দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩০ জুলাই: গতকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে প্রবল বর্ষণে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে নাকানিচুবানি খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ! আর, সেই সময়ই নেহাতই মজা “উপভোগ” করতে, ফটোশপের সাহায্য নিয়ে শহরের রাস্তায় “কুমির” এর ফেক-ছবি ছড়িয়ে বৃহস্পতিবার দিনভর জেলাবাসীকে বিভ্রান্ত করল শহরের কয়েকজন যুবক। একজন ফটোশপ (ছবি এডিট) করল, আর তা ছড়িয়ে দিল আরো ২ জন মিলে! ৩ জনের এই গ্যাং’কে শুক্রবার দুপুরে ডেকে পাঠানো হয়েছিল মেদিনীপুর বনাঞ্চল কার্যালয়ে (মেদিনীপুর রেঞ্জ অফিসে)। এই ধরনের কাজ করার উদ্দেশ্য জানা হলো। আধিকারিকদের জেরার মুখে ৩ যুবক নিজেদের “অপরাধ” স্বীকার করলো! তারা জানালো, কাউকে বিভ্রান্ত করা তাদের উদ্দেশ্য ছিলনা। নেহাতই মজার ছলে তারা এই কাজ করে ফেলেছিল। কিন্তু, ততক্ষণে তো তাদের সেই “মজা”র ছবি ভাইরাল হয়ে, বনদপ্তর থেকে প্রশাসনকে নানা প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে! এভাবে “ফেক-ছবি” সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া যে “আইনত অপরাধ” তা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পর, ওই ৩ যুবক কাঁচুমাচু হয়ে বলে, এই ভুল তারা আর করবেনা! এরপর, লিখিত বা মুচলেকা দিয়ে তাদের ছাড়া হয় বলে জানা গেছে মেদিনীপুর রেঞ্জ অফিস সূত্রে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ জুড়ে ৪-৫ টি ছবি ভাইরাল হয়, যেখানে দেখা যায়, মেদিনীপুর শহরের জগন্নাথ মন্দিরের কাছে রাজ্য সড়কের উপর একটি “কুমির” বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে! নিমেষে সেই ছবিগুলো ভাইরাল হয়ে যায়। ছবিগুলি এতোটাই ভাইরাল হয় যে, হাজারে হাজারে ফোন আসতে শুরু করে বন দফতর, পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিক থেকে সংবাদমাধ্যমের কাছে। বিভিন্ন মিডিয়া হাউসের কলকাতা অফিস থেকে ফোন আসে জেলার প্রতিনিধিদের কাছে। কিন্তু, কোথায় কি! খোঁজ নিয়ে জানা যায়, “ফেক-ছবি” বা ফটোশপ করা ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। একবার শহরে হাতি প্রবেশ করার পরই, হাজারো প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল বন দফতর’কে। আর, এবার শহরের রাস্তায় “কুমির”! বন দপ্তর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা চিন্তা করে। তাই, খোঁজ খবর নিয়ে এই তিন “নাটের গুরু” কে ডেকে পাঠায়! মেদিনীপুর রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ অফিসার পাপন মোহান্ত জানিয়েছেন, “৩ যুবককে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। আপাতত তারা ভুল স্বীকার করেছে এবং মুচলেকা দিয়েছে ভবিষ্যতে এরকম কাজ করবেনা বলে। তবে, ভবিষ্যতে আমরা প্রশাসনিক বা আইনি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করলে, পুনরায় তাদের ডেকে পাঠানো হবে।”