দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২২ ডিসেম্বর: আমেরিকার অ্যারিজোনায় পাথুরে জমির মধ্যে বয়ে গিয়েছে কলোরাডো নদী। আর সেই নদীর জলে পাথর ক্ষয় হয়ে তৈরি হয়েছে আশ্চর্য এক ভূমিরূপ। নাম ‘গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন’ (Grand Canyon)। জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শহর মেদিনীপুর থেকে মাত্র ৫০ কিমি দূরে সবুজে ঘেরা গড়বেতা। আর, গড়বেতার অদূরেই বৈচিত্র্যময় সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ গনগনি। যেখানে শিলাবতী নদীর প্রবাহ স্রোত এবং দিক পরিবর্তনের ফলে ভূমিক্ষয়ের মধ্য দিয়ে তৈরি হয়েছে ক্যানিয়ন বা গিরিখাত। যা ‘বাংলার গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন’ হিসেবেই পরিচিত। চারদিকে লাল ধুলা মাটির পাহাড়ে অসাধারণ ভাস্কর্য। অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা এই গিরিখাত (ক্যানিয়ন) যেন আমেরিকার গ্র্যান্ড ক্যানিয়নেরই ক্ষুদ্র সংস্করণ! মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ২০১৮-‘১৯ সালে গনগনির সৌন্দর্যায়ন সম্পন্ন হয়েছে। হয়েছে একাধিক কটেজও। সেই সময় বিধায়ক ছিলেন মেদনীপুর শহরের বাসিন্দা আশিস চক্রবর্তী।
আবারও, মেদিনীপুর শহরেরই এক ভূমিপুত্রের হাত ধরে গনগনির পর্যটন-মানচিত্রে নতুন ‘মুকট’ যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিল অবশেষে! রবিবার শীতের দুপুরে গনগনিতে একটি বই (‘মেদিনীপুরের গ্রামের কথা- ১৭তম খন্ড’) প্রকাশ অনুষ্ঠানে গিয়ে তেমনই আসার কথা শুনিয়েছেন মেদিনীপুর বিধানসভার নবনির্বাচিত বিধায়ক তথা শাসকদলের (তৃণমূল কংগ্রেসের) জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা। বই প্রকাশ অনুষ্ঠান শেষে গনগনি পর্যটনস্থল তথা গিরিখাত (ক্যানিয়ন) এবং নবনির্মিত উদ্যান পরিদর্শন করেন সুজয়। তারপরই উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, “এই উদ্যানে যদি একটি ব্যাটারি চালিত গাড়ি থাকে, তাহলে বয়স্ক মানুষদের পুরো পার্ক বা উদ্যানটি ঘুরে দেখতে সুবিধা হবে। সেই সঙ্গে এখানে একটি রোপওয়ে করতে পারলে কলকাতা সহ বাইরের পর্যটকরা গনগনির প্রতি আরো বেশি আকৃষ্ট হবেন। এই দু’টি বিষয় নিয়েই মুখ্যমন্ত্রীর সাথে কথা বলব এবং খুব শীঘ্রই প্রস্তাব আকারে জমা দেব।”
এদিন সুজয়ের সঙ্গে ছিলেন জেলাপরিষদের সভাধিপতি প্রতিভা মাইতি, বিডিও রামজীবন হাঁসদা, পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সেবাব্রত ঘোষ প্রমুখ। বিষয়গুলি নিয়ে সুজয় তাঁদের সঙ্গেও কথা বলেন। এরপরই, স্থানীয় কয়েকজন গনগনির গিরিখাতে বা নদীখাতে নামার পথে (সিঁড়িতে) লাইট লাগানোর বিষয়ে আবেদন জানান মেদিনীপুরের বিধায়কের কাছে। সুজয় অবিলম্বে এই বিষয়টি দেখার জন্য জেলা পরিষদের সভাধিপতির সঙ্গে কথা বলেন। সবমিলিয়ে, জেলার উল্লেখযোগ্য এই পর্যটনস্থলের আকর্ষণ বা সৌন্দর্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তিনি যথাসাধ্য উদ্যোগ গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন এদিন।