দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, ঝাড়গ্রাম, ২৬ ফেব্রুয়ারি: পেশাদার কোচিং সেন্টার বা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের বিশেষ ‘প্রশিক্ষণ’ ছাড়াই চাকরির জগতে দেশের সবথেকে কঠিন পরীক্ষা হিসেবে পরিচিত ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (UPSC/ Union Public Service Commission) পরীক্ষায় অভূতপূর্ব সাফল্য পেলেন জঙ্গলমহল ঝাড়গ্রামের মেধাবী যুবক মানস মাহাত। তবে, মানস সিভিল সার্ভিসের IAS, IPS-র দৌড়ে ছিলেন না! তার সাফল্য এসেছে ইউপিএসসি-র অ্যাসিস্ট্যান্ট জিওফিজিসিস্ট (Assistant Geophysicist) পদে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) প্রকাশিত চূড়ান্ত মেধাতালিকা অনুযায়ী ‘অরণ্য সুন্দরী’ ঝাড়গ্রামের মানস মাহাত সারা দেশের মধ্যে ১৪-তম স্থান (Rank 14) অর্জন করেছেন। খুব শীঘ্রই জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার আধিকারিক হিসেবে যোগ দেবেন মানস। তাঁর এই সাফল্যে ‘গর্বিত’ জঙ্গলমহল ঝাড়গ্রাম থেকে শুরু করে অখন্ড মেদিনীপুরের আপামর বাসিন্দারা।
উল্লেখ্য, বছর একত্রিশের মানসের বাড়ি ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্রাম ব্লকের প্রত্যন্ত চাঁদাবিলা গ্রামে। মানসের বাবা চুনারাম মাহাত রাজ্য সরকারের ফুড ইন্সপেক্টর পদ থেকে অবসর নিয়েছেন। মা গন্ধেশ্বরী মাহাত গৃহবধূ। চুনারাম-গন্ধেশ্বরীর তিন ছেলে। সব থেকে ছোট মানস। বড় ছেলে বিদ্যুৎ দপ্তরে এবং মেজ ছেলে হাই স্কুলে শিক্ষকতা করেন। ছোট ছেলে মানস স্থানীয় চাঁদাবিলা এস.সি হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা পাশ করেন ২০০৮ সালে। ২০১০ সালে ঝাড়গ্রাম বাণীতীর্থ হাই স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করে ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজে ফিজিক্স (Physics) নিয়ে ভর্তি হন। তারপর ২০১৩ সালে স্নাতক উর্ত্তীণ হয়ে খড়্গপুর আইআইটি (IIT Kharagpur)-থেকে স্নাতকোত্তর (M.Sc) করার সুযোগ পান। ২০১৫ সালে স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হন মানস। এরপর, সিএসআইআর নেট (CSIR NET) এবং সেট (SET/ State Eligibility Test) পাস করেন। তারপর গবেষণা করার সিদ্ধান্ত নিলেও মাঝপথে ওই সিদ্ধান্ত বদল করেন। ২০১৯ সালে প্রত্যন্ত চাঁদাবিলা গ্রামে ফিরে আসেন মানস। শুরু করেন UPSC-র প্রস্তুতি। মানস বলেন, “আমার বাড়িতে প্রচুর বই রয়েছে। ওই বই পড়ে এবং বিষয়ভিত্তিক অনুশীলনের মাধ্যমেই সফলতা এসেছে। বইয়ের বিকল্প নেই। শুধুমাত্র বই এবং ইন্টারনেটের সাহায্যে আমি অ্যাসিস্ট্যান্ট জিওফিজিসিস্ট (Assistant Geophysicist) পদে উর্ত্তীণ হয়েছি। মাত্র দু’নম্বরের জন্য জিও সায়েন্টিস্ট (Geo Scientist) পদে পাইনি। আশাকরি ওখানে ওয়েটিং লিস্টে থাকবো।”
অ্যাসিস্ট্যান্ট জিওফিজিসিস্ট পদে চাকরির প্রসঙ্গে মানস বলেন, “আমি এমএসসি-তে জিও-ফিজিক্সের কোনো পেপার পড়িনি। কিন্তু, বিষয়টি ভালো লাগাতে আমি নতুন বই কিনে চাকরির পরীক্ষার জন্য পড়তে শুরু করি। এখানে বিষয়ের দক্ষতা ও গভীরতা খুব গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে কলকাতায় গিয়ে লিখিত পরীক্ষা দিয়েছিলাম। তারপর ওই পরীক্ষায় পাশ করতে গত ৭ ফেব্রুয়ারি (২০২৪) দিল্লির ইউপিএসসি (UPSC Office) ভবনে গিয়ে ইন্টারভিউ দিয়েছিলাম। ২৩ ফেব্রুয়ারি মেধা তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। তাতে আমি ১৪ তম-স্থান অর্জন করতে পেরেছি।” শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুমন সাহু তাঁর বাড়ি গিয়ে পুষ্পস্তবক দিয়ে সংবর্ধনা জানান সুমন। সুমন বলেন, “সবচেয়ে আশ্চর্যের যে কোনরকম কোচিং বা ট্রেনিং ছাড়াই উনি নিজের পরিশ্রম আর আন্তরিক প্রচেষ্টায় এই জায়গায় পৌঁছেছেন। খুবই সরল-সাদাসিধে জীবনযাত্রা। আমাদের প্রত্যন্ত এলাকা থেকেও যে সর্বভারতীয় পরীক্ষায় পাশ করা যায়, তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন মানস বাবু। সত্যিই আজ আমারা আপ্লুত, অনুপ্রাণিত হয়েছি। ঝাড়গ্রাম জেলাবাসী হিসেবে, নয়াগ্রামবাসী হিসেবে ওঁর জন্য গর্ব অনুভব করছি।”
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: সাপ ধরে বাড়িতেই পরিচর্যা করতেন। এলাকাবাসীদের কথায়,…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকদের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: সংগ্রাম, আন্দোলন কিংবা প্রতিবাদ। বরাবরই পথ দেখিয়ে…
শশাঙ্ক প্রধান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: বাড়ির ভিত তৈরির জন্য চলছিল খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। খোঁজ মিলল…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: ৫ এম.এল, ১০ এম.এল-র সিরিঞ্জ থেকে অ্যাড্রিনালিনের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ নভেম্বর: এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও নলেজ…