মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ ডিসেম্বর: উন্নয়নমূলক কাজকর্মের খতিয়ান তথা সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলায় জেলায় রিভিউ বৈঠক শুরু করেছেন ক্ষমতায় আসার পর থেকেই। লোকসভা নির্বাচনের আগে জেলায় মুখ্যমন্ত্রী আসার আগে, অনেকটা তাঁকে অনুসরণ করেই এবার ব্লকে ব্লকে রিভিউ বৈঠক শুরু করলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলী কাদরী। ঘাটালের পর শনিবার শালবনী বিডিও অফিসের সভাগৃহে অনুষ্ঠিত হয় এই রিভিউ বৈঠক। শালবনী, মেদিনীপুর সদর ও কেশপুর ব্লকের BDO, BMOH, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সহ ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে এই বৈঠক করেন জেলাশাসক খুরশিদ আলী কাদরী। মূলত, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকায় বিভিন্ন দপ্তরের উন্নয়নমূলক কাজকর্ম এবং সরকারই প্রকল্পের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতেই এই বৈঠক বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক। এছাড়াও, অর্থ দফতরের টাকা যাতে সঠিক পরিকল্পনার অভাবে ফেরত চলে না যায়, সেজন্যও উদ্যোগী জেলাশাসক।
এদিন বৈঠক শেষে জেলাশাসক বলেন, “পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকায় এই তিনটি ব্লকে কাজের অগ্রগতি বেশ ভালো। রাস্তাশ্রী-পথশ্রী থেকে শুরু করে জনস্বাস্থ্য, প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রভৃতি বিভাগে ভালো কাজ হয়েছে।” তিনি এও জানিয়েছেন, “সারের কালোবাজারি নিয়েও এদিন আলোচনা হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলায় ৪ জনের লাইসেন্স বাতিল এবং ১০ জনকে শোকজ করা হয়েছে।” ২১৮৫ টাকা প্রতি কুইন্টাল হিসেবে সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন জেলাশাসক। ডিম উৎপাদনে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা রাজ্যের মধ্যে প্রথম হয়েছে বলেও জানিয়েছেন। এবার, ডিম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২০০ কোটি রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এছাড়াও, কেশপুর ব্লকে ৬ কোটি টাকায় একটি ইন্টিগ্রেটেড ট্রাইবাল স্কুল এবং ৩ কোটি টাকায় একটি ইন্টিগ্রেটেড ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল তৈরির কাজ শুরু হয়েছে বলেও জানিয়েছেন জেলাশাসক খুরশিদ আলী কাদরী।
অন্যদিকে, বৈঠকের আগে সকাল ১১-টা নাগাদ শালবনী বিডিও অফিস চত্বরে বাংলার রবি শস্য বীমার দুটি প্রচার গাড়ি বা ট্যাবলোর উদ্বোধন করেন জেলাশাসক। যে কোনো ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ফসলের ক্ষতি হলেও জঙ্গলমহলের কৃষকরা যাতে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পান, সেজন্যই তাঁদের এই বিমায় নাম নথিভুক্ত করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক খুরশিদ আলী কাদরী। আর, বাংলা রবি শস্য বীমায় কৃষকদের নাম নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করতেই উদ্বোধিত ট্যাবলা দু’টি বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে প্রচার করবে বলে জানিয়েছেন জেলার উপ কৃষি অধিকর্তা দুলাল দাস অধিকারী।