দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৬ জুন: “রাজনীতির আমি, রাজনীতির তুমি, রাজনীতিতেই মরে-বাঁচে সব বাঙালি”! বঙ্গ-রাজনীতি সম্পর্কে প্রায়শই শোনা যায় এই আপ্তবাক্যটি। আর, এই বাক্যের সত্যতাও প্রতি মুহূর্তেই খুঁজে পাওয়া যায়! মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্তঃসত্ত্বা বা গর্ভবতী বধূদের সহায়তার জন্য নিয়ে এসেছেন ‘জননী সুরক্ষা যোজনা’। কিন্তু, পশ্চিম মেদিনীপুরে দেখা গেলো, রাজনীতির যাঁতাকলে পড়ে মুখ্যমন্ত্রী’র সাধের ওই প্রকল্প থেকে দুই অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ বঞ্চিত হলো! তাঁদের অপরাধ- শ্বশুর সক্রিয়ভাবে বিজেপি করেন। ঘটনাটি খড়্গপুর- ২ ব্লকের পপরআড়া- ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ডিঙো বাগানপাড়া এলাকার। মানিক দাসের দুই পুত্রবধূ যথাক্রমে ৯ মাস ও ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। অভিযোগ, দু’জনই ‘জননী সুরক্ষা যোজনা’র আওতায় আসেনি। বিডিও’কে দিন দশেক আগে অভিযোগ জানালেও কোনও সুরাহা হয়নি।
প্রসঙ্গত, জননী সুরক্ষা যোজনার আওতায় থাকলে প্রসূতিরা চিকিৎসা, ওষুধ, মাতৃযান সহ নানা সুবিধা পান। কিন্তু, সেই সুবিধা থেকেই বঞ্চিত করা হয়েছে ডিঙো গ্রামের দুই গৃহবধূকে। অভিযোগ, স্থানীয় বিজেপি কর্মী মানিক দাসের দুই ছেলে উত্তম ও গৌতমের স্ত্রী’দের ওই প্রকল্পে নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি! মানিক বললেন, “অন্য রাজনৈতিক দল করা কি অপরাধ? আমার ছেলে, বৌমাদের সেজন্য সরকারি প্রকল্প থেকে বঞ্চিত করা হবে?” উত্তমের দাবি, “গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ে শংসাপত্র আনতে গিয়েও প্রধান ও উপ প্রধানের দুর্ব্যবহারের শিকার হতে হয়েছে। আমরা শংসাপত্রের আবেদন করলে উপ প্রধান আমার মুখের উপর কাগজ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, বিজেপি করি বলে কোনও সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবেনা! আমার বাবা বিজেপি কর্মী হওয়ায় আমার স্ত্রী দুর্গাকে ও আমার ভাইয়ের বউকে এখনও জননী সুরক্ষা যোজনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে আমরা কি করব? দিনমজুরি করে আমার সংসার চলে!” তবে, স্থানীয় উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে ‘হেলথ কার্ড’ হয়েছে বলে জানা গেছে। এই বিষয়ে পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের কাকলি মানার দাবি, “ওঁরা মিথ্যে কথা বলছেন। আমি ওইদিন অফিসেই যাইনি। উপ প্রধানের সঙ্গে ওদের কথা হয়েছে। আমার কাছে এলে শংসাপত্র দিয়ে দেব।।” অভিযুক্ত উপ প্রধান সনাতন বেরা বলেন, “আমার কাছে ওঁরা আসেনি!”