দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৯ এপ্রিল: পুরুলিয়ার কুস্তাউরে রেলপথ অবরোধ তুলে নিয়েছেন আদিবাসী কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি অজিত প্রসাদ মাহাত। রাজ্যের মুখ্য সচিবের তরফে আলোচনার আশ্বাস দিয়ে চিঠি পাঠানোর পরই রবিবার বেলা ১২টা নাগাদ পুরুলিয়াতে রেলপথ অবরোধ তুলে নিয়েছেন তিনি। গত সেপ্টেম্বর (২০২২) মাসেও তাঁর নেতৃত্বেই উঠেছিল কুড়মিদের আন্দোলন! তবে, দাবি না মিটলে পরবর্তী সময়ে আবারো আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অজিত। এদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর গ্রামীণের খেমাশুলিতে এখনও ওঠেনি আন্দোলন। শুধু জাতীয় সড়ক নয়, রেলপথ দখল করে বসে আছেন কয়েকশো কুড়মি আন্দোলনকারী। রাজেশ মাহাত, সুদীপ রায় মাহাত সহ কুড়মিদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, যতক্ষণ না সিআরআই (CRI) রিপোর্টের কমেন্ট এবং জাস্টিফিকেশন পাঠানো হচ্ছে বা এই বিষয়টি নিশ্চিত করা হচ্ছে ততক্ষণ অবধি আন্দোলন তোলার প্রশ্নই নেই। তাঁরা এও জানিয়েছেন, তাঁরা ১ এপ্রিল থেকে ‘ঘাঘর ঘেরা’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন। রেলপথ অবরোধ তাঁরা করেননি! সেটা অজিত মাহাত’র আদিবাসী কুড়মি সমাজের তরফে ৫ এপ্রিল থেকে করা হয়েছে। এই বিষয়ে আদিবাসী কুড়মি সমাজের নেতা অজিত প্রসাদ মাহাত-কে উদ্দেশ্য করে চরম কটাক্ষও করেছেন তাঁরা!

thebengalpost.net
রেল পুলিশের প্রস্তুতি:

এদিকে, ৫ এপ্রিল থেকে আজ, রবিবার অবধি প্রায় ১০৫ ঘন্টা ধরে খেমাশুলির টানা রেলপথ অবরোধ হওয়ায় ভারতীয় রেল তথা সারাদেশ চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বলে রেলের তরফে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। শুধু যাত্রীদের অসুবিধাই নয়, কয়েকশো ট্রেন বাতিলের ফলে দেশের অর্থনীতিও ক্ষতির সম্মুখীন। এদিকে, পণ্যবাহী ট্রেন বা মালগাড়িও বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন শিল্প ও কলকারখানাতে উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে গত ২-৩ দিন ধরে। সবমিলিয়ে প্রবল চাপে রেল। ইতিমধ্যে, টানা ৫ দিন ধরে প্রায় ৪০০ ট্রেন বাতিল করতে হয়েছে দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে। রবিবারও দুরন্ত এক্সপ্রেস, রাজধানী এক্সপ্রেস সহ ৯৫টি এক্সপ্রেস ট্রেন বাতিল করা হয়েছে দক্ষিণ পূর্ব রেলের তরফে। হাওড়া ও খড়্গপুরের সঙ্গে টাটা, মুম্বাই, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, আমেদাবাদ সহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন লাইনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে সারা দেশ বিভিন্নভাবে ক্ষতির সম্মুখীন! তাই, রেলের তরফেও চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে আন্দোলনকারীদের। এমনকি, রেল পুলিশ সব রকম ভাবে অবরোধ তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও জানা গেছে। সাহায্য করতে প্রস্তুত রাজ্য পুলিশ-ও। আগামী কয়েকঘন্টা তাই খেমাশুলিতে টানটান উত্তেজনা বজায় থাকবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।