দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১০ ডিসেম্বর: পেটের অসহ্য যন্ত্রণায় কাতর মেয়েকে শুক্রবার রাতে মেদনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করছিলেন মেদিনীপুর শহরের একটি পরিবার। অভিযোগ, শুক্রবার রাতেই মেয়ের ভুল অপারেশন (অস্ত্রপচার) করে তাকে সংকটজনক করে তুলেছিলেন মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক। নিজেদের ‘ভুল’ বুঝতে পেরেই নাকি শনিবার ফের কিশোরীর অস্ত্রপচার করা হয়েছিল! তারপর থেকেই বছর ১৩-র কিশোরী মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ভেন্টিলেশনে। অভিযোগ, ভুল অস্ত্রপচার বা চিকিৎসার কারণেই সুপ্রিয়া রায় (১৩) নামে ওই কিশোরীর শারীরিক অবস্থা সংকটজনক হয়েছে।

thebengalpost.net
মন্ত্রীর পা ধরে কান্নাকাটি :

রবিবার সকালে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা-কে দেখতে পেয়েই ছুটে আসেন সুপ্রিয়া’র পরিবারের সদস্যরা। মেয়েকে সুস্থ ফিরে পেতে মন্ত্রীর পা ধরে কাতর আর্জি জানান কিশোরীর মা, বাবা সহ পরিবারের সদস্যরা। ঘটনার বিবরণ শুনে একপ্রকার স্তম্ভিত হয়ে যান স্বয়ং মন্ত্রীও! অন্যদিকে, রোগীর সংকটজনক অবস্থার কথা স্বীকার করলেও, ভুল চিকিৎসার কথা মানতে চাননি মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, মেদিনীপুর শহর লাগোয়া কালগাং এলাকার বাসিন্দা গোবিন্দ রায় শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ পেটের যন্ত্রণায় কাতর মেয়েকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করেন। অভিযোগ, নতুন করে কোন টেস্ট না করেই, পুরানো একটি USG-র ভিত্তিতেই রাত্রি এগারোটা নাগাদ সুপ্রিয়া-র অ্যাপেন্ডিক্স (Appendix) অপারেশন করা হয়। ফের শনিবার সকালের দিকে আরও একটি অপারেশন করা হয় বলে অভিযোগ সুপ্রিয়া’র মা রিঙ্কু রায়, মাসী প্রতিমা প্রামাণিক প্রমুখের। আর তারপর রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায়, গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে ওই কিশোরী। এরপর, প্রথমে আইসিইউ ও পরে ভেন্টিলেশনে পাঠানো হয় বলে দাবি পরিবারের। রবিবার ভোরে পরিবারের সদস্যদের জানানো হয় মেয়ের শারীরিক অবস্থা সংকটজনক! আর তারপরই বাড়ির লোক ভুল চিকিৎসার অভিযোগে বিক্ষোভ দেখান। রবিবার সকালে ঝাড়গ্রামের একটি পরিবারের আশঙ্কাজনক রোগীদের (গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আহত) দেখতে এসেছিলেন মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। সেই সময়ই মন্ত্রীকে কাছে পেয়ে তাঁর পা জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করেন পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের একটাই আর্জি, মেয়েকে সুস্থ ফিরিয়ে দিতে হবে। এই বিষয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার-কে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি! তবে, বিভিন্ন মিডিয়াতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, “টেস্ট না করে কখনও অস্ত্রপচার করা হয়না। সমস্ত ধরনের টেস্ট করেই অপারেশন করা হয়েছে। অনেক সময় মেয়েদের শরীরের নানা জটিলতার কারণে রোগীর অবস্থা সংকটজনক হয়ে যায়। চিকিৎসকেরা সবরকম ভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।” (আপডেট: রবিবার রাত্রি ৯টা নাগাদ মৃত্যু হয় কিশোরীর!)

thebengalpost.net
মন্ত্রীর কাছে মেয়ের জন্য প্রাণভিক্ষা মায়ের: