দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১২ অক্টোবর: দলমত নির্বিশেষে বাংলার যুব সম্প্রদায়ের হৃদয়ে বাস করেন তিনি। তাঁর সততা, গ্রহণযোগ্যতা যে কতখানি; গত ৮ আগস্ট তাঁর প্রয়াণের পর উপলব্ধি করেছেন আপামর বাঙালি। তিনি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তবে, এটাই যে তাঁর একমাত্র পরিচয় নয়; তা বলাই বাহুল্য! ‘কিশোর কবি’ সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘ভ্রাতুষ্পুত্র’ পরিচয়ের খোলসেও আবদ্ধ না থেকে, একজন প্রাবন্ধিক, অনুবাদক ও আবৃত্তিকার হিসেবে স্বতন্ত্র স্থান অর্জন করেছিলেন তিনি। তাঁর সেই ‘অর্জন’ বা গ্রহণযোগ্যতা রাজনীতিক বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের থেকে কোনও অংশে কম ছিল না! আর তাঁর মৃত্যুর পর, তাঁর প্রতি মানুষের ‘আবেগ’ আর ‘শ্রদ্ধা’ যেন উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে। পুজো উপলক্ষে জেলা শহর মেদিনীপুরের পঞ্চুরচকে সিপিআইএমের বুক স্টলে যে রেকর্ড সংখ্যক বই বিক্রি হলো এবার, তার পেছনেও সেই বুদ্ধদেব-আবেগ!
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রতি বছরের মতো এবারও পুজো উপলক্ষে সিপিআইএমের মেদিনীপুর শহর পূর্ব এরিয়া কমিটির উদ্যোগে মেদিনীপুর শহরের পঞ্চুরচকে মার্কসীয় ও প্রগতিশীল সাহিত্য বিপণন কেন্দ্র বা বুক স্টল দেওয়া হয়েছিল। ষষ্ঠীর দিন বুক স্টলের উদ্বোধন করেছিলেন সিপিআইএমের জেলা সম্পাদক বিজয় পাল। আজ শনিবার অর্থাৎ নবমীর (বা, দশমীর) বিকেল অবধি প্রায় ৭০ হাজার টাকার বই বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেদিনীপুর শহর পূর্ব এরিয়া কমিটির সম্পাদক কুন্দন গোপ এবং অন্যতম সদস্য সুব্রত চক্রবর্তী। গত বছরের তুলনায় প্রায় ১০ হাজার টাকার বেশি বই বিক্রি হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। বুক স্টলের দায়িত্বে থাকা সিপিআইএমের জেলা যুব নেতা সুব্রত এও জানান, সবথেকে বেশি বিক্রি হয়েছে, ‘বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের রচনা সংকলন’। এছাড়াও, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর লেখা ‘স্বর্গের নিচে মহা বিশৃঙ্খলা’, ‘নাৎসি জার্মানির জন্ম ও মৃত্যু’, ‘ফিরে দেখা: বামফ্রন্ট সরকারের শেষ ১০ বছর’- প্রভৃতি বইগুলিও যথেষ্ট সংখ্যায় বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। শনিবার দুপুরে বুক স্টলে বসেছিলেন সিপিআইএমের শিক্ষক নেতা আসিফ ইকবাল, যুব নেতা নীলোৎপল চ্যাটার্জি সহ অনেকেই। স্মিত হাসি নিয়ে তাঁরা বললেন, বামফ্রন্ট সরকারের ‘শেষ’ মুখ্যমন্ত্রীকে আঁকড়ে ধরেই যুব প্রজন্ম নতুন ‘শুরু’-র স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন আবারও!