দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৮ জুলাই: সোমবার (৮ জুলাই)-ই ‘মা’ চেরির হাত ধরে স্পেনের বার্সেলোনা (Barcelona) পাড়ি দিল ছোট্ট সোম। গত বছর এপ্রিল মাসে (২০২৩-র ২৪ এপ্রিল) খড়্গপুর স্টেশন RPF এবং GRP-র তৎপরতায় উদ্ধার করা হয়েছিল বছর পাঁচেকের ফুটফুটে সোম-কে। তার ঠিকানা বা পরিচয় উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি পুলিশ-প্রশাসনের তরফে। তাই, গত এক বছর ধরে জেলা শহর মেদিনীপুরের রাঙামাটিতে অবস্থিত সরকারি হোমে (বিদ্যাসাগর বালিকা ভবনে)-ই মানুষ হচ্ছিল ছোট্ট সোম। এখন তার বয়স ৬ বছর ৩ মাস। গত (২০২৩ সালের)সেপ্টেম্বর মাসে স্পেনের বার্সেলোনার বাসিন্দা, পেশায় একটি কোম্পানির ডিরেক্টর চেরি ওরফে মেরিটেক্সেল রোসিচ গিমেজ তাঁকে দত্তক নেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন সমস্ত নিয়ম মেনে। তাঁর সেই আবেদন সরকারিভাবে অ্যাপ্রুভাল বা অনুমোদন পাওয়ার পর, আজ, সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসকের দফতরে জেলাশাসক খুরশিদ আলী কাদেরী-র উপস্থিতিতে বিদ্যাসাগর বালিকা ভবনের আধিকারিকদের তরফে সোম-কে তুলে দেওয়া হয় ‘সিঙ্গেল মাদার’ চেরি’র হাতে।

thebengalpost.net
চেরির সঙ্গে সোম:

উল্লেখ্য যে, নিয়ম মেনে সরকারি পোর্টালে শিশুটির বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়। গত বছর (২০২৩) সেপ্টেম্বর মাসে শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য আবেদন করেন বার্সেলোনার বছর ৪৭-র ওই মহিলা (মেরিটেক্সেল রোসিচ গিমেজ)। অথোরাইজড ফরেন অ্যাডপশন এজেন্সি (AFAA)- র মাধ্যমে যোগাযোগ হয় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের সঙ্গে। এরপর, ‘সিঙ্গল মাদার’ চেরির বিষয়ে সমস্ত খোঁজখবর নেওয়ার পর, ভিসা তৈরি করা হয় শিশুটির। সোমবার মেদিনীপুর শহরে জেলাশাসকের কার্যালয়ে পৌঁছন চেরি। সরকারি সমস্ত প্রক্রিয়া মেনে জেলাশাসক খুরশিদ আলী কাদেরী শিশুটির ভিসা সহ সমস্ত কাগজ ওই মহিলার হাতে তুলে দেন। সোম-কে কোলে নিয়ে ‘মা’ চেরি বলেন, ‘‘খুবই ভাল লাগছে। আমার বাড়িতে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গেই থাকবে আমার সন্তান। ওকে স্পেনের স্কুলে ভর্তি করব। পড়াশুনা করে বড় হবে। দেখভালে কোনও খামতি থাকবে না।”

thebengalpost.net
জেলাশাসকের কার্যালয়ে:

জেলাশাসক খুরশিদ আলী কাদেরী বলেন, “আশা করছি শিশুটির ভবিষ্যত সুনিশ্চিত ও সুন্দর হবে। মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বালিকা ভবন থেকে এখনও পর্যন্ত ৬২টি শিশুকে দত্তক দেওয়া হল। দেশের মধ্যে ৪১টি শিশু দত্তক নেওয়া হয়েছে। ৬টি শিশুকে দত্তক নিয়েছেন বিদেশিরা। এখনও সরকারি হোমে ৬-টি শিশু রয়েছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘শুধু শিশুদের দত্তক দেওয়াই নয়, তাদের দেখভালেও নজরদারি চালানো হয় প্রশাসনের তরফে।’’ তিনি এও মনে করিয়ে দেন, চলতি বছরের জানুয়ারি (১৫ জানুয়ারি) মাসেই সাড়ে তিন বছরের একটি শিশু-কে দত্তক নিয়েছিলেন ইটালির এক দম্পতি। এবার, স্পেন পাড়ি দিচ্ছে ছোট্ট সোম।

thebengalpost.net
জেলাশাসক খুরশিদ আলী কাদেরী-র সঙ্গে: