দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৬ জুন: বালেশ্বরের বাহানাগা’তে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত ও চিকিৎসাধীন যাত্রীদের দেখতে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কথা বলেন চিকিৎসাধীন রোগী এবং রোগীর-পরিজনদের সাথে। মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্বাস্থ্য দপ্তর তথা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের পরিষেবা ও তৎপরতায় খুশি মুখ্যমন্ত্রী। আহত ট্রেন যাত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “শুক্রবার দুর্ঘটনার পর থেকেই যেভাবে মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ-প্রশাসন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, বিধায়ক ও জনপ্রতিনিধিরা তৎপরতা দেখিয়েছেন তাতে আমি কৃতজ্ঞ। তাঁদের ধন্যবাদ জানাই।” মুখ্যমন্ত্রী বিশেষ করে উল্লেখ করেন পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) সুমন সৌরভ মোহান্তির কথা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ” যেভাবে তিন-চার দিন ধরে পড়ে থেকে ওখানে (বালেশ্বরে) ও কাজ করছে তা দেখে আমি অবাক হয়ে গেছি! আমার ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা নেই।” তিনি এও বলেন, “এখানে (মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে) এখন ৬১ জন চিকিৎসাধীন আছেন। তার মধ্যে ১৬ জন আমার বিহারের ভাইবোনেরা আছেন।”

thebengalpost.net
সাংবাদিকদের মুখোমুখি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়:

মুখ্যমন্ত্রী এদিন ঘোষণা করেন, “আমি তো আগেই ঘোষণা করেছি। এই ট্রেন দুর্ঘটনায় যাঁদের মৃত্যু হয়েছে (বাংলার) তাঁদের পরিবার পিছু একজনকে আমরা স্পেশাল হোমগার্ডে চাকরি দেব। এমনকি যাঁদের হাত-পা ভেঙে গেছে বা গুরুতর আঘাত পেয়ে (অথর্ব হয়ে গেছেন) কাজ করার শক্তি হারিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের একজনকেও আমরা চাকরি দেব স্পেশাল হোমগার্ডে। এছাড়াও, মৃতদের পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা, গুরুতর আহতদের ১ লক্ষ, তার থেকে একটু কম আহতদের ৫০ হাজার, তার থেকে আরেকটু কম আহতদের আমরা ২৫ হাজার টাকা করে দেব। এমনকি, যতগুলো পরিবার গিয়েছিল, আহত হননি কিন্তু ওই ঘটনার পর থেকে ট্রমার মধ্যে আছেন; কোনও কাজ করতে পারছেন না, তাঁদেরও আমরা দশ হাজার টাকা এবং আগামী ৪ মাস মাসিক ২০০০ টাকা করে দেব। একই সঙ্গে চাল, ডাল, ওষুধপত্র প্রভৃতি আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে।” মুখ্যমন্ত্রী এদিন মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এও জানান, “আগামীকাল মৃতদের পরিবারের সদস্যদের ডাকা হয়েছে।” তাঁদের হাতে ৫ লক্ষ টাকা এবং স্পেশাল হোমগার্ডের চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হতে পারে বলে সূত্র মারফত জানা গেছে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এদিন ছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম, মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো, জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ হাজরা, বিধায়ক জুন মালিয়া, জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি, পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ড. সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী প্রমুখ। মেডিকেল কলেজ থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মেদিনীপুর সার্কিট হাউসের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। মঙ্গলবার রাতে সেখানেই থাকবেন বলে জানা গেছে।

thebengalpost.net
স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী :