্কা মারেন তাঁরা। এরপর নিজেরাও ছিটকে পড়েন জাতীয় সড়কের উপর। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় রামপদ দোলই (৭০) নামে ওই বৃদ্ধ পথচারীর। দুই বাইক আরোহীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার ভোরে খবর পাওয়ার পরই ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজে হাত লাগান খড়্গপুর ২নং ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তৃষিত মাইতি সহ অন্যান্যরা। এদিকে, শুক্রবার সকালে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় রনিকেত চক্রবর্তী নামে মাত্র একুশ বছর বয়সী যুবকের। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ঋষভ কানুনগো (৩০) হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগে চিকিৎসাধীন আছেন। ওই যুবক হাতে, পায়ে ও কোমরে গুরুতর চোট পেয়েছেন বলেও গেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে খড়গপুর গ্রামীণ থানার পুলিশ। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাইকটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার সকালে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে পৌঁছেছিলেন মেদিনীপুর শহরের ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিতালী ব্যানার্জি। তিনি বলেন, “রনিকেত আমাদের ওয়ার্ডেরই বাসিন্দা। রাতে বন্ধুকে বাইকে চাপিয়ে ঠাকুর দেখতে গিয়েছিল বলে জানতে পারি। ফেরার পথেই হয়তো দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা! আলোর উৎসবের মধ্যেই ওই পরিবারে অন্ধকার নেমে এলো! শহরের যুবক-যুবতীদের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানাব, সাবধানে ও ট্রাফিক আইন মেনে বাইক চালানোর জন্য।” অপরদিকে, খড়্গপুর গ্রামীণ থানারই রূপনারায়ণপুর সংলগ্ন কৃষ্ণনগর এলাকাতেও শুক্রবার ভোররাতে একটি বাইক দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত্যু হয় এক বাইক আরোহীর। অপরজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয় শুক্রবার সকালে। মৃত বাইক আরোহীর নাম শান্তনু সাঁতরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে প্রীতম শাসমলকে। দু’জনেরই বয়স ২৪-২৫’র মধ্যে বলে জানা গেছে। তাঁদের বাড়ি ঝাড়গ্রাম জেলায় বলেও হাসপাতালের একটি সূত্রে জানা গেছে। জানা যায়, ১৬নং জাতীয় সড়কে বাইকের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকের পেছনে ধাক্কা মারার ফলেই এই দুর্ঘটনা ঘটে। যদিও, পুলিশের তরফে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে জানা গেছে।