সমীরণ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩০ অক্টোবর: তিনি বন রক্ষা করেন, আবার সবুজ পৃথিবী গড়ার বার্তাও দেন। জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুরের ভাদুতলার বনাঞ্চল আধিকারিক (Range Officer) পাপন মোহান্ত। ইতিমধ্যে, জেলাজুড়ে তিনি ‘সবুজায়নের সার্থক রূপকার’ হিসেবে পরিচিত হয়েছেন। তাঁর স্পর্শে সজীব-সুন্দর হয়ে ওঠে তাঁর কার্যালয় চত্বর। হয়ে ওঠে সাধারণ মানুষের বেড়ানোর জায়গা। তা সে অতীতে হুমগড় হোক কিংবা পিড়াকাটা, আর বর্তমানে ভাদুতলা। তবে, শুধু সবুজ রক্ষা করে বা বাগান তৈরি করেই নয়, আদ্যন্ত একজন প্রকৃতিপ্রেমী ও পরিবেশপ্রেমী হিসেবেও বারবার তাঁর আন্তরিকতার পরিচয় দিয়েছেন। তা সে ভরা গ্রীষ্মে পাখিদের জন্য পানীয় জলের পাত্র টাঙিয়েই হোক কিংবা পরিবেশ রক্ষার বার্তা দিয়ে সাইকেলে করে কিলোমিটারের পর কিলোমিটার ঘুরে বেড়িয়েই হোক। শনিবারও সাইকেলে করে পাড়ি দিলেন ১০৬ কিলোমিটার। সঙ্গী হলেন পশ্চিম মেদিনীপুর সাইক্লার্স ক্লাবের (West Midnapore Cyclers’ Club)। সাইক্লার্স ক্লাবের বার্তা ছিল- Heal the Earth ???? Heal Our Future। বাংলায় বললে, পৃথিবী সুস্থ রাখুন, রোগ মুক্ত ভবিষ্যত গড়ুন, সংক্ষেপে- ‘সুস্থ পৃথিবী নীরোগ ভবিষ্যত’। ভাদুতলা থেকে মেদিনীপুরে পৌঁছে সাইক্লার্স ক্লাবের একদল উদ্যমী তরুণ-তরুণী’র সঙ্গে, সাইকেলে পরিবেশ রক্ষার বার্তা যুক্ত নানা পোস্টার টাঙিয়ে রেঞ্জ অফিসার পাপন মোহান্তও তাঁদের সঙ্গী হলেন শনিবার।
সাইকেলে করে প্রথমে ভাদুতলা থেকে মেদিনীপুর; ফের মেদিনীপুর থেকে ভাদুতলা, চন্দ্রকোনা রোড, গড়বেতা। সেখান থেকে নির্ধারিত গন্তব্য ‘এশিয়ার গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন’ রূপে খ্যাত গনগনি। সেখান থেকে ফিরে আসা মেদিনীপুরে। সবমিলিয়ে মোট ১০৬ কিলোমিটার যাত্রা করলেন রেঞ্জ অফিসার পাপন। সাইক্লার্স ক্লাবের সদস্য বৃন্দ ছাড়াও এই মহান উদ্দেশ্যে সঙ্গী করেছিলেন দুই বন কর্মীকেও। পাপনদের বার্তা ছিল- “বন্ধ করি দূষিত বায়ু, বৃদ্ধি করি জীবের আয়ু”, “জলই জীবন জলই প্রাণ/ জল বাঁচাতে হাত লাগান”, “বিশুদ্ধ বায়ু সুপেয় জল/ নির্মল পরিবেশের ফল”, “দূষণমুক্ত পরিবেশের জন্য/ প্লাস্টিক নয় পাটের পণ্য”, “বায়ু দূষণ রোধ করি/ সুস্থ সুন্দর জীবন গড়ি” প্রভৃতি। পাপন জানিয়েছেন, “এমনিতেই পরিবেশ রক্ষার্থে সাইকেলের কোন বিকল্প নেই। দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়তে ধোঁয়াযুক্ত গাড়ির ব্যবহার সত্যিই কমানো প্রয়োজন। এদিন তাই সাইক্লার্স ক্লাবের সঙ্গী হয়ে পরিবেশ রক্ষার বার্তা দিতে এগিয়ে এলাম।” অন্যদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুর সাইক্লার্স ক্লাবের এই মহতী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে, শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক ড. রশ্মি কমল।