দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১২ জানুয়ারি: প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় শনিবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এসেছিলেন স্বাস্থ্য ভবন গঠিত ১৩ সদস্যের তদন্তকারী দল। প্রাথমিক তদন্ত এবং ‘নমুনা’ সংগ্রহ করে তাঁরা ফিরে গিয়েছেন। একাধিক প্রশ্ন ছিল তাঁদের। সব প্রশ্নের অবশ্য ‘উত্তর’ মেলেনি। বরং মিলেছে ‘অসঙ্গতি’! তা সত্ত্বেও সিজারের পর একে একে ৫ জন প্রসূতির সঙ্কটজনক অবস্থায় চলে যাওয়া এবং শেষমেশ একজনের মৃত্যু ও বাকি ৪ জনের মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তদন্তকারী দলের চিকিৎসকেরা এদিন যে প্রশ্নগুলি তুলেছেন বলে জানা যায়, একই দিনে কেন ৫ জন সিজার রোগীরই একই সমস্যা দেখা দিল? সে ক্ষেত্রে কোন কোন চিকিৎসকেরা দায়িত্বে ছিলেন এবং কিভাবে অস্ত্রপচার হয়েছে? কোন চিকিৎসক অস্ত্রপচার করেছেন? কি কি ওষুধ, ইঞ্জেকশন ও স্যালাইন প্রয়োগ করা হয়েছে? অ্যানাস্থেসিয়ার ক্ষেত্রে কি ওষুধ ব্যবহার করা হয়েছিল? যে সংস্থার স্যালাইন নিয়ে সমস্যা, সেই স্যালাইন ব্যবহার করা হয়েছিল কিনা? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয় এদিনের বৈঠকে। সেই সঙ্গে নির্দিষ্ট ওই সংস্থা (পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যাল)-র স্যালাইন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের আর কোন কোন ওয়ার্ডে ব্যবহৃত হয়েছে? ওই স্যালাইন এখনও কত মজুত রয়েছে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে তদন্তকারী দলের তরফে। খতিয়ে দেখা হয়েছে CCU-তে থাকা প্রসূতিদের শারীরিক অবস্থা। ওষুধ, স্যালাইনের নমুনা সংগ্রহ করেছেন তাঁরা।
তবে, সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ওটির ভেতরের ও বাইরের সিসিটিভি ফুটেজ এবং রেজিস্ট্রারও নিয়ে গেছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, ওই রাতে (বুধবার রাতে) সিজারের দায়িত্বে এক সিনিয়র চিকিৎসক থাকলেও, রেজিস্ট্রারে তাঁর স্বাক্ষর নেই। অর্থাৎ, তিনি ‘অনুপস্থিত’ ছিলেন! এমনই অনেক ‘অসঙ্গতি’-র নমুনা নিয়েই শনিবার বিকেলে ফিরে গিয়েছেন তদন্তকারীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, “তদন্ত চলছে। এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।” মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষা ডঃ মৌসুমী নন্দী জানিয়েছেন, “চিকিৎসাধীন চারজন প্রসূতির মধ্যে ১ জন একটু ভালো আছেন। বাকিরা CCU-তে আছেন।” জানা গেছে, CCU-তে থাকা ৩ জনের মধ্যে ২ জনের অবস্থা এখনও গভীর সঙ্কটজনক। ভেন্টিলেশনে থাকা কেশপুরের নাসরিন ইয়াসমিন খাতুন (২২)-র ডায়ালিসিস হয়েছে শনিবার বিকেলেও। এমনটাই জানিয়েছেন পরিবারের তরফে ইনসান আলি। তাঁর স্বামী সেলিম খান এখনও দুশ্চিন্তার মধ্যে আছেন। বুধবার রাতে নাসরিন কন্যাসন্তান প্রসব করেছেন। নাসরিন-সেলিমের এটাই প্রথম সন্তান। বছর দুয়েক আগে তাঁদের বিয়ে হয়েছে।