তনুপ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৮ অক্টোবর: বিজয় দশমী উপলক্ষে বসেছিল মদের আসর! সেখানেই মোবাইল নিয়ে বচসা শুরু হয় দুই বন্ধুর মধ্যে। আর, বচসা থেকেই হাতাহাতি। তাতেই মৃত্যু হলো এক বন্ধুর। খবর পেয়ে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে তদন্ত শুরু করেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে মূল অভিযুক্ত বন্ধু ও তার মা সহ মোট ৩ জনকে। বৃহস্পতিবার রাতে (৬ অক্টোবর), এমনই ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানার মহব্বতপুর গ্রামে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃত ব্যক্তির নাম মানস মাঝি (৪০)। গ্রেফতার হওয়া মূল অভিযুক্ত ওই বন্ধুর নাম ভাস্কর মাঝি। শুক্রবার ভাস্কর মাঝি ছাড়াও তাঁর মা আরতি মাঝি, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দীপঙ্কর মাঝি-কে গ্রেফতার করা হয়েছে দাসপুর থানার তরফে। ৩ জনকেই শনিবার ঘাটাল আদালতে তুলে, নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।

thebengalpost.net
মূল অভিযুক্ত ভাস্কর মাঝি:

মৃতের পরিবারের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার অর্থাৎ একাদশীর রাতে সাগরপুর মাড়তলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিল। আর, সেই উপলক্ষেই সংলগ্ন মহব্বতপুর গ্রামে বন্ধু ভাস্কর মাঝির বাড়িতে গিয়েছিল মানস মাঝি। দু’জনে একসঙ্গে অনুষ্ঠান দেখার পর, মদের আসর বসায় মাড়তলা সংলগ্ন একটি ফাঁকা মাঠে। ছিল আরও কয়েকজন বন্ধু। মদ খাওয়ার পর, একসময় লুকিয়ে ভাস্করের মোবাইল নিয়ে চম্পট দেয় মানস। মোবাইল খুঁজতে শুরু করে ভাস্কর। সেই সময় একটি ঘরের পেছনে বসে মোবাইল দেখছিল মানস। মানসকে খুঁজে পাওয়ার পর, দু’জনের মধ্যে এক দফা বচসা ও হাতাহাতি হয় বলে জানা গেছে। এরপর অবশ্য দু’জনই বাড়ি চলে যায়। গভীর রাতে অর্থাৎ শুক্রবার ভোর রাতে (৩ টা নাগাদ) ভাস্করের বাড়ি যায় মানস। রাতের ঘটনা নিয়ে ফের বচসা শুরু হয় দু’জনের মধ্যে। এরপর, ভাস্করের উদ্দেশ্যে মানস কটূ কথা বললে, রেগে গিয়ে ভাস্কর তাকে জোরে ঠেলে দেয় বলে অভিযোগ। তাতেই মাথায় গুরুতর আঘাত পায় মানস। ভাস্কর ও তার পরিবারের লোকেরাই মানসকে গাড়িতে করে দাসপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং তার বাড়িতে খবর দেয়। যদিও, চিকিৎসা শুরুর আগেই মানসের মৃত্যু হয়। এরপরই, মানসের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ভাস্কর ও তার মা সহ মোট ৩- জনকে গ্রেফতার করে। শনিবার ঘাটাল আদালতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ভাস্কর শিকার করে, মানস ক্রমাগত তাকে কটূক্তি করছিল এবং টানাহেঁচড়া করছিল বলে, সে জোরে ঠেলে দেয়। তবে, সে ভাবতে পারেনি, এইভাবে গুরুতর আঘাত পাবে এবং মানসের মৃত্যু হবে! পাড়ার সম্পর্কে মানস তার মামা হয় বলেও জানায় সে। দু’জনের মধ্যে এমনিতে ভালো সম্পর্ক ছিল বলেও জানা গেছে। তবে কি, মোবাইল ঘটিত কারণেই বিবাদ শুরু হয় দু’জনের মধ্যে? নাকি অন্য কোনো কারণ? খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ওই মোবাইলটিও।