দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩ জুলাই: ‘ঐতিহাসিক’ মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুল (Midnapore Collegiate School) এবং মেদিনীপুর কলেজ (Midnapore College, Autonomous) সংলগ্ন গোলকুঁয়াচক থেকে পঞ্চুরচক অবধি রাস্তার (মেদিনীপুর কলেজ রোডের) দুই পাশে থাকা ফুটপাথ-ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ এবং পুনর্বাসনের উদ্যোগ ঘিরে বুধবার (৩ জুলাই) দুপুরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় জেলা শহর মেদিনীপুরে! পৌরপ্রধান সৌমেন খানের আবেদনে কর্ণপাত না করে, বুধবার বেলা ১২ট নাগাদ মেদিনীপুর কলেজ রোড অবরোধ করে অবস্থানে বসে পড়েন ফুটপাথের দোকানদার বা ব্যবসায়ীরা! ওই রাস্তায় যানজটেরও সৃষ্টি হয়। এরপর বেলা ১টা নাগাদ ঘটনাস্থলে পৌঁছন মহকুমাশাসক (SDO) মধুমিতা মুখার্জি। তাঁর সঙ্গে আলোচনার পর বেলা দেড়টা নাগাদ অবরোধ তুলে নেন ফুটপাথ-ব্যবসায়ী বা দোকানদাররা।

thebengalpost.net
ঘটনাস্থলে মহকুমাশাসক ও পৌরপ্রধান:

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পরই মেদিনীপুর কলেজে রোডের দুই পাশে ফুটপাথ দখল করে বসে থাকা হকার বা দোকানদারদের উচ্ছেদ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয় মেদিনীপুর সদরের মহকুমাশাসক (SDO) মধুমিতা মুখার্জি এবং পৌরপ্রধান (Chairman) সৌমেন খানের উদ্যোগে। সেই মতো দিন কয়েক আগেই সমীক্ষা হয়। ঠিক হয়, ওই সমস্ত দোকানদারদের মেদিনীপুর কলেজ থেকে ডি.আই অফিসের (DI Office) রাস্তায় পুনর্বাসন দেওয়া হবে। সেই সময় ওই দোকানদাররা রাজিও হয়েছিলেন বলে দাবি পৌরপ্রধান ও মহকুমাশাসকের। এমনকি এই বিষয়ে মঙ্গলবার মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে বৈঠক হয় বলেও জানান SDO মধুমিতা মুখার্জি। সেই মতোই বুধবার (৩ জুলাই) মেদিনীপুর কলেজ সংলগ্ন এলাকায় থাকা ওই সমস্ত দোকান উচ্ছেদ করে, পুনর্বাসনের কাজ শুরু করা হয় পৌরপ্রধান সৌমেন খানের নেতৃত্বে। কিন্তু, অভিযান শুরু হওয়ার পরই ফুটপাথ-ব্যবসায়ীরা বিকল্প জায়গায় পুনর্বাসনের বিরোধিতা করে প্রথমে পৌরপ্রধানকে কাকুতি মিনতি করেন। তাতে কাজ না হওয়ায়, রাস্তা অবরোধ করে অবস্থানে বসে পড়েন! তৃণমূলের পতাকার হাতে নিয়ে স্লোগানও দেন। পৌরপ্রধান সৌমেন খান বলেন, “মহকুমাশাসকের নেতৃত্বেই এই পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। গত সপ্তাহে যখন এই সমীক্ষা করা হয়। তখন ওঁরা রাজিও হয়েছিলেন। সইও করেছিলেন। আজ হঠাৎ বেঁকে বসেন! পুলিশ-প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।” তৃণমূলের শহর সভাপতি বিশ্বনাথ পাণ্ডব বলেন, “এই সমস্ত উদ্যোগ নেওয়ার আগে, সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে, সঠিক পরিকল্পনা করা উচিত ছিল। আশা করছি প্রশাসন সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।”

এরপরই বেলা ১টা নাগাদ ঘটনাস্থলে পৌঁছন মহকুমাশাসক মধুমিতা মুখার্জি। তাঁর মধ্যস্থতায় ডিআই অফিসের গলিতে পুনর্বাসনের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে, বেলা দেড়টা নাগাদ অবরোধ তুলে নেন মেদিনীপুর কলেজ রোডের ফুটপাথ-ব্যবসায়ীরা। মহকুমাশাসক বলেন, “এই জায়গার একটা ঐতিহাসিক তাৎপর্য আছে। কিন্তু, জবরদখলের কারণে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছিল। এ নিয়ে কলেজ ও কলেজিয়েট কর্তৃপক্ষও বারবার পৌরসভা এবং প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছে। তাই এখান থেকে উঠতেই হতো ওঁদের। আমরা আলোচনা করেই সংলগ্ন এই ডি.আই অফিসের গলিটিকে নির্বাচন করি। এ নিয়ে দফায় দফায় হকার ইউনিয়নের সঙ্গে বৈঠকও হয়। ওঁরা সমস্ত কিছু মেনেও নিয়েছিলেন। ওখানে ওঁদের পানীয় জল, আলোর ব্যবস্থা করবে পৌরসভা। প্রতিদিন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নও করা হবে। যাই হোক, শেষ পর্যন্ত একটা সমাধান বেরিয়েছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।” (ছবি- অর্ণব।)

thebengalpost.net
চলছে পুনর্বাসনের কাজ: