দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩ জুন: ফি মুকুবের দাবিতে প্রতীকী অনশন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের। বুধবার বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটের সামনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে, প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করলো ছাত্র-ছাত্রীরা। এই অনশনে অংশগ্রহণ করেছিল মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের CCAE (Centre for Continuing and Adult Education) অর্থাৎ সান্ধ্যকালীন (Evening) ‘সেল্ফ ফিনান্স’ কোর্সের বিভিন্ন বিষয়ের স্নাতকোত্তর (PG/Post Graduate) স্তরের পড়ুয়ারা। তাদের দাবি, করোনা অতিমারী ও লকডাউন পরিস্থিতিতে তারা অনলাইনে ক্লাস করছে, নিজেদের টাকায় ইন্টারনেট প্যাক (নেট রিচার্জ) ভরে, অথচ বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরি ফি সহ সমস্ত ফিসই তাদের কাছ থেকে আদায় করছে। রসায়ন বিভাগের এক পড়ুয়া জানিয়েছে, এই কঠিন পরিস্থিতিতে সেমিস্টার পিছু ১১,০০০ টাকা দেওয়া তাদের মতো মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলির পক্ষে দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ছে। তারা নিজেরা যেসমস্ত টিউশন পড়াতো, সেগুলিও প্রায় বন্ধ! এই পরিস্থিতিতে অসহায় হয়েই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে তারা বিভিন্নভাবে আবেদন জানিয়েছিল। কিন্তু, কর্তৃপক্ষ গত ২৭ শে মে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দিয়েছে— যেহেতু এই কোর্স গুলি সেল্ফ ফিনান্স বা ছাত্র-ছাত্রীদের নিজস্ব আর্থিক আনুকূল্যে পড়ানো হয়, তাই শিক্ষকদের বেতন সহ সবকিছুই এই টাকা দিয়ে চালানো হয়। তাই, এই পরিস্থিতিতে সেমিস্টার ফিস কমানো সম্ভব নয়। তবে, রাজ্যের মধ্যে সবথেকে কম ফিস যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের, তাও ছাত্র-ছাত্রীদের জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে জানানো হয়েছে যে, বর্তমান শিক্ষাবর্ষে ফিস বাড়ানোর কথা থাকলেও, অতিমারীর কারণে তা বাড়ানো হয়নি!

thebengalpost.in
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অনশন :

অন্যদিকে, ছাত্র-ছাত্রীদের অভিযোগ, এমনিতেই করোনা পরিস্থিতির জেরে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলির ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। তার উপর ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের জেরে বহু চাষীবাসী পরিবারগুলি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে; তাদের বাড়ির ছেলেমেয়েদের ১১ হাজার টাকা করে ফিস দিয়ে পড়াশোনা করার সামর্থ্য নেই! অথচ, বিশ্ববিদ্যালয় পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে জুন মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে ফি বা বেতন জমা দিতে হবে। তাই, অসহায় ছাত্র-ছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে ফি মুকুবের দাবি বিবেচনা করুক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নন ল্যাব যে সমস্ত বিষয় (বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস) পড়ানো হয় এই সান্ধ্যকালীন বিভাগে, সেইসব বিষয়ের সেমিস্টার ফি ৪,০০০ টাকা। অন্তত ফিস কমিয়ে এই টাকা করা হোক, তাদের জন্যও। এই দাবিতে ছাত্র-ছাত্রীরা আন্দোলনে নেমেছে। দাবি না মানা হলে, আগামী দিনে লাগাতার অনশন শুরু করতে বাধ্য হবে তারা, এমনটাও জানানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫ টার মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।