দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ জুলাই: হাসপাতালের ফিমেল ওয়ার্ডে ভর্তি এক নাবালিকা রোগী সহ একাধিক রোগীর সঙ্গে অশ্লীল আচরণ করার অভিযোগ উঠল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে, ওই নাবালিক রোগীর পরিবারের সদস্যদের অভিযোগের ভিত্তিতে সন্তোষ রায় নামে ওই চিকিৎসককে তাঁর তমলুকের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে শালবনী থানার পুলিশ। সোমবার দুপুরের ওই ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে ওই চিকিৎসককে গ্রেফতার করে মেদিনীপুরে নিয়ে আসা হয়। এদিন দুপুর নাগাদ সন্তোষ রায় নামে ওই চিকিৎসককে মেদিনীপুর আদালতে তোলা হয় বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। ঘটনা ঘিরে নিন্দার ঝড় জেলা জুড়ে!

thebengalpost.net
গ্রেফতার চিকিৎসক:

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকালে হাসপাতালের ফিমেল ওয়ার্ডে রাউন্ডে গিয়ে চিকিৎসক সন্তোষ রায় এক নাবালিকা রোগীর (১৬-১৭ বছরের) সঙ্গে অশ্লীল আচরণ বা শ্লীলতাহানি করেন। তারপর, ওই ওয়ার্ডে ভর্তি আরও ৪ জন রোগীর (বা, রোগিনীর) সঙ্গে তিনি অসংলগ্ন আচরণ করেন বলে অভিযোগ। এরপর, ওই চিকিৎসক চলে যাওয়ার পরই, ওই নাবালিকা তাঁর বাড়ির লোকেদের ডাকেন। একই সঙ্গে ওয়ার্ডের বাকি রোগীরাও প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন। সোমবার বিকেল নাগাদ হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান রোগী এবং রোগীর পরিবারের সদস্যরা। ছুটে আসেন শালবনী থানার পুলিশ আধিকারিকরা। খবর দেওয়া হয় জেলা স্বাস্থ্য ভবনেও। ততক্ষণে অবশ্য বিপদ বুঝে শালবনী থেকে তমলুকে নিজের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন অভিযুক্ত চিকিৎসক। সন্ধ্যা নাগাদ হাসপাতালে পৌঁছয় জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের একটি দল। এদিকে, ওই নাবালিকার পরিবারের তরফে শালবনী থানায় শ্লীলতাহানির লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।

অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার গভীর রাতেই তমলুকের উদ্দেশ্যে রওনা দেন শালবনী থানার পুলিশ আধিকারিকরা। সোমবার সকালে চিকিৎসককে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে চিকিৎসককে মেদিনীপুর আদালতে তোলা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর রেজিস্ট্রেশন বাতিল হবে তথা চাকরি চলে যাবে বলে জানা গেছে। এই বিষয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক ডঃ সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী জানান, “অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আমরা বিভাগীয় তদন্ত শুরু করতে চলেছি। সেই রিপোর্ট পাঠানো হবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে।” তিনিও জানিয়েছেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে চিকিৎসকের চাকরি চলে যাবে। এদিকে, শালবনী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের একটি সূত্রে জানা গেছে, কোভিডের সময় থেকে শালবনী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন অভিযুক্ত ওই চিকিৎসক (সন্তোষ রায়)। তবে, বিভিন্ন সময়েই তাঁর বিরুদ্ধে কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগ উঠেছিল। মাস তিন-চারেক আগে মদ্যপ অবস্থায় ওয়ার্ডে আসার অভিযোগে এবং ধারাবাহিকভাবে কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে, শালবনী পঞ্চায়েত সমিতির তৎকালীন সভাপতি মিনু কোয়াড়ি বছর ৪৫’র ওই চিকিৎসককে চরম ভর্ৎসনা করেছিলেন। এদিনও তিনি মদ্যপ অবস্থায় ওয়ার্ডে এসেছিলেন কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার। (আপডেট: পুলিশের আবেদন মেনে ধৃত চিকিৎসকের ২ দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছেন মেদিনীপুর আদালতের বিচারক।)