মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৯ জুলাই:”গাছের সবুজটুকু শরীরে দরকার/ আরােগ্যের জন্যে ওই সবুজের ভীষণ দরকার….চোখ তাে সবুজ চায়/ দেহ চায় সবুজ বাগান/ গাছ আনো, বাগানে বসাও/ আমি দেখি।” কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় এই ‘সবুজ’-ই দেখতে চেয়েছিলেন শহুরে জীবনের ‘হতাশা’ দূরে সরিয়ে। বিশ্ব উষ্ণায়নের ভয়াবহতা যখন এই সভ্যতাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ফেলেছে, হু হু করে যখন বেড়ে চলেছে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, হিমালয়ের বরফ যখন বিপজ্জনক হারে গলতে শুরু করেছে, ঠিক সেই সময় সবুজের এই ‘অঙ্গীকার’ করা ছাড়া বোধহয় আর উপায় নেই! আসন্ন ‘অরণ্য সপ্তাহ’ (১৪ থেকে ২০ জুলাই) বা বন মহোৎসব উপলক্ষে মেদিনীপুর বনবিভাগ তাই সবুজায়নের শপথ নিয়েছে। চারিপাশ ‘সবুজে সুবজ’ করে তোলার অঙ্গীকার নিয়েছে বনদপ্তর, আর এগিয়ে আসার বার্তা দেওয়া হয়েছে সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে। দপ্তরের মতে, উত্তপ্ত এই পৃথিবীকে পুনরায় সবুজ-শীতল করে তুলতে হলে, হাত হাত রেখে সবুজের শপথ নিতে হবে সকলকেই।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আগামী ১৪ থেকে ২০ জুলাই সারা রাজ্য জুড়ে পালিত হবে, অরণ্য সপ্তাহ বা বন মহোৎসব। মেদিনীপুর বনবিভাগের পক্ষ থেকেও পালিত হবে এই বন মহোৎসব। আর, সেই উপলক্ষেই জেলা জুড়ে প্রায় ২০ লক্ষ চারাগাছ রোপন করা হবে বলে জানিয়েছেন বনাধিকারিকরা। ওই সপ্তাহ জুড়ে সাধারণ মানুষের হাতে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ৫-টি করে চারাগাছ; যেকোনো ক্লাব, এনজিও, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাতে ১০০-টি চারাগাছ এবং বিধায়কদের হাতে ১০০০-টি চারাগাছ তুলে দেওয়া হবে বলে মেদিনীপুর বনবিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যে, মেদিনীপুর, ভাদুতলা সহ বিভিন্ন বনাঞ্চলেই (রেঞ্জে) সেই চারাগাছ তৈরীর কাজ চলছে জোরকদমে। শনিবার এমনটাই জানিয়েছেন বনাঞ্চল আধিকারিক পাপন মোহান্ত। এ প্রসঙ্গে এও উল্লেখ্য যে, সম্প্রতি (২৭ জুন) রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক মেদিনীপুর শহরে এসে শুনিয়ে গিয়েছেন সতর্ক বাণী, “আগামী ৫-৭ বছরের মধ্যেই মেদিনীপুরের মতো সাধারণ জায়গাতে সর্বোচ্চ উষ্ণতা ৫০ ডিগ্রি ছুঁয়ে ফেলতে পারে। তাই, প্রয়োজন শুধু বৃক্ষ রোপন। বন মহোৎসব উপলক্ষে, আমরা তাই প্রতিটি মানুষের হাতে বিনামূল্যে তুলে দেব চারাগাছ।”