দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৮ সেপ্টেম্বর: একটানা বৃষ্টি হলেই প্লাবিত হচ্ছে মেদিনীপুর শহর! ঐতিহ্যমণ্ডিত মেদিনীপুর শহরের একটা বিশাল অংশের মানুষের কাছে জলযন্ত্রণা যেন ক্রমেই নরক-যন্ত্রণায় পরিণত হয়ে উঠছে। সাম্প্রতিক সময়ের প্রবল বর্ষণ জেলা শহরের সেই জলমগ্ন চেহারাটা একেবারে চরম রূপে উন্মুক্ত হয়েছে। একদিকে, পালবাড়ি-গণপতিনগর নগর সহ কংসাবতী নদী তীরবর্তী এলাকা, অন্যদিকে হবিবপুর-সূর্যনগর-রামকৃষ্ণ নগর-বিবেকানন্দ পল্লী সহ ধর্মা জাতীয় সড়ক সংলগ্ন এলাকা ভয়াবহ রূপে প্লাবিত হয়। শহরের একটি মাত্র প্রধান নালা বা মহানালা দ্বারিবাঁধ খাল উপচে জল বইতে থাকে শহরজুড়ে। বিভিন্ন এলাকাকে বাঁচাতে ভাঙতে হয় প্রাচীর, সাহায্য নেওয়া হয় আধুনিক পাম্পিং ব্যবস্থার! দাবি উঠতে শুরু করে শহরের নিকাশি ব্যবস্থা আধুনিক ও উন্নত করার। দ্বারিবাঁধ খালের বিকল্প একটি মহানালা তৈরি করার দাবিও ওঠে। এই বিষয়ে সবুজ সংকেত দিয়েছিলেন মেদিনীপুর পৌরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারপারসন সৌমেন খান-ও। মেদিনীপুরের বিধায়ক জুন মালিয়া-র সঙ্গে আলোচনায় এই দ্বিতীয় মহানালা-র বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। এবার, মঙ্গলবার থেকে সেই কাজ শুরু হল।‌ শহরের এক প্রান্তে ধর্মা টোল প্লাজার কাছে, জাতীয় সড়কের সামনে থেকে সেই মহানালা খননকার্য শুরু হয়েছে চেয়ারপারসনের উপস্থিতিতে। এই মহানালা কংসাবতী নদীতে গিয়ে মিশবে বলে জানিয়েছেন সৌমেন বাবু।

thebengalpost.net
মহানালা তৈরির কাজ শুরু হল :

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ব্রিটিশ আমল থেকে ঐতিহ্যমন্ডিত মেদিনীপুর শহরের একমাত্র নিকাশি নালা হল- দ্বারিবাঁধ খাল। এই প্রধান নালা বা খালের মাধ্যমেই মেদিনীপুর শহরের জমা জল বা আবর্জনা যুক্ত জল শহরের বাইরে বের করে দেওয়া হয়। কিন্তু, সুপ্রাচীন এই নালা ক্রমশ মজে যাচ্ছে এবং সঙ্কীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এদিকে, মেদিনীপুর শহরের আয়তন দৈর্ঘ্যৈ ও প্রস্থেও বেড়ে চলেছে। হু হু করে বাড়ছে শহরবাসীর সংখ্যা। তাই, অবিলম্বে দ্বিতীয় একটি মহানালা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন মেদিনীপুর পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন সৌমেন খান। তিনি জানিয়েছেন, “ইয়াসের পর দ্বারিবাঁধ খালে বড় বড় গাছ পড়ে এই খালের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় জমা হয়ে যাচ্ছে জল। সাম্প্রতিক অতিবৃষ্টি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, দ্বিতীয় একটি মহানালা-র আবশ্যিকতা বিষয়ে। আমাদের বিধায়ক জুন মালিয়ার পরামর্শ মেনে দ্বিতীয় এই মহানালা খননকার্য শুরু করা হল আজ থেকে।” এর ফলে, শহরের একপ্রান্তে অবস্থিত ধর্মা সংলগ্ন গিরিধারি চক, রামকৃষ্ণ নগর, সূর্যনগর, বিবেকানন্দ পল্লী প্রভৃতি এলাকার বাসিন্দারা উপকৃত হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।