দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৬ জুন: ২০২০ সালের আগস্ট (১৮ আগস্ট) এর পর ২০২৩ এর জুন (২৫ জুন)। ফিরল সেই ভয়াবহ স্মৃতি! ফের সরকারি দপ্তরের পরিত্যক্ত বাড়ি ভেঙে, তার নিচে চাপা পড়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটলো পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। ৩ বছর আগে জেলা শহর মেদিনীপুরের কেরানীটোলাতে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের (DLRO Office) পরিত্যক্ত বাড়ির সংস্কার কাজ চলাকালীন ঘটে যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা। মৃত্যু হয়েছিল রাম সরেন (৫০) ও শুভদীপ প্রামানিক (২০) নামে দুই শ্রমিকের। গতকাল অর্থাৎ রবিবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশিয়াড়িতে সেচ দপ্তরের পরিত্যক্ত একটি বাড়ি চাপা পড়ে মৃত্যু হয় এক কিশোরের! জানা যায়, মৃত ওই কিশোরের নাম বিশ্বনাথ হাঁসদা। বছর ১৩’র কিশোরের বাড়ি ওই এলাকাতেই। ঘটনা ঘিরে নেমে এসেছে শোকের ছায়া!
জানা যায়, কেশিয়াড়ি থানার নাপো এলাকাতে সেচ দপ্তরের অধীন “সুবর্ণরেখা ব্রিজ কাম ব্যারেজ” প্রকল্পের একাধিক পরিত্যক্ত বিল্ডিং রয়েছে। আর, দীর্ঘদিন ধরে সেই সমস্ত পরিতক্ত বিল্ডিংয়ের জানালা-কপাট, আসবাবপত্র, এমনকি ইঁটও খুলে নিয়ে যাচ্ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। আর, তার ফলে আরো দুর্বল হয়ে যায় দোতলা একটি বিল্ডিংয়ের ভিত। রবিবার দুপুরে হঠাৎ করেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে ওই বিল্ডিংটি। আর, সেই সময় ওই বিল্ডিং এর নিচে চাপা পড়ে থাকা অবস্থায় এক কিশোরের পা বাইরে বেরিয়ে আছে বলে দেখতে পান স্থানীয়রা। এরপর, দমকল ও পুলিশের তরফে জেসিবি মেশিন নিয়ে এসে উদ্ধারকাজ শুরু করা হলে, তার নিচ থেকে বিশ্বনাথ হাঁসদা নামে স্থানীয় এক (১৩ বছরের) কিশোরের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। রবিবার রাত্রি অবধি চলে উদ্ধার কাজ। তবে, আর কোন মৃতদেহ উদ্ধার হয়নি। ৩ বছর আগেও ভরা বর্ষায় মেদনীপুর শহরে ঘটে গিয়েছিল ভয়াবহ দুর্ঘটনা! ভোর রাত অবধি উদ্ধারকাজ চালিয়ে দু’জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছিল এনডিআরএফ।
রবিবার প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বামফ্রন্ট সরকারের আমলে ২০০৪ সাল নাগাদ সুবর্ণরেখা নদীতে ব্রীজ কাম ব্যারেজ প্রকল্পের কাজের জন্য সেচ দপ্তর থেকে এই এলাকাতে গড়ে তোলা হয়েছিল অফিস কাম আবাসন। আর, দীর্ঘদিন ধরে এই প্রকল্পের কোনও কাজ না থাকায়, পরিত্যক্ত হয়ে নষ্ট হচ্ছিল বিল্ডিংগুলি। সমাজবিরোধীরা বিভিন্ন সময় এই বিল্ডিংগুলি থেকে নানা সামগ্রী ও ইঁট খুলে নিয়ে যাচ্ছিল। ফলে দুর্বল হয়ে গিয়েছিল এই বিল্ডিংগুলির ভিত। আর, রবিবার দুপুরে হঠাৎ করে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে যায় পরিত্যক্ত একটি বিল্ডিং। ব্লক প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ওই এলাকাটিকে বিপজ্জনক ঘোষণা করা হচ্ছে। আর যাতে ওই এলাকায় কেউ না যায়, সেই বিষয়ে নজরদারি করা হবে। আগামী দিনে এরকম ঘটনা যাতে না ঘটে তার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মৃতের পরিবারকে সরকারিভাবে সাহায্য করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।