দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৩ জুন: সৌজন্যের নতুন নজির তুলে ধরল জঙ্গলমহল শালবনী! মনোনয়ন পর্ব ঠিকঠাক হচ্ছে কিনা খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার ভরদুপুরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী বিডিও অফিসে হাজির হয়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। সবকিছু অবশ্য ঠিকঠাকই চলছিল। হঠাৎই ভিরমি খেয়ে পড়ে যাওয়ার জোগাড় হল দিলীপের! না, প্রচন্ড গরমের কারণে নয়। তৃণমূলের হুমকি বা কোন অশান্তির কারণেও নয়। হঠাৎই দিলীপ দেখলেন, তাঁর জন্য ঠান্ডা জল ও ORS নিয়ে হাজির একদল কর্মী। মুখগুলো কেমন যেন অচেনা! হবে নাই বা কেন, তাঁরা যে কেউ ই বিজেপি কর্মী নয়, আসলে তাঁরা ছিলেন শালবনীর একদল তৃণমূল কর্মী! ২৪ ঘন্টা আগেই যেখানে এই জেলারই (পশ্চিম মেদিনীপুর) নারায়ণগড়ে তৃণমূল কর্মীদের কাছ থেকে তাঁকে ‘চোর চোর’ স্লোগান শুনতে হয়েছিল; সেখানে এ যে মেঘ না চাইতেই জল! সামলে নিয়ে দিলীপ অবশ্য খেলেন। আর, শালবনীর ওই তৃণমূল কর্মীরা বললেন, “এটাই তৃণমূলের সংস্কৃতি, এটাই আমাদের জঙ্গলমহলের সংস্কৃতি।”

thebengalpost.net
দিলীপের জন্য জল, ওআরএস নিয়ে হাজির তৃণমূল কর্মীরা :

এর আগে, এদিন নির্বিঘ্নে চলা শালবনীর মনোনয়ন পর্ব দেখে খুশি হন দিলীপ ঘোষ। খোঁজখবর নেন দলীয় কর্মীদের কাছ থেকে। বলেন, “আমরাই তো সব জায়গাতে নমিনেশন করছি। ইতিমধ্যে আমাদের ৭০ শতাংশ নমিনেশন সম্পূর্ণ হয়ে গেছে। আজ হলে বাকিটাও হয়ে যাবে।” তারপরই ঘটে গেল এই ‘অবাক জলপান’ এর ঘটনা! কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে, এরপর দিলীপ তৃণমূল কর্মীদেরও জিজ্ঞেস করেন আপনারা মনোনয়ন করছেন তো? শালবনী ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের ওই কর্মীরা মুচকি হেসে বলেন, ” হ্যাঁ, আমাদের সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে। চিন্তা করবেন না।” স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত (৩ নং) প্রধান তথা জেলা মহিলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি শক্তি রানি পাল বলেন, “মা মাটি মানুষের সরকারের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আমাদের প্রিয় নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমনই নির্দেশ। আমরা এভাবেই বিরোধীদেরও অভ্যর্থনা জানাই।” কাছাকাছি উপস্থিত ছিলেন মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা শালবনী পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সন্দীপ সিংহও। তিনি বলেন, “মনোনয়ন পর্ব শুরু হতে না হতেই কখনো সিপিএম, কখনো আবার বিজেপির তরফে নানা অভিযোগ আনা হচ্ছিল। সব অভিযোগই যে ভিত্তিহীন, এর আগেই তা প্রমাণিত হয়ে গেছে। আজ, বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ নিজের চোখে এসে দেখে গেলেন সবকিছু। আর, আমরা আমাদের সংস্কৃতি তুলে ধরেছি। এই গরমে ওনাকে ঠান্ডা জল খাইয়েছি। ব্যস আর কিছু নয়!”