দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ নভেম্বর:বাসে-ট্রেনে চেপে বিহার আর ঝাড়খন্ড থেকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে পৌঁছেছিল ১৩ জন ‘কুখ্যাত’ দুষ্কৃতী। কলকাতা পুলিশের STF-র তরফে সেই খবর দেওয়া হয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশকে। এরপরই, রবিবার দুপুর থেকে অভিযান শুরু করে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। বিকেল নাগাদ বিদ্যাসাগরের বীরসিংহ (ঘাটাল মহকুমার) সংলগ্ন আলুই গ্রামের একটি বাড়ি থেকে ১৩ জন ‘কুখ্যাত’ দুষ্কৃতিকে আগ্নেয়াস্ত্র (একাধিক বন্দুক ও কার্তুজ) সহ পাকড়াও করে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। তিনটি ওয়ান শর্টার গান ও দশটি লাইফ কার্তুজ ছাড়াও উদ্ধার করা হয়েছে গ্যাস কাটার, ছুরি সহ ডাকাতির একাধিক সামগ্রী।
রবিবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুর শহরে নিজের কার্যালয়ে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার জানিয়েছেন, বিহারের একটি জেলা থেকে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এরা পশ্চিম মেদিনীপুর ও হুগলির বর্ডার এলাকায় পৌঁছয়। দুই জেলার বর্ডার এলাকায় একাধিক ব্যাংক এবং ব্যবসায়ীদের বাড়িতে পর পর ডাকাতি করাই এদের টার্গেট ছিল। যাতে ডাকাতি করে সহজে পালিয়ে যেতে পারে, সেজন্যই বর্ডার এলাকাকে বেছে নিয়েছিল এরা। তিনি এও জানান, এদের মূল টার্গেট মূলত ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকা। ওই সমস্ত এলাকায় কাজ নিয়ে এরা লক্ষ্য রাখে বড় বড় ব্যবসায়ী বা শিল্পপতিদের গতিবিধির উপর। তারপরই ডাকাতি করে। পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, ধৃতদের মধ্যে ‘মাস্টার মাইন্ড’ রঞ্জিত দাস। সে একজন জেল ফেরত আসামী। রঞ্জিত সহ ধৃতদের মধ্যে ৬ জনের বাড়ি বিহারের জামুই এলাকায়। একজনের বাড়ি বিহারের দেওঘরে। দু’জন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার (ঘাটালের) বাসিন্দা। বাকিরা ঝাড়খন্ডের।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘাটাল-দাসপুর রাজ্য সড়ক থেকে একটি ট্রাক হাইজ্যাক, ক্ষীরপাই-ঘাটাল বর্ডার এলাকায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ডাকাতি এবং গড়বেতাতে একটি রাসায়নিক সারের দোকান লুট করার পরিকল্পনা ছিল দলটির। জেলের মধ্যে থেকেই এই দুষ্কৃতী দল ডাকাতির ব্লু প্রিন্ট তৈরি করে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার। তিনি এও জানিয়েছেন, পুলিশের চোখে ধুলো দিতে মূলত ট্রেন, বাস সহ বিভিন্ন পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করে আলুই গ্রামে জড়ো হয়েছিল দুষ্কৃতী দলটি। এর আগে, কলকাতাতেও কিছুদিন আস্তানা গেড়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন জেলা পুলিশের কর্তারা। এই দলের সাথে আরো কেউ জড়িত কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ধৃত ১৩ জনকে আজ, সোমবার ঘাটাল মহকুমা আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমেই এই আন্তঃরাজ্য ডাকাত চক্রের সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানার চেষ্টা করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।