দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৯ এপ্রিল: মেদিনীপুর শহরের গির্জা এলাকায় একটি নামকরা ইংরেজিমাধ্যম স্কুলের সামনেই আছে ৬০-৭০ বছরের পুরানো একটি অশ্বত্থ গাছ। গাছের দুই পাশ দিয়ে চলে গেছে সরু দু’টি রাস্তা। বাঁধানো গাছের তলায় বসেন অভিভাবক-অভিভাবিকা থেকে অনেকেই। সুবিশাল এই গাছের ছায়ায় নানা ব্যবসাও করেন হকাররা। রবিবার সন্ধ্যা নাগাদ হঠাৎ করেই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য কাটতে হবে সুপ্রাচীন এই অশ্বত্থ গাছটি! তারপরই শুরু হয় সম্মিলিত প্রতিবাদ। মেদিনীপুরবাসী অঙ্গীকার করেন, যেভাবেই হোক রুখে দিতে হবে এই ‘অপচেষ্টা’! বৃক্ষ-বাঁচানোর সেই লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত জয়ী হলেন মেদিনীপুরবাসী। সোমবার দুপুর নাগাদ পুরপ্রধান এবং মহকুমাশাসক মেদিনীপুর শহরবাসীর উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছেন, গাছ কাটা হবেনা। পূর্ত দপ্তরকে জানানো হয়েছে। আধিকারিকরা আশ্বস্ত করেছেন।
মেদিনীপুর শহরে যে সমস্ত প্রাচীন বট বা অশ্বত্থ গাছ আছে, তার মধ্যে সিপাইবাজার সংলগ্ন গির্জা এলাকার এই গাছটি অন্যতম বলে জানান শহরবাসী। শহরের নামকরা একটি ইংরেজিমাধ্যম স্কুলের ঠিক সামনেই আছে এই অশ্বত্থ গাছ। রবিবার অনেকেই জানতে পারেন, পূর্ত দপ্তর রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য এই গাছটি কেটে ফেলার চিন্তাভাবনা করছে। আর তারপরই গর্জে ওঠে বিপ্লবের শহর মেদিনীপুর! বিশ্ব উষ্ণায়নের এই ভয়াবহ সময়ে গাছ কাটার অপ-চেষ্টা? রবিবার সন্ধ্যা নাগাদ পেশায় স্বাস্থ্যকর্মী, কবি ও সমাজকর্মী অভিনন্দন মুখোপাধ্যায় ফেসবুকে লেখেন, “গাছটির বয়স প্রায় ৬৫ বছর…সেই ছোটবেলা থেকে এই গাছটি দেখে আসছি৷ কত মানুষ এর ছায়ায় বসে। কত পাখির বাসস্থান এই বনস্পতি। শহর কলেবরে বেড়েছে৷ হাইরাইজ, শপিং মলে ভরে গেছে শহর। আরো বাড়বে। মানুষের চাপ বেড়েছে। রাস্তা সম্প্রসারণ অবশ্যই দরকার। কিন্তু, এই গাছটিকে রক্ষা করে কি তা করা যায় না? অনান্য উন্নত দেশে যখন বড় বড় গাছ রিস্টোরেশনে করে রক্ষা করা হচ্ছে তখন গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে কেনো এখানে?” অভিনন্দনের সেই পোস্ট মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়। শয়ে শয়ে হতে থাকে শেয়ার। সোমবার সকালেই ওই ইংরেজিমাধ্যম স্কুলের সামনে পৌঁছে যান পুরপ্রধান সৌমেন খান, কাউন্সিলর মিতালি ব্যানার্জি প্রমুখ। তাঁদের কাছে পেয়েই ওই স্কুলের অভিভাবকরা কাতর আবেদন করেন, “কিছু একটা করুন!” গণ-স্বাক্ষর সংগ্রহ করে তাঁরা স্কুল কর্তৃপক্ষকে একটি এবং পুরপ্রধানকে একটি কপি জমা দেন। স্কুল কর্তৃপক্ষও পুরপ্রধানের কাছে গাছ না কাটার আবেদন রাখেন। পুরপ্রধান ফোনে কথা বলেন পূর্ত দপ্তরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের সাথে। দপ্তরের কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে তিনিও ঘটনাস্থলে পৌঁছন। পুরপ্রধান, স্কুল কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের আবেদনে সাড়া দেন তিনি। জানিয়ে দেন, গাছ কাটা হবেনা। বিকল্প কিছু ভাবনাচিন্তা করা হবে।
পুরপ্রধান সৌমেন খান বলেন, “পূর্ত দপ্তরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার আশ্বস্ত করেছেন আমাদের। আমরা বলেছি, গাছ না কেটেই রাস্তা সম্প্রসারণ করতে হবে। পার্কিংয়ের সমস্যার জন্য ওই জায়গায় যানজট তৈরি হয়। আমরা স্কুল কর্তৃপক্ষকেও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি।” মহকুমাশাসক মধুমিতা মুখোপাধ্যায় জানান, “আমাকে পুরপ্রধান সৌমেন খান পুরো বিষয়টি জানানোর পরই আমি পদক্ষেপ করার কথা বলি। গাছ না কেটেই যা করার করতে হবে। প্রয়োজনে আমরা পূর্ত দপ্তর ও বনদপ্তরের সঙ্গেও কথা বলব। ভবিষ্যতে কখনও গাছ কাটার পরিস্থিতি হলেও ওই গাছ যাতে অন্যত্র প্রতিস্থাপন করা হয়, সেটিও দেখতে হবে। তবে, আপাতত গাছ কাটা হবেনা বলে পূর্ত দপ্তর পুরসভাকে জানিয়েছে।”
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৮ এপ্রিল: লেভেল ক্রসিংয়ের ওপারে হাসপাতাল। এই পারে টোটোর…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৬ এপ্রিল: ছবি তুলতে গিয়ে জলে তলিয়ে যায় 'রেল…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৩ এপ্রিল: বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেল নাগাদ পশ্চিম মেদিনীপুরের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৭ এপ্রিল: "আমরা এখনও ধোঁয়াশার মধ্যে আছি। ওঁরা তো…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৭ এপ্রিল: গত ৫ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৫ এপ্রিল: বছরভর নানা রূপে দেখা যায় পুলিশকে। কখনও…