thebengalpost.net
হেস্টিংস হাউস :

মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৭ ডিসেম্বর:রাজ্য সরকারের হেরিটেজ কমিশন (West Bengal Heritage Commission) এর পক্ষ থেকে ‘হেরিটেজ ভবন’ (Heritage Building) এর স্বীকৃতি দেওয়া হল, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পুরানো জেলাশাসকের কার্যালয় (Old District Magistrate Building) অর্থাৎ পুরানো কালেক্টরেট ভবন (Old Collectorate Building) এবং ‘হেস্টিংস হাউস’ (Hastings House) নামে জেলাশাসকের বাংলো। শুক্রবার জেলার তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক বরুণ মন্ডল এই খবর জানিয়েছেন সাংবাদিকদের। উল্লেখ্য যে, ব্রিটিশ শাসিত ভারতবর্ষের জেলাশাসকরা অবিভক্ত মেদিনীপুরের এই শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যমন্ডিত ‘জেলাশাসকের কার্যালয়’ থেকেই কার্যভার সামলেছেন। প্রায় তিন শতবর্ষ প্রাচীন এই ভবন-টি বর্তমানে ওল্ড কালেক্টরেট ভবন হিসেবে পরিচিত। এর একদিকে গড়ে তোলা হয়েছে ‘কালেক্টরেট মিউজিয়াম’ এবং অন্যদিকে আছে জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কার্যালয়। তবে, স্বয়ং জেলাশাসক এবং অতিরিক্ত জেলাশাসকরা এখন বসেন নতুন প্রশাসনিক ভবনে (New District Administration Building)। তবে, প্রাচীন এই ভবন রাজ্য সরকারের তরফে ‘হেরিটেজ’ স্বীকৃতি পাওয়ায় খুশি জেলাশাসক ডঃ রশ্মি কমল থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। খুশি আপামর মেদিনীপুরবাসীও।

thebengalpost.net
পুরানো কালেক্টরেট ভবন :

অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে গত ৬ ডিসেম্বর যে ১৭ টি ভবন বা মন্দির বা স্থাপত্য-কে ‘হেরিটেজ’ ঘোষণা করা হয়েছে, সেই তালিকায় আছে জেলাশাসকের বাংলো-টিও। ‘হেস্টিংস হাউস’ নামে খ্যাত এই বাংলাতেই থাকেন বর্তমান জেলাশাসক ডঃ রশ্মি কমল সহ কয়েকজন অতিরিক্ত জেলাশাসক। প্রসঙ্গত, ওয়ারেন হেস্টিংস (Warren Hastings) ছিলেন ভারতবর্ষের প্রথম গভর্নর জেনারেল। তাঁর নামেই এই হেস্টিংস হাউস। পরবর্তী সময়ে, অনেক ব্রিটিশ জেলাশাসক এই বাংলোতে কাটিয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে, মেদিনীপুরের বীর স্বাধীনতা সংগ্রামীরা পেডি, ডগলাস, বার্জ- এই তিন অত্যাচারী জেলাশাসককে হত্যাও করেছে! তবে, ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে স্বীকৃতি দিয়ে সুপ্রাচীন এই ভবনটিকেও হেরিটেজ মর্যাদা দেওয়ায় খুশি জেলা প্রশাসন থেকে জেলাবাসী।

thebengalpost.net
হেস্টিংস হাউস :

অপরদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী ব্লকের ঐতিহাসিক কর্ণগড় পরিদর্শন করলেন ASI (Archaeological Survey of India) এর এক প্রতিনিধিদল। বৃহস্পতিবার দুপুরে হঠাৎ করেই এই প্রতিনিধি দল রানী শিরোমণি’র স্মৃতিধন্য কর্ণগড় পরিদর্শন করেন। সম্প্রতি, জেলাশাসক ডঃ রশ্মি কমলের নেতৃত্বে সুসজ্জিত পর্যটনস্থল রূপে এই গড় উদ্বোধিত হয়েছে। উপস্থিত ছিলেন, রাজ্যের মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁইয়া, শিউলি সাহা থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। তবে, শুধু পর্যটনস্থল নয়, ঐতিহাসিক এই গড় এএসআই-এর পক্ষ থেকে সংস্কার ও সংরক্ষণ করা হোক এই দাবি জানিয়ে আসছে পশ্চিম মেদিনীপুরের একাধিক সংগঠন ও শালবনীবাসী। ঐতিহাসিক এই কর্ণগড়ে খননকার্য চালানো হোক, এই দাবিও রাখা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের মোগলমারি মতোই এই এই গড়ে খননকার্য চালানো হলে, পরাধীন ভারতবর্ষের প্রথম রাজনৈতিক বন্দিনী রাণী শিরোমণি সহ রাজ পুরুষদের অনেক অজানা ইতিহাস উঠে আসবে বলে অভিমত সংশ্লিষ্ট মহলের। এমনকি, রাণীর নেতৃত্বে দ্বিতীয় চুয়াড় বিদ্রোহের ইতিহাসও আলোকিত হবে বলে অভিমত ঐতিহাসিক ও গবেষকদের। হেরিটেজ জার্নি, অখিল‌ ভারতীয় ক্ষত্রিয় সমাজ থেকে শুরু করে আপামর শালবনী ও কর্ণগড়বাসীও তাই দাবি করছেন, ইতিহাসকে নিয়েই আরো সমৃদ্ধ হোক এই পর্যটনস্থল।

thebengalpost.net
কর্ণগড়ে ASI এর প্রতিনিধিদল :