তনুপ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১ জুলাই: সরকারি হাসপাতালের স্যালাইন (Saline) থেকে রোগীদের শরীরে নানা সমস্যা ঘিরে চাঞ্চল্য পশ্চিম মেদিনীপুরে! স্যালাইন (Saline) দেওয়ার পরই রোগীর শরীরে দেখা দিচ্ছে একাধিক সমস্যা, এই অভিযোগে হাসপাতাল চত্বরে তুমুল উত্তেজনা দেখা দেয় বৃহস্পতিবাররাতে। পরে ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। শুক্রবার দুপুর অবধি যদিও উত্তেজনা থাকে হাসপাতালে। এমনকি বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনার পর, শুক্রবার সকালে বেশিরভাগ রোগী হাসপাতাল থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি কিংবা অন্য হাসপাতালে চলে যান। ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ক্ষীরপাই গ্রামীণ হাসপাতালের।
অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ ক্ষীরপাই গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের স্যালাইন দেওয়ার পর, একাধিক রোগীর কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে কিংবা খিঁচুনি শুরু হয়। এমনকি, চামড়ায় এক ধরনের র্যাসও বেরোয়। এই অভিযোগ তুলে, হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন রোগীর পরিজনেরা। বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি নিয়ে রোগীর পরিবারের লোকেরা কর্তব্যরত চিকিৎসকদের জানালে, তাঁরা কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ। এরপরই ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠে হাসপাতাল চত্বর। চন্দ্রকোনা ১নং ব্লকের ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র তথা ক্ষীরপাই গ্রামীণ হাসপাতালের এই ঘটনা ঘিরে নিমেষে ছড়িয়ে পড়ে চাঞ্চল্য। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। একইসঙ্গে, চিকিৎসকেরা ভুক্তভোগী রোগীদের সমস্যা নিয়ে তৎপরতা শুরু করেন।
জানা যায়, বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে গত কয়েকদিনে ক্ষীরপাই গ্রামীণ হাসপাতালে যে সমস্ত রোগীরা ভর্তি ছিলেন, তাঁদের মধ্যে কয়েকজন রোগীর স্যালাইন চলেছিল। কিন্তু, কোন সমস্যা হয়নি। বৃহস্পতিবার বিকেলের পর তাঁদের স্যালাইন দেওয়ার পরই হঠাৎ করে সমস্যা শুরু হয় একাধিক জনের। কাঁপুনি আসে, চামড়ায় বা ত্বকে র্যাস বেরোতে শুরু করে। ২-১ জনের খিঁচুনিও আসে বলে জানা যায়। এরপরই রোগীদের পরিবারের সদস্যরা কর্তব্যরত নার্স ও চিকিৎসকদের বিষয়টি জানান। তাঁরা বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিয়ে, রোগীদের সাথে দুর্ব্যবহার করে বলে অভিযোগ। চিকিৎসা করাতে আসা রোগীদের পরিবারের আরো অভিযোগ এমনিতে হাসপাতালে স্যালাইনের পর্যাপ্ত জোগান নেই। বাইরে থেকে কিনতে হয়। তার উপর এই সমস্যা! এনিয়েই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে বৃহস্পতিবার অনেক রাতে। শুক্রবার সকালে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে বিশেষজ্ঞদল পাঠানো হয়। স্যালাইনের ওই ব্যাচ নাম্বার যুক্ত প্যাকেট চিহ্নিত করে, তা বাতিল করা হয় এবং অসুস্থ রোগীদের বিশেষ চিকিৎসা শুরু হয়। শুক্রবার দুপুরে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক ডক্টর সৌম্যশংকর সারেঙ্গী জানান, “ওই ব্যাচ নম্বরের স্যালাইনের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে, অনেক সময় কিছু কিছু রোগীর স্যালাইনে এলার্জি থাকে। তা থেকে কিছু সমস্যা দেখা দেয়। এবার দু-একজনের সমস্যা দেখা দিলে, স্বাভাবিকভাবেই বাকিদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে।”