thebengalpost.net
বিদ্যাসাগর কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান হলেন কল্যাণ মহাপাত্র:

দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৯ নভেম্বর: তাঁর নির্দেশেই সরতে হয়েছিল পূর্বতন চেয়ারম্যান প্রদীপ পাত্র-কে। এবার, তাঁর এক ফোনেই জেলা শহর মেদিনীপুরে অবস্থিত বিদ্যাসাগর সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের (বিদ্যাসাগর কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক) চেয়ারম্যান হলেন ব্যাঙ্কের অন্যতম ডাইরেক্টর কল্যাণ মহাপাত্র (সরকারি প্রতিনিধি/গভঃ নমিনি)। দলীয় নির্দেশে বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্যাঙ্কের বাকি ১৩ জন ডাইরেক্টরই কল্যাণ-কে সর্বসম্মতভাবে বিদ্যাসাগর কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে সমর্থন জানান। বলাই বাহুল্য, একমাত্র শুভেন্দু অধিকারী ছাড়া বাকি ১৪ জন ডাইরেক্টরই এদিন উপস্থিত ছিলেন। সূত্রের খবর অনুযায়ী, তাঁরা সকলেই তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনে নেন।

thebengalpost.net
কল্যাণ মহাপাত্র (ছবি- ফেসবুক):

জানা যায়, মেদিনীপুর শহরের অরবিন্দনগরের বাসিন্দা কল্যাণ মহাপাত্র একজন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক আধিকারিক। তিনি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার ছিলেন বলে জানা যায়। ২০২১ সালের শেষের দিকে তিনি ‘সরকারি প্রতিনিধি’ (বা, গভঃ নমিনি) হিসেবে বিদ্যাসাগর ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির অন্যতম ডাইরেক্টর হন। বিশ্বস্ত সূত্রের খবর অনুযায়ী, অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক কর্মী কল্যাণ মহাপাত্র মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি সুজয় হাজরা-র অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। সুজয় নাকি ব্যাঙ্ক পরিচালনার কাজে রীতিমত অভিজ্ঞ কল্যাণকেই চেয়ারম্যান হিসেবে চেয়েছিলেন। জেলা তৃণমূলের অনেকেই আবার ভাইস চেয়ারম্যান সন্দীপ ঘোষ-কে চেয়ারম্যান হিসেবে চেয়েছিলেন বলে সূত্রের খবর। তবে, অভিষেক-কল্যাণে বৃহস্পতিবার দুপুরে শেষ হাসি হাসলেন সুজয়-ই! যদিও, পশ্চিম মেদিনীপুরের খাকুড়দা থেকে এদিন ফোনে সুজয় জানান, “আমি সকাল থেকেই বাইরে। তবে, এই বিষয়ে শীর্ষ নেতৃত্বে নির্দেশ এসেছিল। সেই মতোই সবকিছু ঠিকঠাক ভাবে হয়েছে। উনি (কল্যাণ মহাপাত্র) অভিজ্ঞ ব্যাঙ্ক আধিকারিক। আশা করছি, খুব ভালোভাবেই বিদ্যাসাগর সমবায় ব্যাঙ্ক-কে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।”

এ প্রসঙ্গে এও উল্লেখ্য যে, চলতি বছরের ২৭ মে ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচিকে সামনে রেখে পশ্চিম মেদিনীপুরে এসেছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই দিন মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে জঙ্গলমহলের শালবনীতে সভাও হয়েছিল। পরদিন (২৮ মে) দুপুরে দলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল নেতৃত্বদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছিলেন অভিষেক। সূত্রের দাবি, বৈঠকে তিনি সবার কথা শুনেছিলেন মন দিয়ে। শুনিয়েছিলেন তাঁর গোপন রিপোর্টের কথাও! দিয়েছিলেন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ। মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের ‘চেয়ারম্যান’ পদ থেকে প্রদীপ পাত্র-কে সরানোর বার্তা ছিল তার মধ্যে অন্যতম। যদিও, সেই নির্দেশের প্রায় পাঁচ মাস পর গত ৩১ অক্টোবর পদত্যাগ করেছিলেন প্রদীপ। এরপর, আজ, বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিলেন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক কর্মী কল্যাণ মহাপাত্র। অন্যদিকে, মেদিনীপুর শহরের রাঙামাটিতে অবস্থিত তাম্রলিপ্ত স্পিনিং মিলের চেয়ারম্যান হিসেবেও সুজয়-ঘনিষ্ঠ জেলা INTTUC সভাপতি গোপাল খাটুয়া-কে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়। সব দেখেশুনে জেলা তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ এক নেতা এদিন বলেন, “রাজ্যে এখন অভিষেক-যুগ চলছে। আর, তাতেই সুজয়ের ‘জয়’!”

thebengalpost.net
ব্যাংক পরিচালন সমিতির অন্যান্য ডাইরেক্টরদের তরফে অভিনন্দন জানানো হল কল্যাণ মহাপাত্র-কে: