দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, মেদিনীপুর ও কলকাতা, ১৬ নভেম্বর: যে মঞ্চে পুরস্কৃত হলেন ফুটবলার গৌতম সরকার, চিকিৎসক কুনাল সরকার, শিল্পপতি প্রণব চন্দ্র, চিত্র পরিচালক রাজাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সিঙ্গল ফাদার অভিষেক পাল; সেই একই মঞ্চে একই সম্মানে সম্মানিত বা পুরস্কৃত হলেন খুনের মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত, মেদিনীপুর মুক্ত সংশোধনাগারের বন্দী চন্দন চন্দ। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) কলকাতার আইসিসিআর হলে জেল-বন্দী চন্দন’কে ‘সমাজের সেরা পুরুষ’ সম্মানে সম্মানিত করল “অল বেঙ্গল মেন’স ফোরাম”। এই সংস্থার পক্ষ থেকে এবার সেরা পুরুষের সম্মানে সম্মানিত করা হয় সমাজের বিভিন্ন পেশার ২২ জন পুরুষকে। সেই তালিকায় আছেন বর্তমানে মেদিনীপুরের মুক্ত সংশোধনাগারের বন্দী তথা যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত চন্দন চন্দ।
“অল বেঙ্গল মেন’স ফোরামের” সভাপতি নন্দিনী ভট্টাচার্য বলেন, “হ্যাঁ, এবার ২০২৪ সালে আমরা তৃতীয় তম বর্ষে মেদিনীপুর মুক্ত সংশোধনাগারের বন্দী চন্দন চন্দ’কেও ‘সমাজের সেরা পুরুষ’-এর সম্মানে সম্মানিত করছি। আমরা শুধু শিল্পী, নায়ক, গায়ক নয়; সমাজের বিভিন্ন পেশার মানুষ খেলোয়াড়, চিকিৎসক, শিল্পপতি, খাদ্য প্রস্তুতকারক, বিক্রেতা থেকে সিঙ্গল ফাদার এমন ২২ জনকে ‘সমাজের সেরা পুরুষ’-এর সম্মানে সম্মানিত করছি। যেখানে প্রখ্যাত ফুটবলার গৌতম সরকার থেকে চিকিৎসক কুনাল সরকারও রয়েছেন। যাদেরকে এই সম্মানে সম্মানিত করা হচ্ছে সমাজে তাঁদের প্রত্যকের অবদান রয়েছে। মেদিনীপুর মুক্ত সংশোধনাগারের বন্দী চন্দন চন্দ’র অবদান কম নয়। চন্দন সংশোধনাগারে থেকেও ছোট ছোট শিশুদের বিনে পারিশ্রমিকে অঙ্কন শিক্ষা দেওয়া, প্রতিমা তৈরি ও বিক্রি করে এই অর্থ বন্দি কল্যান তহবিলে দিয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে নানা ধরণের সামাজিক কাজকর্ম করে থাকেন। সেই জন্য বন্দী চন্দনকেও আমরা ‘সমাজের সেরা পুরুষ’-এর সম্মানে সম্মানিত করছি।”
বন্দী চন্দনের এমন সম্মান পাওয়া প্রসঙ্গে রাজ্যের কারা দপ্তরের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা বলেন, “খুবই ভালো খবর। যারা বিভিন্ন কারনে সংশোধনাগারে রয়েছেন, আমরা চাই তাঁরা মূলস্রোতে ফিরুক। যারা মুক্ত সংশোধনাগারে রয়েছেন তাঁদের আচার, ব্যবহার দেখে কর্তপক্ষ তবেই তাঁদের মুক্ত সংশোধনাগারে রাখার ব্যবস্থা করেছেন। যারা মেদিনীপুর মুক্ত সংশোধনাগারের বন্দী চন্দনকে এমন সম্মানে সম্মানিত করছেন, তারাও নিশ্চয়ই খোঁজ-খবর করে এমন সম্মান দিচ্ছেন। অবশ্যই এটা সাধুবাদ জানানোর মতো বিষয়।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, চন্দনের বাড়ি, পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন থানার সোনাকনিয়া এলাকায়। জানা গিয়েছে, ২০০০ সালের ১৯ নভেম্বর চন্দনের বাড়িতে ‘অগ্নিশিশু ক্ষুদিরাম’ নাটকের মহড়া বা রিহার্সাল করতে এসে ‘শক্তিমান’ ধারাবাহিক দেখে নকল করতে গিয়ে কীভাবে মৃত্যু হয় এক নাবালকের! নাবালকের পরিবারের অভিযোগ, চন্দন তাঁদের ছেলেকে খুন করেছে! নাবালকের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরদিন অর্থাৎ ২০ নভেম্বর পুলিশ চন্দনকে গ্রেপ্তার করে। চন্দনের পরিবারে তখন স্ত্রী, দুই মেয়ে, এক ছেলে বর্তমান। ৪ মাস ২৩ দিন জেলে থাকার পর জামিনে মুক্তি পান চন্দন। চলতে থাকে বিচার পর্ব। সাড়ে তিন বছর মুক্ত থাকার পর ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে ২০০৪ সালের ৩০ জানুয়ারি ফের গ্রেপ্তার হন। যাবজ্জীবন সাজা হয় চন্দনের। তারপর থেকে সংশোধনাগারে বন্দী। মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার, আলিপুর সংশোধনাগার সহ বিভিন্ন সংশোধনাগার ঘুরে ফিরে অবশেষে আসেন মেদিনীপুর মুক্ত সংশোধনাগারে। বন্দি দশাতেই ছবি আঁকা, নাটক যাত্রায় অভিনয় করা, প্রতিমা গড়া, করোনার সময় সচেতনতা মূলক মডেল তৈরি করার কাজ করেছেন। এখনও তিনি খড়্গপুর সহ বিভিন্ন জায়গায় ছোট শিশুদের আঁকা শেখান। উপার্জিত অর্থের একটা অংশ ‘বন্দী কল্যাণে’ দিয়ে দেন। বন্দী অবস্থায় ৩ দিন থেকে ১১ মাস পর্যন্ত মোট ২৫ বার প্যারোলে ছাড়া পেয়েছেন চন্দন। চন্দন বলেন, “বিচারে আমি খুনের আসামী। টানা কুড়ি বছর ধরে বন্দী আছি। সংশোধনাগার থেকে মুক্ত সংশোধনাগারে স্থান হয়েছে। অল বেঙ্গল মেন’স ফোরামের পক্ষ থেকে আমাকে এমন সম্মান দেওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই খুব খুশি হয়েছি।”
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৭ নভেম্বর: জেলা শহর মেদিনীপুরের উপকন্ঠে অবস্থিত মেদিনীপুর সিটি…
শশাঙ্ক প্রধান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৬ নভেম্বর:'পথশ্রী', 'রাস্তাশ্রী'-র মতো প্রকল্প থাকা সত্ত্বেও পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরাতে রাস্তার…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৬ নভেম্বর: মেদিনীপুর শহরে পথচলা শুরু করল 'অদ্বিতীয়া ক্রিয়েশন'।…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৫ নভেম্বর: "গড়বে শিশু সোনার দেশ, ছড়িয়ে দিয়ে আলোর…
শশাঙ্ক প্রধান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৫ নভেম্বর: শিশু দিবস উপলক্ষে, বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরা পপুলার…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৪ নভেম্বর: ট্যাব-কাণ্ডে চাঞ্চল্য এবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও! জেলার…