দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৪ মার্চ: জেলার (পশ্চিম মেদিনীপুর) রাজনীতিতে তিনি জুন-ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত। শুধু ‘ঘনিষ্ঠ’-ই নয়; ২০২১ সালের মার্চ (৭ মার্চ) মাসে মেদিনীপুর বিধানসভার প্রার্থী হিসেবে শহর মেদিনীপুরে পৌঁছনোর পর থেকে ২০২৪ সালের ১০ মার্চ ব্রিগেডের জনগর্জন সভায় মেদিনীপুর লোকসভার প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা হওয়া পর্যন্ত, মেদিনীপুরের (পশ্চিম মেদিনীপুরের) যে ক’জন নেতা-নেত্রী জুন মালিয়ার শুভাকাঙ্খী বা অনুগামী হিসেবে পরিচিত ছিলেন; তাঁদের মধ্যে নিঃসন্দেহে প্রথম সারিতেই থাকবে মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি এবং বর্তমানে রাজ্য যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সন্দীপ সিংহের নাম। বুধবার (১৩ মার্চ) গভীর রাতে সেই সন্দীপেরই এক ‘অভিমানী’ পোস্ট ঘিরে এই মুহূর্তে মেদিনীপুরের রাজনীতিতে ছড়িয়েছে নানা জল্পনা! বুধবার রাত্রি ১০-১১টা নাগাদ সন্দীপ তাঁর ফেসবুক পেজে পোস্ট করেন, “আত্মসম্মান অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ! আত্মসম্মানের জন্য সব কিছু ত্যাগ করা যায়, কিন্তু কোনকিছুর জন্য আত্মসম্মানকে বিসর্জন দেওয়া যায় না।” লোকসভা নির্বাচনের আবহে, যখন জোর কদমে প্রচার শুরু হয়েছে চারিপাশে; ঠিক সেই সময়ই মেদিনীপুরের বিধায়ক তথা তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়া ঘনিষ্ঠ এই যুবনেতার পোস্ট ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে!
ইতিমধ্যে সন্দীপের এই পোস্টে প্রায় ৫০০-র বেশি রিয়েকশন এবং ১০০-র বেশি কমেন্ট পড়েছে! কেউ বা লিখেছেন, “দাদা, একদম ঠিক লিখেছেন।” আবার কেউ লিখেছেন, “দাদা তোমার পাশে ছিলাম, আছি, থাকবো!” অনেকেই আবার লিখেছেন “এতদিনে বুঝতে পারলেন?” তবে এই পোস্টের নেপথ্যে ঠিক কি ‘কারণ’ লুকিয়ে অছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়! প্রসঙ্গত, মেদিনীপুর লোকসভার প্রার্থী হিসেবে জুনের নাম ঘোষিত হওয়ার পরও সন্দীপ ঘনিষ্ঠ নেতারাই জেলায় প্রথম দেওয়াল লিখন করেছেন। শুধু তাই নয়, ‘লোকসভার প্রার্থী’ হিসেবে গত ১১ মার্চ পশ্চিম মেদিনীপুরে পৌঁছনোর পর, বেলদা থেকে মেদিনীপুর শহর পর্যন্ত সর্বক্ষণই জুনের পাশে ছিলেন সন্দীপ! তবে, এই সময়ের মধ্যে শুধু সন্দীপ-ই নয়, জুনের পাশে ছিলেন আরও এক যুব নেতা। তিনি মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের বর্তমান সভাপতি নির্মাল্য চক্রবর্তী। বলাই বাহুল্য, দিন কয়েক আগেও জেলার রাজনীতিতে জুন-বিরোধী গোষ্ঠীর অন্যতম নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন মেদিনীপুর পৌরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর নির্মাল্য। শুধু তাই নয়, একসময় নাকি দু’জনের ‘মুখ দেখাদেখি’ও প্রায় বন্ধ ছিল! নির্মাল্য ঘনিষ্ঠরা এও দাবি করেন, ২০২২’র পৌর নির্বাচনে মেদিনীপুর পৌরসভার ২-নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে তাঁর (নির্মাল্য চক্রবর্তীর) স্ত্রী-র নাম ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পরও শেষ মুহূর্তে ‘বাদ’ গিয়েছিল (কেটে দেওয়া হয়েছিল) বিধায়কের অঙ্গুলি হেলনেই! সেই নির্মাল্য-ই মেদিনীপুর লোকসভার দলীয় প্রার্থী জুন মালিয়া-র প্রচার কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেওয়া থেকে শুরু করে, মিডিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ রাখা- সমস্ত ভূমিকাতেই সন্দীপ-কে ছাপিয়ে যাচ্ছেন দেখে অনেকেই বেশ ‘অবাক’ হচ্ছেন! যদিও, দক্ষিণপন্থী রাজনীতিতে, বিশেষত ‘জোড়া-ফুলে’র দলে সবটাই ‘স্বাভাবিক’ বলে মন্তব্য করছে রাজনৈতিক মহল। তবে, এই রাজনৈতিক মহল অবশ্য এও ‘দাবি’ করেছে, সন্দীপের অভিমানী-পোস্টের ‘নেপথ্য-কারণ’ নাকি এটাই!
প্রসঙ্গত এও উল্লেখ্য যে, কয়েকমাস আগেই সন্দীপের পদে (জেলা যুব সভাপতি) এসেছেন নির্মাল্য। আর নির্মাল্য-র পদে (যুব তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক) বসানো হয়েছে সন্দীপ-কে। তবে, তারপরও সন্দীপ ছিলেন জুনের সঙ্গেই। সন্দীপের ‘দাবি’ এখনও আছেন! অন্যদিকে, দিনকয়েক আগেও জেলার যুব সভাপতি নির্মাল্য বিধায়ক জুনের বিপরীত মেরুতে ‘অবস্থান’ করতেন বলেই জেলার তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের একটা বড় অংশের দাবি। তবে, নির্মাল্য-র অত্যন্ত ‘ঘনিষ্ঠ’ একটি সূত্রের অবশ্য দাবি, মাস দুয়েক আগে থেকেই সমীকরণটা বদলাতে শুরু করেছিল! গত ১০ জানুয়ারি (২০২৪) কালীঘাটের সভায় স্বয়ং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন মেদিনীপুর লোকসভার প্রার্থী হিসেবে জুন-কেই তাঁর ‘প্রথম-পছন্দ’ হিসেবে আকারে-ইঙ্গিতে ‘বুঝিয়ে’ দিয়েছিলেন; তার পর থেকেই নির্মাল্যও নাকি নিজের ‘অবস্থান’ বদলাতে শুরু করেছিলেন। এর পেছনেও কোনও ‘জটিল’ রাজনৈতিক-সমীকরণ আছে কিনা, তা অবশ্য এই মুহূর্তে ধরাছোঁয়ার বাইরে! তবে, লোকসভার প্রার্থী হিসেবে জুন মালিয়ার নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই নির্মাল্য-র ‘বিশেষ’ তৎপরতা চোখে পড়েছে সব মহলেরই। এমনকি, এও জল্পনা ছড়িয়েছিল, প্রার্থী জুনের ইলেকশন এজেন্টও নাকি হতে চলেছেন নির্মাল্য-ই! এ নিয়ে বিজেপি-র জেলা মুখপাত্র অরূপ দাসের দাবি, “দিদির ‘পছন্দে’র জুনের কাছাকাছি এতদিন ছিলেন সন্দীপ। এবার সেই জায়গা নাকি দখল করে নিচ্ছেন নির্মাল্য। এ নিয়েই হয়তো তোলামূলে দ্বন্দ্ব লেগে গেছে!” যদিও এই সমস্ত বিষয়কেই ‘গুজব’ আর বিরোধীদের ‘চক্রান্ত’ বলে উড়িয়ে দিয়ে জেলা যুব সভাপতি নির্মাল্য চক্রবর্তী বৃহস্পতিবার আমাদের জানিয়েছেন, “আমি জেলা যুব সভাপতি। আমার নেতা অভিষেক ব্যানার্জি এবং মাথার উপরে অছেন আমাদের সকলের প্রিয় নেত্রী তথা ‘দিদি’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জুন মালিয়া তাঁদের প্রার্থী। সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী। তাঁকে জেতাতে জান লড়িয়ে দেব, এটাইতো স্বাভাবিক! আরেকটা কথা, আমি ফিল্ডের লোক, তাই প্রস্তাব এলেও ইলেকশন এজেন্ট হতে চাইনা! ইতিমধ্যেই তা জানিয়ে দিয়েছি দলকে এবং প্রার্থীকে। আমি মাঠে-ঘাটে ছুটে বেড়ানো লোক। তাই, প্রার্থীকে জেতানোর জন্য সর্বত্র ছুটে বেড়াব, এটাই স্বাভাবিক।” আর সন্দীপের ‘পোস্ট’ প্রসঙ্গে নির্মাল্য-র বক্তব্য, “ভাই সন্দীপ কেন এরকম লিখেছে, আমি কি করে বলব? তবে এই ধরনের কোনো বিষয়ই যে নেই; তা স্পষ্ট করে দিতে চাই।” ‘এই ধরনের কোনও বিষয়‘ যে নেই, বৃহস্পতিবার দুপুরে সন্দীপও তা জানিয়েছেন। সঙ্গে তিনি এও বলেছেন, “এই পোস্টের সঙ্গে রাজনীতির কোনো বিষয়, বিশেষত লোকসভা নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো বিষয় জড়িত নয়। একটা ব্যক্তিগত অনুভূতি প্রকাশ করেছি মাত্র! তাছাড়া, আমি নিজে এবার ঝাড়গ্রাম লোকসভার ভোটার। ওই দিকটাও দেখতে হচ্ছে। তাছাড়া, গতকালও তো আমি মেদিনীপুরে জুন দি-র সঙ্গে ছিলাম। জেলার প্রস্তুতি বৈঠকেও ছিলাম।” সন্দীপের সংযোজন, “আমি ঝাড়গ্রাম লোকসভার ভোটার হলেও, ভালোবেসে মেদিনীপুরের (মেদিনীপুর লোকসভার) জন্য যতটা পারছি করছি এবং করে যাব!” এই শেষের ক’টা শব্দেই নাকি লুকিয়ে আছে রাজ্য যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা মেদিনীপুর সদর মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক সন্দীপ সিংহের ‘অভিমান‘! সন্দীপের ‘একান্ত’ ঘনিষ্ঠদের দাবি ঠিক তেমনটাই!
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: সাপ ধরে বাড়িতেই পরিচর্যা করতেন। এলাকাবাসীদের কথায়,…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকদের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: সংগ্রাম, আন্দোলন কিংবা প্রতিবাদ। বরাবরই পথ দেখিয়ে…
শশাঙ্ক প্রধান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: বাড়ির ভিত তৈরির জন্য চলছিল খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। খোঁজ মিলল…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: ৫ এম.এল, ১০ এম.এল-র সিরিঞ্জ থেকে অ্যাড্রিনালিনের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ নভেম্বর: এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও নলেজ…