দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৭ মে: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনীতে তৃণমূলের ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার ঠিক আগে শনিবার বিকেল ৪টা নাগাদ শালবনী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল পরিদর্শন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কথা বললেন রোগীদের সঙ্গে। ম্যাটারনিটি ওয়ার্ড বা স্ত্রী ও প্রসূতি বিভাগে গিয়ে কথা বললেন প্রসূতি মায়েদের সঙ্গে। এমনকি, ওই বিভাগে ভর্তি দুই সদ্যজাত ‘যমজ’ কন্যার নামও রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। তাদের মা’র উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “হয় অঙ্কিতা-সঙ্গীতা কিংবা সঙ্গীতা-সঞ্চিতা নাম রাখতে পার এদের।” আরেক শিশুর নাম রাখেন অরণ্য। মুখ্যমন্ত্রীকে এভাবে কাছে পেয়ে আপ্লুত শালবনী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স স্বাস্থ্যকর্মী সহ রোগী ও রোগীর পরিজনেরা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শালবনী নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু স্টেডিয়াম সংলগ্ন মাঠে তৃণমূলের অধিবেশন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর, স্টেডিয়ামের ঠিক পাশেই অবস্থিত শালবনী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। এদিন, অধিবেশন স্থলে পৌঁছনোর আগে হঠাৎ করেই মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলাশাসক খুরশিদ আলী কাদরী, জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার প্রমুখ। উল্লেখ্য যে, মুখ্যমন্ত্রী আসতে পারেন, এমনটা আভাস ছিলোই। সেই মতো প্রস্তুতও ছিলেন হাস্পাতাল কর্তৃপক্ষ তথা স্বাস্থ্য কর্মীরা! এদিন, অবশ্য তাঁদের অস্বস্তিতে পড়তে হয়নি। প্রাথমিকভাবে পরিষেবা ও পরিকাঠামো দেখে খুশি হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রয়োজনীয় কিছু নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসককে। এ প্রসঙ্গে এও উল্লেখ্য যে, শালবনী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এই মুহূর্তে স্থায়ী কোন সুপার বা গ্রামীণ হাসপাতালে স্থায়ী BMOH নেই। স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে মাসখানেক আগে একটি নির্দেশিকা প্রকাশিত হলেও, অজানা কারণে যোগদান করেননি স্থায়ী সুপার। এখনও, দায়িত্ব সামলাচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত BMOH স্বর্ণালী দে। চিকিৎসা সংক্রান্ত নানা বিষয়ে রোগী এবং এলাকাবাসীর ক্ষোভ থাকলেও, এদিন অবশ্য অস্বস্তিকর কোন পরিবেশ তৈরি হয়নি!
শনিবার বিকেল সাড়ে চারটা নাগাদ অধিবেশন স্থলের মঞ্চে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করেন। অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ঝাড়গ্রামে যে ঘটনা ঘটেছে, আমি বিশ্বাস করি তা আমার কুড়মি ভাইয়েরা ঘটায়নি। বিজেপির চক্রান্তে হামলা করা হয়েছে ‘আদিবাসী কন্যা’, আমাদের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার উপর। অভিষেকের উপরও হামলা করতে চেয়েছিল। মিডিয়ার গাড়িতেও হামলা চালিয়েছে!” যদিও, মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করা হয়েছে জেলা ও রাজ্য বিজেপির তরফে। তাঁদের মতে, “কুড়মিদের ছোট করতে, তৃণমূল এই কান্ড ঘটিয়েছে।” অন্যদিকে, কুড়মিদের ঘাঘর ঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের তরফেও চক্রান্তের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। সুমন মাহাতো নামে শালবনীর এক সদস্য জানিয়েছেন, “এই ঘৃণ্য কাজ কুড়মিরা করতে পারে না। সুপরিকল্পিতভাবে এই হামলা করানো হয়েছে।”