দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২০ মার্চ:দক্ষিণ পূর্ব রেলের (South Eastern Railway) মেদিনীপুর স্টেশনে দ্বিতীয় ফুট ওভারব্রিজ আর প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণ- এর উদ্বোধন। রবিবার (২০ মার্চ) এই অনুষ্ঠানে নজিরবিহীনভাবে একমঞ্চে থাকতে দেখা গেল মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ এবং মেদিনীপুরের বিধায়ক জুন মালিয়া’কে। তৃণমূল বিধায়ক জুন-কে সঙ্গে নিয়ে ওভার ব্রিজের উদ্বোধন করলেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ। একমঞ্চে বসলেনও। তবে, তার আগেই অবশ্য দুই পক্ষের অতি-উৎসাহী সমর্থকদের ‘দলীয় স্লোগান’ ঘিরে একপ্রস্থ নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়! বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ‘জয় শ্রীরাম’ এর পাল্টা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে থাকেন জুনের সঙ্গে থাকা তৃণমূল কর্মী-সমর্থককরা। এমনকি, তাঁদের ‘উৎসাহ’ এতখানি ছিল, সাংসদ দিলীপ ঘোষ বার বার হাত নেড়ে থামাতে চাইলেও, তাঁরা থামেননি। সাময়িক সময়ের জন্য এই সরকারি অনুষ্ঠান কিংবা ‘রেলের সৌজন্য’ যেন অতি উৎসাহী রাজনৈতিক সমর্থকদের জন্য লজ্জায় মাথা নত করলো!
এদিকে, রেলের আমন্ত্রণে আপ্লুত জুনকে বলতে শোনা গেল, “মেদিনীপুর স্টেশনের এই ফুট ওভারব্রিজে উপকৃত হবেন যাত্রীরা। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-ও বিভিন্ন সময়ে কেন্দ্রের রেল মন্ত্রী ছিলেন। তাই, রেলের উন্নয়নমূলক কাজের প্রতি তাঁর একটা বিশেষ দুর্বলতা আছে। দেশ কিংবা রাজ্যের উন্নয়নের কাজে কোনও রজনীতি থাকা উচিতও নয়! আপানারাও দেখছেন যে, উন্নয়নের কাজকে সমর্থন জানাতেই মেদিনীপুরের বিধায়ক ও সাংসদ আজ একমঞ্চে উপস্থিত!” কিন্তু, এই সৌজন্য-ই কেন দেখা যায়না, প্রতিটা উন্নয়নমূলক কর্মসূচি, বিশেষত রাজ্য সরকারের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে? প্রশ্ন তুলছেন আমজনতা। তাঁদের মতে, রাজনীতি থাক রাজনীতির জায়গায়; জনসাধারণের উন্নয়নের প্রশ্নে থাক মতৈক্য কিংবা সৌজন্য। এনিয়ে তাই রাজ্য সরকারকে বিঁধতে ছাড়েননি সাংসদ তথা বিজেপি’র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বললেন, “কেন্দ্রের কাছে সৌজন্য শিখুক রাজ্য। কেন্দ্রের সমস্ত উন্নয়নমূলক কর্মসূচীতে দলমত নির্বিশেষে ডাক পান বিধায়ক, সাংসদরা। কিন্তু, রাজ্য এটা নিয়ে রাজনীতি করে। বারবার সৌজন্য শেখাচ্ছে কেন্দ্র, কিন্তু রাজ্য তা শিখছেনা!” এনিয়ে তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা জানিয়েছেন, “আমাদের মুখ্যমন্ত্রী সর্বদা সৌজন্যের রাজনীতির পক্ষে। এর আগে (২০২১), কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে, কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের আমন্ত্রণে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু’র ১২৫ তম জন্ম জয়ন্তী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী’র সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী বক্তৃতা দিতে উঠতেই কিভাবে জয় শ্রীরাম স্লোগান দিয়েছিলেন বিজেপি সমর্থকরা, তা দেশবাসী দেখেছেন। তা সত্বেও মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য সরকার সৌজন্যের পক্ষে। বরং, কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থনৈতিক বঞ্চনা রাজ্যবাসী হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, প্রাপ্য টাকাও দেওয়া হচ্ছে না! তা সত্ত্বেও, দেশের উন্নয়নের পক্ষে জরুরি প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের রাজ্য সরকার সৌজন্য দেখিয়ে চলেছে।”