দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ২৪ সেপ্টেম্বর: মাত্র কয়েক ঘন্টা আগেই পুরুলিয়া থেকে আদিবাসী কুড়মি সমাজের মুখ্য উপদেষ্টা অজিত প্রসাদ মাহাত গত চারদিন ধরে চলা (শনিবার সহ পাঁচদিন) অবরোধ ‘প্রত্যাহার’ করার ঘোষণা করেছিলেন! যার বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুর সহ আপামর কুড়মি সমাজ। খড়্গপুরের খেমাশুলি সহ কোথাও আন্দোলন, অবরোধ প্রত্যাহার না করে তাঁদের বিস্ফোরক দাবি, “উনি বিক্রি হয়ে গেছেন! আমাদের কোনো দাবি পূরণ হয়নি। তাই অবরোধ চলবে।” আদিবাসী কুড়মি সমাজের বিভিন্ন নেতৃত্বের মতে, “অজিত মাহাত’র অবরোধ উঠেছে, কুড়মিদের অবরোধ ওঠেনি!” তাঁকে নেতৃত্ব থেকে ছেঁটে ফেলার দাবিও করা হয়েছে।
এর আগে, শনিবার বেলা ১২ টা নাগাদ অনুষ্ঠিত সাংবাদিক বৈঠক থেকে অজিত প্রসাদ মাহাত ঘোষণা করেন, “রাজ্যের সঙ্গে সন্তোষজনক আলোচনা হয়েছে। অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ দপ্তরের প্রধান সচিব জানিয়েছেন, কিভাবে তাঁর কাজ করেছেন এবং করছেন। এর আগেও ২০১৮ সালে সিআরআই রিপোর্ট পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু, আমাদের তা দেখানো হয়নি। একটা গ্যাপিং বা ব্যবধান তৈরি হয়েছিল। তা আর হবেনা বলে উনি জানিয়েছেন। সংশোধিত সিআরআই আমাদের দেখানো হবে বলে আমাদের জানানো হয়েছে। এরপর, কেন্দ্রীয় সরকার যদি আমাদের দাবি না মানে, আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাব। আপাতত, পুজোর আগে, জনগণের মুখ চেয়ে আন্দোলন প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। মানুষের খুব অসুবিধা হচ্ছিল। এমন নয় যে, আমরা ভবিষ্যতে আর আন্দোলন করবো না। আমরা আমাদের ক্ষমতা-টা দেখাতে পেরেছি! আশা করব, রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার আমাদের দাবি অনুযায়ী দ্রুত কাজ করবেন।” সূত্রের খবর, কিছু ক্ষণ পরেই প্রতিনিধি দল পৌঁছবে পুরুলিয়ার কুস্তাউর স্টেশনে। এমনটাই জানা গিয়েছে আন্দোলনকারীদের সূত্রে। ওই প্রতিনিধি দলে জেলা প্রশাসন এবং রেলের এক জন করে প্রতিনিধি রাখার দাবি তুলেছেন কুড়মি সমাজের নেতা অজিত প্রসাদ মাহাতো। যাতে অবরোধকারীদের নামে কোনও মামলা না হয় সে দিকটি বিবেচনা করে দেখার জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করেন অজিত। যদিও, পুরুলিয়ার কুস্তাউর (কুশটাঁইড়) এ এখনও আন্দোলন চলছে! অন্যদিকে, খড়্গপুরের খেমাশুলির আন্দোলনকারীর অবরোধ প্রত্যাহার করার পরিবর্তে, আরও তীব্র আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। সেখানে অবরোধ তো ওঠেইনি বরং জনসমাগম আরও বাড়ছে! প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কুড়মি জাতিকে তফসিলি উপজাতি বা ST সম্প্রদায়ভুক্ত করা এবং কুড়মালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফসিলের অন্তর্ভুক্তির দাবিতে গত মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) থেকে পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলার কিছু অংশে রেল টেকা বা রেল অবরোধ এবং ডহর ছেঁকা বা পথ অবরোধ শুরু হয়।