তনুপ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৮ এপ্রিল:আর পাঁচটা দিনের মতোই শুক্রবার রাতেও নিজেদের পুরানো মাটির বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে নতুন তৈরি হওয়া পাকা বাড়িতে ঘুমোতে গিয়েছিলেন। শনিবার সকালে সেই বাড়ি থেকেই উদ্ধার হল বাড়ির মালিকের গলা কাটা রক্তাক্ত মৃতদেহ! পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বছর ৫৫’র ওই ব্যক্তির নাম বটকৃষ্ণ পাল। এলাকায় তিনি সক্রিয় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। একসময় ছিলেন বুথ সভাপতিও। যদিও, এই ঘটনায় এখনও রাজনীতির যোগ খুঁজে পাচ্ছেন না এলাকাবাসী! তবে, নিজেদের কর্মী এভাবে খুন হওয়ায়, অবিলম্বে সঠিক তদন্তের দাবি করা হয়েছে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে। অপরদিকে মৃতের ছেলে গোবিন্দ প্রসাদ পাল সহ পরিবার ও এলাকাবাসীর তরফে সি.আই.ডি তদন্তের দাবি করা হয়েছে। শনিবারের এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের পুড়শুড়ি গ্রামে। ইতিমধ্যে, বিকেল নাগাদ স্নিফার ডগ বা পুলিশ কুকুর নিয়ে গিয়ে ঘাটাল মহাকুমা পুলিশের তরফে ঘটনাস্থলে গিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, পেশায় কৃষক পুড়শুড়ি গ্রামের বাসিন্দা বটকৃষ্ণ পাল (৫৫) এলাকার একজন সক্রিয় তৃণমূল কর্মী। একসময় ছিলেন দলের বুথ সভাপতিও। তবে, তাঁর বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর বা বিরোধী দলগুলোর তেমন কোনো অভিযোগ নেই। নিকটাত্মীয় বা প্রতিবেশীদের সঙ্গেও তেমন কোনো শত্রুতার অভিযোগ নেই। তা সত্ত্বেও, শনিবার সকাল ১০-টা নাগাদ নিজের বাড়ি থেকে তাঁর রক্তাক্ত গলা কাটা দেহ উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় হতবাক সকলেই। মৃত প্রৌঢ়ের বছর ৩০ এর ছেলে গোবিন্দ প্রসাদ পাল বাইরে কাজ করেন। শনিবার বেলা ১২টা নাগাদ ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে তিনি দাবি করেছেন, “শুক্রবার সন্ধ্যাতেও বাবার সাথে ফোনে কথা হয়েছে। বাবা আমাকে আজকে বাড়ি আসতে বলেন। সবেমাত্র বাড়ি পৌঁছেই শুনি, বাবাকে কে বা কারা খুন করেছে! আমরা ঘটনার সঠিক তদন্ত চাই। আমার বাবার খুনিদের শাস্তি চাই। যতক্ষণ না তদন্ত শুরু হচ্ছে, মৃতদেহ তুলতে দেবো না।” এলাকাবাসীও সঠিক তদন্ত দাবি করেছেন। তাঁদের মধ্যেই কেউ কেউ বললেন, “পুরানো কোনো বিবাদ বা শত্রুতার কারণে খুন কিনা, বুঝতে পারছিনা!” জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, “আমরা বিজেপির মতো এখনই দাবি করবোনা বিরোধী দলের তরফে খুন করা হয়েছে। তবে, উনি আমাদের দলের একেবারে সক্রিয় কর্মী ছিলেন। পুলিশকে বলব সঠিক তদন্ত করে খুনিদের খুঁজে বের করতে। তবে, রাজনৈতিক হত্যা হতে পারে। আবার, নাও হতে পারে। আশা করছি পুলিশ উপযুক্ত তদন্ত করে রহস্য উদ্ধার করবে।” সিপিআইএম এবং বিজেপি’র তরফে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের দিকে ইঙ্গিত করা হলেও, তাঁরাও সঠিক তদন্তের দাবি করেছেন।