Paschim Medinipur

Midnapore: পশ্চিম মেদিনীপুরের স্কুলে স্কুলে পৌঁছে গেল ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের তালিকা

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৩ এপ্রিল: বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেল নাগাদ পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক বা ডি.আই-র কাছে পৌঁছয় ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের তালিকা। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ সেই তালিকা ডি.আই অফিসের তরফে মেইল করে পাঠিয়ে দেওয়া হয় প্রধান শিক্ষকদের কাছে। স্বভাবতই এই তালিকায় অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত বা ‘টেন্টেড’ শিক্ষকদের নাম নেই। প্যানেল বহির্ভূত, র‌্যাঙ্ক জাম্পিং এবং ওএমআর (OMR) কারচুপির অভিযোগ ছিল এঁদের (টেন্টেডদের) বিরুদ্ধে। শিক্ষা দপ্তরের তরফে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, তালিকায় যাঁদের নাম নেই অর্থাৎ টেন্টেড বা অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত শিক্ষকরা এপ্রিল মাসের বেতন পাবেন না। তাঁরা আর স্কুলে যেতেও পারবেন না! পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এমন ‘দাগি’ (টেন্টেড) শিক্ষকের সংখ্যাটা প্রায় ১৮০ জন বলে জানা গেছে। বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ মোট ৪টি তালিকা পাঠানো হয় প্রধান শিক্ষকদের কাছে। নবম-দশম শ্রেণীর ২টি এবং একাদশ-দ্বাদশের ২টি। নবম-দশমের প্রথম তালিকায় ৫৯৭ জন যোগ্য শিক্ষকের নাম আছে। দ্বিতীয় তালিকায় আছে ৫৫ জনের নাম। অপরদিকে, একাদশ-দ্বাদশের প্রথম তালিকায় ৪৯৩ জন এবং দ্বিতীয় তালিকাতে ৮৪ জন যোগ্য শিক্ষকের নাম রয়েছে। তালিকা অনুযায়ী পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ১২২৯ জন ‘যোগ্য’ শিক্ষক। তাঁরা আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যেতে পারবেন এবং বেতন পাবেন।

যোগ্য শিক্ষকদের তালিকা পৌঁছল ডি.আই অফিস ও স্কুলে:

বিজ্ঞাপন (Advertisement):

উল্লেখ্য, গত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের রায়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রায় ১৪০০ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়। এই তালিকায় যোগ্য, অযোগ্য সকলেই ছিলেন। অযোগ্যদের বাদ দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করছিলেন যোগ্যরা। গত ১৭ এপ্রিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আবেদন সাপেক্ষে সুপ্রিম কোর্ট কিছুটা নমনীয় হয়ে জানায়, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যেতে পারবেন অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত নন এমন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তবে, শিক্ষাকর্মীদের সেই সুযোগ দেয়নি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। মঙ্গলবার স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে কেবল যোগ্য শিক্ষকদের তালিকাই পাঠানো হয় শিক্ষা দপ্তর ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে। বুধবার সেই তালিকাই পৌঁছয় ডি.আই (DI)-দের কাছে। ডিআই তা ফরওয়ার্ড করেন প্রধান শিক্ষকদের কাছে। পিংবনী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রলয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের স্কুলের ৬ জন শিক্ষকের নামই যোগ্যদের তালিকায় আছে।” মৌপাল দেশপ্রাণ বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক প্রসূন কুমার পড়িয়াও জানান, তাঁদের স্কুলের চাকরিহারানো ৩ জন শিক্ষকের নামই আছে যোগ্যদের তালিকায়। শশিন্দা সাগরচন্দ্র হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর তেওয়ারি বলেন, “যে তালিকা পাঠানো হয়েছে, সেই অনুযায়ী আমাদের স্কুলের চাকরি চলে যাওয়া ৮ জন শিক্ষকের মধ্যে ৬ জনের নাম আছে এই তালিকায়। ২ জনের নাম নেই।” মোহাড় ব্রহ্মময়ী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুদীপ শাসমল জানান, স্কুলের ৬ জন শিক্ষক চাকরি হারিয়েছিলেন। মাত্র ২ জনের নাম আছে যোগ্য শিক্ষকদের তালিকায়। বাকিদের নাম বাদ চলে গেছে! জানা গেছে, বাদ যাওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে বেশিরভাগ জনের বিরুদ্ধেই ওএমআর কারচুপির অভিযোগ ছিল।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় পৌঁছনো ৪টি তালিকাতে মোট ১২২৯ জন ‘যোগ্য’ (অযোগ্য হিসবে চিহ্নিত নন) শিক্ষকের নাম আছে। অবশ্য এই ১২২৯ জনের মধ্যে যাঁরা বদলি হয়ে অন্য জেলায় চলে গিয়েছেন, কিন্তু ‘যোগ্য’ শিক্ষক; তাঁদের নামও তালিকায় আছে। অপরদিকে, অন্য জেলা থেকে এই জেলায় বদলি হয়ে এসেছেন এবং ‘যোগ্য’ শিক্ষক; তাঁদের নাম এই জেলার তালিকাতে নেই। তবে, পূর্বের জেলার তালিকাতে যথারীতি তাঁদের নাম আছে বলে জানা গেছে শিক্ষা দপ্তর সূত্রে। এই বিষয়টিই সঠিকভাবে নির্ণয় করে, এপ্রিল মাসের বেতনের জন্য তালিকা করতে চায় ডিআই অফিস। এজন্যই বুধবার সন্ধ্যায় সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষকদের কাছে ২০১৬ সালের প্যানেল থেকে যোগদানকারী শিক্ষকদের তালিকাও চেয়ে পাঠিয়েছেন ডি.আই। মেইল মারফত পাঠানো হয়েছে একটি করে ফরম্যাট। এমনটাই জানিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা। বুধবার সন্ধ্যায় অ্যাডভান্স সোসাইটি ফর হেডমাস্টার অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেস সংগঠনের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শাখার সভাপতি অমিতেশ চৌধুরী বলেন, “২০১৬-র প্যানেল থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন স্কুলে কর্মরত (বদলির বিষয়টি মাথায় রেখে) ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরী করে, তার ভিত্তিতেই স্যালারি রিকুইজিশন সাবমিট করা হবে। বাকিদের নাম বাদ চলে যাবে। ডি.আই যেহেতু ক্ষমতাবলে ডিডিও (Drawing and Disbursing Officer), তাই বেতন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার চূড়ান্ত ক্ষমতা আছে তাঁর হাতেই। সেজন্যই তিনি প্রতিটি স্কুল থেকে ২০১৬-র প্যানেল থেকে যোগদানকারী শিক্ষকদের তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছেন।” বুধবার সন্ধ্যায় পশ্চিম মেদিনীপুরের ডিআই স্বপন সামন্ত জানিয়েছেন, “তালিকা এসেছে। আমর পুরো বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি।”

পশ্চিম মেদিনীপুর ডিআই অফিস:

News Desk

Recent Posts

Midnapore: “মন্ত্রীসভাকে বাঁচালে, আমাদের কেন নয়?” সুপ্রিম শুনানির আগেই মেদিনীপুরে মোক্ষম প্রশ্ন ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৭ এপ্রিল: "আমরা এখনও ধোঁয়াশার মধ্যে আছি। ওঁরা তো…

7 days ago

Midnapore: শালবনীতে জিন্দাল পাওয়ার প্ল্যান্টের শিলান্যাস! মেদিনীপুরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৭ এপ্রিল: গত ৫ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য…

7 days ago

Midnapore: গান শুনিয়ে, মিষ্টি খাইয়ে নববর্ষের সূচনা জেলা পুলিশের! মেদিনীপুরে অভিনব উদ্যোগ

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৫ এপ্রিল: বছরভর নানা রূপে দেখা যায় পুলিশকে। কখনও…

1 week ago

Midnapore: বুধ থেকে ‘বিকল্প’ পথেই স্কুল সামলাবেন প্রধান শিক্ষকরা! সিদ্ধান্ত চাকরিহারানো শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের ‘বেতন’ নিয়েও

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৫ এপ্রিল: "তাকিয়ে আছি সুপ্রিম কোর্টের ১৭ এপ্রিলের শুনানির…

1 week ago

Midnapore: বিশ্বে তৃতীয়, ভারতে প্রথম! দু-দু’টি বিরল রোগাক্রান্ত সন্তোষকে নতুন জীবন দিলেন মেদিনীপুর মেডিক্যালের চিকিৎসকেরা

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৩ এপ্রিল: একসঙ্গে দু-দুটি বিরল রোগ! দু-তিন বছর আগে…

1 week ago

Headmaster Recruitment: প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি পশ্চিম মেদিনীপুরে! শূন্যপদ প্রায় আড়াই হাজার

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১২ এপ্রিল: দীর্ঘ প্রায় দুই দশক পর প্রাথমিকে প্রধান…

2 weeks ago