দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ৭ ডিসেম্বর: হাতে-পায়ে তেমন জোর নেই! তবে, মনের জোরেই ‘বিশ্বজয়’ করার তাগিদ অনুভব করেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর শহরের মালঞ্চ এলাকার বাসিন্দা তুহিন দে। জন্মের মাত্র চার দিনের মধ্যেই ধরা পড়ে বিরল মাংসপেশীর রোগ। দু’পায়ে উঠে দাঁড়ানোর মতো আর সামর্থ্য হয়নি তুহিনের। শুধু তাই নয়, হাত দিয়েও কোন কিছু করার মতো শক্তি নেই প্রায় অবশ হতে বসা শরীরের! বড় হওয়ার পর হুইল চেয়ারই হয় তুহিনের একমাত্র সম্বল। তবে, হাল ছাড়েন নি মেদিনীপুরের এই ‘বিস্ময় বালক’! শুরু হয় লড়াই। পাশে থাকেন বাবা সমীরণ দে এবং মা সুজাতা দে। পেশায় ব্যবসায়ী সমীরণ ও গৃহবধূ সুজাতা তাঁদের একমাত্র ছেলে তুহিনের এই ‘অসম’ লড়াইয়ে ‘মেরুদণ্ড’ হয়ে দাঁড়ান। আর সেজন্যই হুইল চেয়ার নিয়েও হাওয়াই জাহাজের বেগে এগিয়ে চলেছেন মালঞ্চ-র তুহিন দে!
থুতনি দিয়েই এখন অনায়াসে ল্যাপটপ, মোবাইল চালান তুহিন। পেন মুখে ঢুকিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে তাঁর পড়াশোনা, লেখালেখি। ছোট থেকে নিজেকে বিশেষভাবে সক্ষম না ভেবে, আর পাঁচজন সাধারণ ছেলে-মেয়েদের মতোই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার লড়াই শুরু করেছেন। ছোটবেলায় একাধিক জায়গায় চিকিৎসা হলেও, স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দিতে পারেননি চিকিৎসকেরা! তবে, নিজের শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে পিছনে ফেলেই প্রতিষ্ঠিত হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে চলেছেন তুহিন। লক্ষ্য আইআইটি থেকে এম.টেক করা। বি.টেক করার পর সম্প্রতি এম.টেকের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তুহিন। তার আগে আইআইটি খড়্গপুর (IIT Kharagpur) ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় থেকে ২০১৭ সালে মাধ্যমিক পাশ করেন তুহিন। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন রাজস্থানের কোটা থেকে। তার পর শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে বিটেক করেছেন। পরীক্ষার সময় তুহিন কখনও কারও সাহায্য নেননি। মুখে কলম এবং পেন্সিল নিয়ে লেখালিখি করতে কোনও সমস্যা হয় না তাঁর। বছর ২৫-র তুহিনের কথায়, “আমি মুখে পেন বা পেনসিল নিয়ে লিখতে পারি। কোনও সমস্যা হয় না। আর পরীক্ষার সময় অতিরিক্ত সময়ও নিই না। তবে পরীক্ষার সময় কাগজ নেমে গেলে বা পাতা ওল্টানোর সময় শিক্ষকেরা সাহায্য করেছেন। ছবি আঁকা হোক বা কম্পিউটার চালানো, কোনও কিছুতেই অসুবিধা হয় না।”
গত ৩ ডিসেম্বর, ‘বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস’ উপলক্ষে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের তরফে তুহিনকে ‘অ্যাকাডেমিক এক্সেলেন্সি অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ ওয়ার্কস’ সম্মানে ভূষিত করা হয়। ২০১১ সালে বেস্ট ক্রিয়েটিভিটির জন্য রাজ্য স্তরে সম্মান, ২০১২-‘১৩ সালে রাষ্ট্রপতির হাত থেকে সম্মাননা, ২০১৯ এ রাজস্থানের কোটা থেকে বিশেষ পুরস্কারেও সম্মানিত হয়েছেন ‘মেদিনীপুরের গর্ব’ তুহিন দে। সম্প্রতি, একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে তুহিনের কাছে এসেছিল ৫০ লক্ষ টাকার চাকরির প্রস্তাব! তবে, তুহিন সেই প্রস্তাবে সাড়া দেননি। তাঁর লক্ষ্য আইআইটি খড়্গপুর (IIT Kharagpur) থেকে এম.টেক এবং পিএইচডি করা। শুধুমাত্র ‘মনের জোরে’ যে তুহিন এতদূর এগিয়েছেন, আগামীদিনে তাঁর বাকি স্বপ্নও পূরণ হবে বলে আশাবাদী আপামর মেদিনীপুরবাসী!
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, ১২ ডিসেম্বর: বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১১ ডিসেম্বর: ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য সিপিআইএমের। মঙ্গলবার এরিয়া…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১০ ডিসেম্বর: শাল-মহুয়ার দেশ 'জঙ্গলমহল' পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনী। সেই…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৯ ডিসেম্বর: তাঁর গানে মুগ্ধ শ্রেয়া ঘোষাল (Shreya Ghoshal),…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৮ ডিসেম্বর: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী ব্লকের তথা পঞ্চায়েত…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ৭ ডিসেম্বর:'রেল শহর' খড়গপুরে ফের চাঞ্চল্যকর ঘটনা! নিগৃহীত খোদ পৌরপ্রধান!…