তনুপ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৮ মার্চ: মাসের পর মাস বন্ধ বেতন। তার মধ্যেই কোভিড ওয়ার্ড বন্ধের আশঙ্কা। এই পরিস্থিতিতে বকেয়া মেটানো ও বিকল্প কর্মসংস্থানের দাবিতে মঙ্গলবার ঘাটাল মহকুমা কোভিড হাসপাতাল চত্বর উত্তাল হল অস্থায়ী কর্মীদের বিক্ষোভ ও ডেপুটেশন ঘিরে। জানা যায়, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালের অধীনে রয়েছে কোভিড হাসপাতালও। প্রথম থেকে তৃতীয় ঢেউ পর্যন্ত এই কোভিড হাসপাতাল পরিষেবা দিয়ে গেছে। এখন করোনা’র প্রকোপ প্রায় নেই, ফলে হাসপাতালে রোগীও নেই। এদিকে, ওই কোভিড হাসপাতালে অস্থায়ীভাবে নিযুক্ত ৩২ জন কর্মী, যাঁরা একসময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরিষেবা দিয়ে গেছেন, তাঁরা গত কয়েক মাস ধরে বেতন পাননি। হাসপাতাল করোনা শূন্য হওয়ায় কাজ হারানোর আশঙ্কাও করছেন। এই পরিস্থিতিতে ওই অস্থায়ী কর্মীরা মঙ্গলবার ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালের সামনে একত্রিত হয়ে বকেয়া বেতন ও বিকল্প কর্মসংস্থানের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান এবং তারপর হাসপাতালের সুপারের সাথে দেখা করে নিজেদের সমস্যা, অভাব অভিযোগের কথা জানান।

thebengalpost.net
ডেপুটেশন :

এই অস্থায়ী কর্মীদের বক্তব্য, “গত ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে আমরা ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালের কোভিড বিভাগে অস্থায়ী কর্মী হিসাবে কাজ করছি। যে বেতন দেওয়া হবে বলা হয়েছিল, তা তো মেলেইনি, উল্টে বেতন বকেয়া মাসের পর মাস ধরে। তার উপর শুনছি কোভিড ওয়ার্ড বন্ধ হয়ে যাবে। এবিষয়ে আমরা সুপার স্যার-কে বললাম সমস্যার কথা। এর আগেও অনেক জায়গায় বেতন নিয়ে জানানো হয়েছে। কিন্তু, কাজের কাজ কিছু হয়নি।” কোভিড ওয়ার্ডের অস্থায়ী কর্মীদের দাবি, তাদের ৯ মাসের বকেয়া বেতন মেটাতে হবে এবং অন্যত্র কোনও কাজের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। করোনার মতো কঠিন পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এতোদিন পরিষেবা দিয়েও তাঁদের সাথে এমন আচরণ মেনে নিতে পারছেনা এই অস্থায়ী কর্মীরা। এই বিষয়ে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালের সুপার সম্রাট রায় চৌধুরী ক্যামেরার সামনে কিছু বলতে না চাইলেও, জানা গেছে, ওই অস্থায়ী কর্মীদের সঙ্গে একপ্রকার প্রতারণা করেছে দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার সংস্থাটি। সরকারিভাবে সংস্থার হাতে বেশিরভাগ বকেয়া বেতনই দিয়ে দেওয়া হয়েছে, তবে সংস্থার মালিক ইচ্ছে করেই কর্মীদের বেতন প্রদান করেননি! এই বিষয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ ভুবন চন্দ্র হাঁসদা জানিয়েছেন, “ঘাটালে বিক্ষোভের বিষয়ে এখনও কিছু শুনিনি। তবে, ওই হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা এজেন্সি কর্মীদের ঠিকঠাক বেতন দেননি বলে শুনেছি। তাই, এই বিষয়ে ওই এজেন্সি-কে সতর্ক করা হয়েছে। ভবিষ্যতে ওই কর্মীদের সুপার এর মাধ্যমে বেতন দেওয়া হবে।” তবে, তিনি এও জানিয়েছেন, “শুধুমাত্র কোভিড পরিস্থিতিতে যাদের নিয়োগ করা হয়েছিল, কোভিড চলে যাওয়ার কারণে অর্থাৎ হাসপাতালগুলি কোভিড শূন্য হওয়ায় ওই কর্মীদের সংখ্যা কমানো হবে।”