দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, কলকাতা ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ২০ ডিসেম্বর: দীর্ঘ ২০ মাস পর নবম থেকে দ্বাদশ অবধি পঠন-পাঠন শুরু হয়েছে রাজ্যে। কিন্তু, নবম থেকে দ্বাদশের NSQF (National Skills Qualifications Framework) শিক্ষক আর ল্যাব আ্যাসিস্ট্যান্টদের বিদ্যালয়ে যাওয়ার নির্দেশ বলবৎ করা হয়নি! বরং, কারিগরি দপ্তরের এই বৃত্তিমূলক শিক্ষকদের ছাঁটাই করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। NSQF সংগঠনের বক্তব্য, রাজ্যে কর্মসংস্থান নয়, কর্মহীন হচ্ছেন শিক্ষকরা। মানবিক সরকার চরম অমানবিকতা দেখাচ্ছে। প্রসঙ্গত, ২০১৩ সাল থেকে সরকার ও সরকার পোষিত উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে, সমগ্র শিক্ষা অভিযানের অন্তর্গত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত বৃত্তিমূলক বিষয়গুলি, যেমন- কম্পিউটার (আইটি) ,রিটেল, হেলথ কেয়ার, কন্সট্রাকশন, অটোমোটিভ প্রভৃতি হাতে কলমে শেখার কোর্সগুলি বিনামূল্যে শেখানোর সরকারি উদ্যোগ নেওয়া হয়। কারিগরী শিক্ষা দপ্তরের হাতে তুলে দেওয়া হয় দায়িত্ব। এই কোর্সগুলি পড়ানোর জন্য, বিভিন্ন বেসরকারকারী এজেন্সির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। দীর্ঘ ৭-৮ বছর ধরে সরকারি বিদ্যালয়ে হাতে কলমে ছাত্র-ছাত্রীদের এই সমস্ত কোর্স শেখানোর পর, স্কুল খোলার আগেই এনএসকিউএফ শিক্ষক ও ল্যাব-আ্যাসিস্ট্যান্টদের ছাঁটাই করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে! আর, এতেই গর্জে উঠেছেন তাঁরা। রবিবার ডেবরা টোল প্লাজার সামনে বিক্ষোভ দেখালেন এই ধরনের শিক্ষকরা। যেহেতু রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা ও উন্নয়ন মন্ত্রী ড. হুমায়ূন কবীর ডেবরা বিধানসভার বিধায়ক, তাই ডেবরা-কেই বেছে নিয়েছিলেন তাঁরা। এই ধরনের শিক্ষকদের দাবি, অবিলম্বে এজেন্সি সরিয়ে সরকারিভাবে তাঁদের নিয়োগ ও চাকরির নিশ্চয়তা প্রদান করুক রাজ্য সরকার।
উল্লেখ্য যে, কেন্দ্রীয় প্রকল্প এনএসকিউএফ (NSQF) এর অধীন এই বৃত্তিমূলক শিক্ষক ও ল্যাব-আ্যাসিস্ট্যান্টদের ছাঁটাই করার জন্য হটাৎ করে ২৭ অক্টোবর একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে রাজ্যের কারিগরী শিক্ষা দপ্তর। এ নিয়ে NSQF শিক্ষক পরিবারের রাজ্য সম্পাদক শুভদীপ ভৌমিক বলেন “২০১৩ সাল থেকে শিক্ষকতা করেও নূন্যতম সামাজিক সুরক্ষা পেলাম না! দিদি, এই কি আমাদের পাওনা? আমাদের নিয়োগ হয়েছিল সরকারি নিয়ম মেনে। এখন কয়েক হাজার পরিবার দিশেহারা? ভাতের থালায় শুধুই চোখের জল! দু’মুঠো অন্নের জন্য শিক্ষক ও ল্যাব আ্যাসিস্ট্যান্টরা রাস্তায়। এবার পরিবার নিয়ে আত্মহত্যা করবে, না হয় অনাহারে মরবে! আপনি আমাদের রক্ষা করুন। অবিলম্বে দিদি আমাদের বেসরকারিকরণ মুক্ত করে চাকুরী ফিরিয়ে দিন, আমরা স্কুলে যেতে চাই, আমাদের ৬০ বছর পর্যন্ত চাকুরী সুনিশ্চিতকরণ করুন, না হয় আমাদের স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন গ্রহণ করুন। স্কিলের কারিগরদের আজ কর্মহীন হতে হচ্ছে, সত্যিই দুৰ্ভাগ্যজনক”! যদিও এনিয়ে রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা মন্ত্রী ড. হুমায়ূন কবীর সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “কেন্দ্রীয় প্রকল্পের (NSQF) অধীনে এই ধরনের শিক নিয়োগ করা হয়েছিল। কেন্দ্র এই প্রকল্পের বরাদ্দ প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। তা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার যতটা সম্ভব চালিয়ে যাচ্ছে। চেষ্টা করছে, যাতে কেউ কর্মহীন হয়ে না পড়ে, সেই বিষয়টি। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ বা আন্দোলন তো অযৌক্তিক!”