দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৪ জুন: প্রায় বছর দুয়েক ধরেই কাজ চলছে মেদিনীপুর ও খড়্গপুরের সংযোগস্থলে কংসাবতী নদীর উপর অবস্থিত মোহনপুর ব্রিজ বা দেশপ্রাণ বীরেন্দ্র সেতুর। ৮ টনের বেশি ওজনের মালবাহী ট্রাকের চলাচল বন্ধ আছে প্রায় এক বছর ধরে। তবে, ব্রিজের বেশিরভাগ কাজ প্রায় সম্পূর্ণ হওয়ার পথে বলে জানা যায় জাতীয় সড়কের শীর্ষস্থানীয় ইঞ্জিনিয়ারদের তরফে। এর মাঝেই শনিবার বিকেল ৩টা নাগাদ হঠাৎ করেই যাত্রীবাহী বাস সহ ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয় সংস্কারের দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়ারদের তরফে। ফলে, ৬০নং জাতীয় সড়কের দুই পাশে সারি সারি দাঁড়িয়ে যায় কয়েকশো বাস-ট্রাক সহ ভারী যানবাহন (৮ টনের কম ওজনের)। ব্রিজের এক প্রান্তে জেলা শহর মেদিনীপুর, অপর প্রান্তে রেল শহর খড়্গপুর। দুই দিকেই ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। শুধুমাত্র দু’চাকা ও চার চাকার যানবাহনকে ছাড় দেওয়া হয়। বিকেল চারটা নাগাদ দায়িত্বপ্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পল্লব বিশ্বাস জানান, “ব্রিজের নিচে বিয়ারিং রেক্টিফিকেশনের কাজ চলছে। তাই, ভারী যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে সাময়িক সময়ের জন্য। আধঘন্টা-এক ঘণ্টার মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে।” শেষ পর্যন্ত বিকেল ৫টা নাগাদ বিয়ারিংয়ের ওই কাজ সম্পূর্ণ হলে ভারী যানবাহন চলাচল (৮ টনের কম ওজনের) ফের শুরু হয়।

thebengalpost.net
হঠাৎ করেই বন্ধ করে দেওয়া হয় ভারী যানবাহন চলাচল:

তবে, আগাম খবর বা বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে কিংবা সকাল থেকেই ভারী যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ না করে; হঠাৎ করে বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ পথচারী থেকে শুরু করে বাসযাত্রী এবং ট্রাকের চালক ও খালাসীরা। সূত্রের খবর অনুযায়ী, দুপুরবেলা কাজ চলাকালীন হঠাৎ করেই বিপত্তি ঘটে ব্রিজের নিচে কিছু অংশে। সেই সময়ে ভারী যানবাহন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে মনে করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জরাজীর্ণ এই অর্ধ শতাব্দী প্রাচীন সেতুর সংস্কার সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়ার কথা আগামী এক-দু মাসের মধ্যেই। তারপরই, চলতি বছরের শেষের দিকে কিংবা আগামী বছরের (২০২৪) শুরুর দিকে এই সেতুর সমান্তরালে নতুন একটি ব্রিজ বা সেতু নির্মাণের কাজ প্রাথমিকভাবে শুরু হতে পারে বলেও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের একটি সূত্রে জানা যায়। ইতিমধ্যে, DPR তৈরি করে কেন্দ্রীয় সরকারের সড়ক পরিবহন দপ্তরের কাছে পাঠানো হয়েছে বলেও জানা যায়। এ প্রসঙ্গে এও উল্লেখ্য যে, চৌরঙ্গী থেকে মুর্শিদাবাদের মোরগ্রাম পর্যন্ত ফোর লেনের জাতীয় সড়কের অনুমোদনও মিলেছে। সেই কাজও আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে শুরু হতে পারে বলে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের একটি সূত্রে জানা যায়। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ভারতমালা’ প্রকল্পে খড়্গপুর গ্রামীণের চৌরঙ্গী থেকে মুর্শিদাবাদের মোরগ্রাম পর্যন্ত এবং মোরগ্রাম থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত নতুন একটি আর্থিক করিডর বা হাইওয়ে তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজও খুব শীঘ্রই শুরু হবে বলে জানা যায়।